পুনরাবৃত্ত (পর্ব-৩)
– অযান্ত্রিক
অরিত্র ওসব নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে দরজা বন্ধ করে উপরে উঠে এসে দেখলেন, মোহনা ভয়ে কুঁকড়ে আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে, অরিত্র ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন মোহনাকে। ভয়ে আতঙ্কে মোহনার সারা শরীর বরফের মতো ঠাণ্ডা হয়ে গেছে আর মুখ দিয়ে গোঙানোর শব্দ হচ্ছে। “মোহনা, এই মোহনা, কি হয়েছে?মোহনা” অরিত্রর ডাকে আর ঝাঁকানিতে মোহনার একটু সম্বিৎ ফিরলো। “কি হয়েছে? অমন করছো কেন?”
গলায় একরাশ ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে, মোহনা বললেন, “অরিত্র.. অরিত্র আমাদের আজই এ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে, এই বাড়ি ভালো নয়..”
“মানে! ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছিলে নাকি, কি হয়েছে একটু পরিস্কার করে বলবে?” মোহনাকে শান্ত করতে করতে বললেন অরিত্র।
“তুমি নীচে যেতেই আমি একটু ওয়াশ রুমে গেছিলাম, ফ্রেশ হয়ে সেখান থেকে ফিরতেই দেখি একটা বছর পনেরোর মেয়ে দরজা দিয়ে ছুটে এসেই ঘরে এই দেরাজের ভিতর গিয়ে লুকালো, আমি এসে দেরাজ খুলে দেখি কেউ তো নেই । আর এই মেয়েটাকেই আমি দুপুরে স্বপ্নে দেখেছিলাম, আমি আর এখানে থাকব না প্লীজ চলো এখান থেকে” খুব ভয়ার্ত গলায় বললেন মোহনা।
“ওসব কিছু না, তুমি অত্যাধিক ক্লান্ত তাই ওসব হেলুসিনেট করেছো” আশ্বাস দিয়ে বললেন অরিত্র, ”চলো রাতের খাবার খেয়ে একটা লম্বা ঘুম দিলে দেখবে সব ঠিক হয়ে গেছে।”
ঠিক তখনই, নীচে সদর দরজায় খুব জোরে ধাক্কানোর একটানা শব্দ হতে লাগলো। অরিত্র নীচে যাবে বলে উঠতেই মোহনা জড়িয়ে ধরে বললেন, “নানা তুমি একা যাবে না আমিও যাবো,” “/অরিত্র আপত্তি করলেন না। দুজনে দরজা খুলে বাইরে আসতেই, দরজা ধাক্কানোর আওয়াজ ছাপিয়ে ওদের কানে এসে পৌঁছাল আরও একটা শব্দ ঢং ঢং ঢং, কোন দেওয়াল ঘড়ির শব্দ। কোনো ঘড়িতে যেন বারোটা বাজলো, মোহনা মোবাইলে দেখল সত্যিই বারোটা বাজে। কিন্তু সারাদিনে এ বাড়িতে ঘোরাঘুরিতে কোনো পেন্ডুলাম ঘড়ি তো চোখে পড়েনি! দুজনে দুজনের মুখ চাওয়াচায়ি করে তাড়াতাড়ি বাইরে করিডোরে আসতেই দুজনের বিস্ময়য়ের সীমা পরিসিমা থাকল না।
দুজনেই দুজনের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। দেখছে এ তো কিছুক্ষন আগে দেখা ঘরের সাথে কোন মিল নেই। কিছুক্ষণ আগেই যে ছবি মোহনার কল্পনায় ছিল সেটা বাস্তবে সামনে দেখবে মোহনা ভাবতেই পারছে না। দোতলার পুরো করিডোর জুড়ে যেখানে একটু আগেও ছিল ধবধবে সাদা মারবেলের মেঝে সেটা এখন মেরুন আর সোনালী কারুকার্য করা মন মুগ্ধকর বিদেশী কার্পেটে ঢাকা পরে গেছে। দেওয়ালে লাগানো হাল ফ্যশানের আলোগুলোকে সরিয়ে,জায়গা করে নিয়েছে চার মোমবাতির ছোটো ছোটো ঝাড়বাতি। করিডরের রেলিঙটাও সেজে উঠেছে বিদেশী ফুল আর অর্কিড রাখা পিতলের পটে। দু’টো সিঁড়িই ঢাকা আছে লাল রঙের গালচে দিয়ে, এক নজরে ওর দুজনেই হকচকিয়ে গেলো, এ কোথায় এসে পড়লো ওরা। মোহনা আরও ভয় পেয়ে খামচে ধরলো অরিত্র-র কাঁধ। অরিত্র নিজেও এমন স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে যে কোনো কথা বলতে পারছে না। শুধু এক পা এক পা করে নীচে নামার সিঁড়ির দিকে এগিয়ে চলেছে নিজের অজান্তেই। সিঁড়ির সামনেটায়, যেখান থেকে নীচের পুরো হলঘরটা দেখা যায় সেখানে এসে দুজনেই একদম বাকরুদ্ধ হয়ে পরল। সেই খালি ড্রয়িংরুম এখন আর খালি নেই। ওদের পেতে রাখা ছোট ছোট কার্পেটের জায়গায় একটা বিশাল মোটা আর বড় কাশ্মীরি জাজিম জায়গাটাকে এক রাজদরবার করে তুলেছে। ছাদ থেকে মোটা পেতলের শেকলে ঝুলছে বিশাল এক ঝাড়বাতি যার আলো রাতটাকে একেবারে দিন করে ফেলেছে। আস্তে আস্তে দুলছে একটা দড়ি টানা পাখা। পাশে কোন একটা ঘরের থেকে নাচ গানের আওয়াজ আসছে। হলের ভিতরে উর্দি পরা বেয়ারা, সবাইকে পানীয় পরিবেশন করছে। অতিথিদের পোশাক দেখে মনে হচ্ছে ওরা দুজনে যেন কোনো টাইম মেশিনে করে ইতিহাসের কোনো সময়ে পৌঁছে গেছে। অনেক সাহসে ভর করে, অরিত্র আর মোহনা নীচে নেমে এসে দেখলেন ঘরের দেওয়ালগুলো বড় বড় হাতে আঁকা তৈলচিত্রে ঢাকা পরে গেছে, ঠিক যেমনটা করার কথা মোহনা ভেবেছিলেন। দুজনেই দুজনের হাত আঁকড়ে ধরে দরদর করে ঘামতে শুরু করেছে, অরিত্রর মনে হচ্ছে যেন একটা হিম শীতল রক্তের স্রোত নেমে আসছে ওর শিরদাঁড়া বেয়ে। অরিত্র আর মোহনা এমন তন্ময় হয়ে দেওয়ালে লাগানো ছবিগুলো দেখছিল যে ওরা লক্ষ্যই করে নি, যে এক জন বেয়ারা, ওদের দিকে এগিয়ে এসেছে। ওদের দিকে পানীয়র ট্রে-টা এগিয়ে দিয়ে “স্যার, আপনারা কি কিছু নেবেন?” বলতে চমকে উঠলেন দুজনেই। মোহনা বেয়ারার কথা শুনে ট্রে-র দিকে তাকাতেই দেখলেন, একটা সুক্ষ্ম কারুকার্য করা রুপোর গেলাসে লাল রঙের কোনো তরল আছে, ওয়াইন হতেও পারে। ওরা কিছু উত্তর দিচ্ছে না দেখে বেয়ারা জানালো, “খাবার ঘরে রাতের খাবার পরিবেশন করা হয়ে গেছে, আপনারা চাইলে গিয়ে খেয়ে নিতে পারেন।” অরিত্র-র ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলছে, ওরা যা দেখছে সেটা বাস্তব কোনও মতেই না, তবে কি কোন মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে? ওদের সাক্ষী রেখে, নাকি এই বাড়িটা ওদের কিছু জানাতে চাইছে।
এমন ভৌতিক ঘটনার সামনাসামনি ওরা দুজনেই কোনোদিন হয়নি, তবে আধুনিক মননশীল চিন্তাধারায় কিছুতেই এই চোখের সামনে চলতে থাকা ঘটনার কোনো ব্যখ্যা করতে পারছেন না। অরিত্র ঠিক করলেন মোহনাকে নিয়ে এক্ষুনি বাড়িটা ছেড়ে বেড়িয়ে যাবেন, কিন্তু পারলেন না। একজন সম্ভ্রান্ত পোশাক পরা ভদ্রলোক ওদের দিকে এগিয়ে এলো, আর খুব বিনীত ভাবে জানতে চাইলো, “মাফ করবেন আমি একটু ওদিকে ব্যস্ত থাকায় খেয়াল করিনি, আপনাদের কোন আসুবিধা হচ্ছে না তো? আপনারা খেয়েছেন? খাবার পরিবেশন করা হয়ে গেছে।” অরিত্র ভদ্রলোকের মুখের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলেন, আরে এই মুখ তো তার খুব চেনা, একটু আগেই দেওয়ালে টাঙ্গানো বিশাল ছবিটায় ওরা দুজনেই দেখেছেন। নীচে পরিচয়ও লেখা ছিল মহারাজ শৈল বিক্রম সিংহ, এই বাড়ির মালিক, অরিত্র বেশ বুঝতে পারলেন কাঁধের উপর মোহনার খামচে ধরা হাতের জোর আরও বাড়লো। মোহনাও খুব ভয় পেয়ে গেছে, এবার মোহনার নখগুলো মনে হয় বসে যাচ্ছে চামড়ার উপর, অরিত্রর নিজের অবস্থাও ভালো নয় সারা শরীর একটা অদ্ভুত উত্তেজনায় ঝিমঝিম করছে। অরিত্র ওনাকে কিছু বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু তার আগেই একজন লোক এসে জানাল মেজর টেশলা এসে পরেছেন, মহারাজ অরিত্রর দিকে চেয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে “মাফ করবেন” বলে এগিয়ে গেলেন সদর দরজার দিকে। বেশী দূর যেতে হলো না তার আগেই পুরোদস্তুর সামরিক পোশাকে এক ইংরেজকে ঢুকতে দেখল অরিত্র, সাথে একটা মেয়ে, বছর পনেরোর হবে। কিন্তু মেয়েটার মুখটা যেন দুঃখে, কষ্টে একদম লাল হয়ে আছে আর গালে আঙ্গুলের দাগও আছে। একটু কাছে আসতেই অরিত্রর বুকটা ছ্যাঁত করে উঠলো, ওমা মেয়েটাকে দেখতে অবিকল মোহনার মতো। এটাও বুঝতে পারলেন মোহনা নিজেও চমকে উঠলো। ঐ ইংরেজ ভদ্রলোককে ঢুকতে দেখে মাহারাজ শৈল বিক্রম সিংহ আন্তরিক অভ্যর্থনা করে বললেন, “ওয়েলকাম মেজর টেশলা ওয়েলকাম, আই এ্যম ভেরী হ্যপ্প্যি টু শী ইউ হিয়ার..”
“থ্যাঙ্ক ইউ রাজা, থাঙ্ক্যউ ফর দ্যা ইনভাইটেশন, লুক হামি, আমার লড়কিকে লিয়ে এসেছি, মিট মাই চাইল্ড ‘বেলা’, ইজাবেলা, হোপ ইয়উ ডোন্ট মাইন্ড। বাই দ্যা ওয়ে, হ্যভ ইউ ডান দ্যা জব?” জানতে চাইলো মেজর টেশলা
“নো নো , নো ইস্যু এট অল, আমি আমার কাজ করেই রেখেছি এজ ইউ সেড, উপরেই রাখা আছে ছেলেটিকে “গো অপ স্তেয়ার অ্যান্ড গেট হিম“ বেশ সহজ ভাবেই বললেন রাজা শৈল বিক্রম সিংহ।
“ওকে, ওকে, রাজা হামি উহাকে ব্যবস্থা করিয়ে এসে খানাপিনা করবে এনজয় করবে। উহাতে কোন আপত্তি নেই তো রাজা” জানতে চাইলেন মেজর টেশলা।
“এজ ইউ উইশ, গো এন্ড গেট হিম, এইই কে আছিস মেজরকে সিঁড়ির ঘরে নিয়ে যা” বললেন মহারাজ আর তার কথায় দুজন তলোয়ার হাতে বরকন্দাজ মেজরকে সিঁড়ির ঘরে দিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল। মহারাজ আর অরিত্ররাও পিছন পিছন গেলো। ঘরের দরজা খুলতেই অরিত্র দেখল ঘরের ভিতরে একটা সুপুরুষ চেহারা ছেলে বসে আছে, আর সেই ছেলেটাকে হুবহু অরিত্র মতই দেখতে, অরিত্রর হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। তাহলে কি! কিন্তু ওর কিছু করার আগেই মেজর টেশলা তার কোমরে খাপ থেকে রিভলবার বার করে তাক করল ছেলেটার দিকে। ট্রিগারটা টানতে যাবে, ঠিক এমন সময় পিছন থেকে সিংহের মতো গর্জে উঠলেন মহারাজ শৈল বিক্রম সিংহ,
“সাবধান মেজর, আমার রাজ্যে কাউকে শাস্তি দেওয়ার আগে, জানাতেই হবে অপরাধীর অপরাধটা ঠিক কি?”
মেজরের হাতটা একটু কেঁপে গেল, রাগে অপমানে তার চোখ মুখ লাল হয়ে গেল, দাঁত কিড়মিড়িয়ে বললো,”দিশ নেটিভ লড়কা একটা ব্রিটিশ লড়কির সাথে প্রেম করিয়াছে, আর সেই অপরাধে উহাকে মরতে হবে।”
“বাঃ, প্রেম করেছে তো, খারাপ কিছু তো করে নি, তার জন্য ওদের বিয়ে দেওয়া যেতে পারে কিন্তু মেরে ফেলতে হবে এমন কথা কোথায় লেখা আছে? আর যদি মরতেই হয় তাহলে ছেলে মেয়ে দুজনকেই মরতে হবে, একা ছেলেটা মরবে সেটা তো হতে পারে না।” মুখে একটা ক্রূর হাসি নিয়ে বললেন মহারাজ। বলেই মেজর টেশলার মেয়ের দিকে ওনার রিভলবার তুলে ধরলেন। “অ্যান্ড মেজর ইউ নো ভেরী ওয়েল আই নেভার মিস এনি টার্গেট। ডু ইউ থিঙ্ক উই ইন্ডিয়ান্স আর ইয়োর স্লেভ, ইফ ইয়েশ দ্যন ইউ আর লিভিং ইন আ ফুলস ওয়াল্ড..’
কথাগুলো যেন রাতের জঙ্গলে পশুরাজের গর্জনের মতো শোনাল, মেজর চমকে উঠলেন, কিন্তু পর মুহুর্তে দ্বিগুণ রাগে লাল হয়ে উঠলো তার চোখ মুখ। এমন ভাবে ছটফট করতে লাগলেন যেমন খাঁচায় বন্দি ইঁদুর করে। বিপদ বুঝতে পেরেই “নোওও” বলে চিৎকার করে ইজাবেলা দৌড়ে উঠে গেলো দোতলায় ঠিক যে ঘরটায় একটু আগেই অরিত্র আর মোহনা ছিলেন। ঠিক যেভাবে মোহনা দেখেছিলেন কিছুক্ষণ আগে। মহারাজ শৈল বিক্রম বললেন “এই কে আছিস ধরে নিয়ে আয় মেয়েটাকে, দেখিস যেন পালাতে না পারে। আর মেজর, ছেলেটাকে কিছু করার মনে রেখো, ছেলেটা কিন্তু মহারাজ শৈল বিক্রম সিংহের ছেলে, তোমাদের একজনকেও এখান থেকে বেঁচে ফিরতে দেবো না।” কিন্তু মহারাজের কথা সেই রাগে অন্ধ শ্বেতাঙ্গের কানে গেলো না, নিমেষের মধ্যে গর্জে উঠলো তার হাতের বন্দুক। একটা গগনবিদারী আর্ত চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো ছেলেটি, বলির পাঁঠার মত ছটফট করতে করতে শান্ত হয়ে গেল রক্তের বন্যায়। আর সঙ্গে সঙ্গে অরিত্র বুঝতে পারলেন কাঁধের উপর খামচে ধরা মোহনার হাতটা আলগা হয়ে গেল। চোখের নিমেষে ঘটনার গতি প্রকৃতি বদলে গেল দেখে অরিত্র কি করবে বুঝে উঠতে পারলেন না। পিছনে ফিরে দেখলেন মোহনা অচৈতন্য হয়ে পড়ে আছে মেঝেতে। অরিত্র মোহনাকে জড়িয়ে ধরে তুলে যাবেন এমন সময় মহারাজের লোকেরা সেই মেয়েটাকে ধরে নিয়ে এলো ততক্ষণে মেজরকেও অন্য লোকেরা বেঁধে ফেলেছে। “এদের জন্য দু’টো কার্তুজ খরচ করার কোন মানে হয় না” বলে মহারাজ বন্দুক ছেড়ে একজনের হাতের থেকে একটা তলোয়ার নিয়ে এক কোপে ধড় থেকে মুণ্ডু আলাদা করে দিলেন মেজরের আর পরের কোপটা মেয়েটাকে দিতে যাচ্ছেন এমন সময় কেউ একজন এসে বলল “মহারাজ মেজর জনা কুড়ি সৈন্য সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন, গুলির শব্দে তারা ভিতরে আসছে” মহারাজ দাঁত কিড়মিড় করে বললেন “আসতে দে, আর দেখিস একটাও যেন বেঁচে ফিরতে না পারে, বিরাজ, সবাইকে নিয়ে বাইরে গিয়ে দ্যাখো, আমি এটাকে সাবার করে আসছি” বলেই হাতে ধরা রক্তাক্ত তলোয়ারটা সোজা নামিয়ে দিলেন ইজাবেলার গলায়, সঙ্গে সঙ্গে ধড় থেকে মাথাটা ছিটকে এসে, পড়লো অরিত্রর পায়ের সামনে। বাইরে তখন অবিরাম গুলির শব্দ আর মানুষের চিৎকার, মহারাজ তলোয়ার হাতেই বেড়িয়ে গেলেন বাইরে, তাজা গরম রক্তের স্রোতে ডুবে যেতে লাগলো অরিত্রর দুই পা। এতো চিৎকার, রক্ত দেখে চূড়ান্ত ভয়, উত্তেজনায় অরিত্রও জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়লেন মাটিতে।