কালী ভবন
– লোপামুদ্রা ব্যানার্জী
কী সুন্দর তোর বাড়িখানা হয়েছে রে! তিনটে বেডরুম তাই না? হ্যাঁ রে তোর প্রতিটি রুমের সাথে অ্যাটাচ বাথরুম দেখছি। তার মানে তোর বাড়িতে তিন খানা বাথরুম। তাই তো? জল
একগাল হাসি দিয়ে শ্রেয়াকে কথাগুলো জিজ্ঞাসা করে মনিমালা। ওরফে মনিদি।
শ্রেয়া খানিকটা খিলখিল করে হেসে বলে- মনি দিদি তিনটে নয় গো চারটে।
-কি করেছিস শ্রেয়া? তিন খানা মাত্র লোক তোরা। মেয়ে তো তোর অনেক ছোট। জামাই আসতে অনেক দেরি। এত বাথরুম কী ভাবে ব্যবহার করবি?
– আসলে কি জানো, সকালের দিকটা বাথরুম নিয়ে খুব টানাটানি হয়ে যায়। আমার সাথে সাথেই প্রীতম উঠে পড়ে। আমার তো কোষ্ঠকাঠিন্যের ধাত। তাই বাথরুমে বেশ খানিকটা সময় লাগে। হিয়াকেও সকাল সাতটার মধ্যে উঠে পড়তে হয়। সাড়ে সাতটা থেকে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়ে যায় ওর। পুরানো ভাড়া বাড়িতে তো দুটো বাথরুমই মা মেয়ের দখলে চলে যেত সকাল বেলায়। বেচারা প্রীতমের খুব অসুবিধা হতো।
তাই যখন এই জায়গাটা কিনলাম তিন বছর আগে তখনই প্রীতম বলেছিল, এবার গৃহকর্তার নিজস্ব একটা বাথরুম হবে কিন্তু। তাই তিনটে রুমের সঙ্গে তিনটে বাথরুমের প্ল্যান পাশ করালো সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে।
জায়গা তো পুরো তিন কাঠা নয়। সব দিক বজায় রাখতে গিয়ে আমার রান্না ঘর খানা ছোট হয়ে গেল, কিছুটা আক্ষেপের সুরে বললো শ্রেয়া।
জানো তো একতলার ছাদে আবার একখানা বাথরুম এখনি বানিয়ে রেখে দিয়েছে প্রীতম। ওয়াশিং মেশিনের কাপড় কাচতে বেশ সুবিধাও হয়। ছাদেই কাচো আর মেলে দাও। কোনো টেনশন নেই।
– শ্রেয়া চল না তোর ছাদে যাই একটু। আমার তো ফ্ল্যাট। ফার্স্ট ফ্লোরে। জি ফাইভ ব্লিল্ডিং। যদিও লিফ্ট আছে। তবুও ছাদে সেরকম ওঠা হয় না।আর করোনার চক্করে তো কতদিন মুক্ত আকাশ তলে দাঁড়িয়ে প্রাণ ভরে শ্বাস নিই নি।
সকাল থেকে তোর অরুনদার অনলাইন ক্লাস, মেয়ের অনলাইন ক্লাস। হাতের কাছে চা, টিফিন দিতে দিতেই বেলা পেরিয়ে যায়।
-শ্রেয়া বলে, মনিদি ঘরে পরার চপ্পলগুলো পরে নাও। ছাদে রোজ ঝাড়ু পড়ে না। দূর্গাপুরে যা ডাস্ট। কারখানা তো অর্ধেক বন্ধ হয়ে গেল। তবুও ডাস্ট পড়া কমলো না।
এই বলে শ্রেয়া মেন দরজাটাতে ছিটকিনিটা লাগিয়ে দিয়ে ছাদের সিঁড়ির ধাপ গুনতে গুনতে ছাদে উঠতে লাগলো।
বারো খানা সিঁড়ি ভাঙতেই পঁয়ত্রিশ বছরে বেশ হাঁটু ব্যথা শুরু হয়ে যায় শ্রেয়ার। তবে মনিদি পঁয়তাল্লিশ বছরেও কিন্তু বেশ টপাটপ উঠে পড়ল ছাদে।
ছাদের লোহার দরজাটা খোলা মাত্রই বেশ একটা শীতল হাওয়া এসে দুজনের শরীর স্পর্শ করে দুজনকে স্বাগতম জানিয়ে গেল।
দূর্গাপুরের ঠাণ্ডা বলে কথা। দুপুর বারোটাতেও জানান দেয়। ছাদের ওপর একটা প্ল্যাস্টিকের মাদুর বিছিয়ে দুজনে বসল। শ্রেয়া মনিদিকে একটা স্টিলের প্লেটে কমলা লেবুর কোয়া ছাড়িয়ে দিতে দিতে বলে, মনিদি তোমার কালীভবনের তলাপাত্রদের কথা মনে আছে?
-থাকবে না আবার। দীর্ঘ কুড়িটা বছর কাটিয়েছি যে কালী ভবনে। শৈশব থেকে যৌবন বেলা। আর তলাপাত্ররা ছিল কালীভবনের সব থেকে জনপ্রিয় ভাড়াটে। প্রথম প্রথম নতুন কোনো ভাড়াটে এলেই তাদের সঙ্গে এমন ভাব জমাতো! দেখে বাপু আমার ভীষণ হিংসা হতো। শুধু হিংসা বললে ভুল হবে। আমার না খুব দুঃখও হতো। মনে মনে ভাবতাম, তলাপাত্রদের ফ্যামিলিটা কত ভালো, কত মিশুকে।
শ্রেয়া তার চোখে মুখে কৌতুকের হাসি ফুটিয়ে বলে, তবে তলাপাত্রদের ভাব বেশিদিন স্থায়ী হতো না কারোর সঙ্গেই। সুখের পায়রার মতো অল্প দিনেই ফুরুৎ।
-তা যা বলেছিস। বাথরুম নিয়ে তলাপাত্রদের সঙ্গে সবার কেমন ঝগড়া হতো বল।
-আরে, আমি একদিন এই বাথরুমের জন্যই যা বকা খেয়েছিলাম বাবার কাছে তোমায় কি বলবো। শোনো তাহলে সেদিন কী হয়েছিল।
কালীভবনে বারো ঘর ভাড়াটিয়া। আর বাথরুম বলতে মাত্র দুখানা । একটাতেও থাকতো না ছিটকিনি। কেউ ভিতরে আছে কিনা তা বুঝতে হতো বাথরুমের বাইরে রাখা জলের বালতি দেখে।
আমার বাবা তো ভোর ভোর উঠে বাথরুম সেরে নিয়ে মা এর জন্য বাথরুমের বাইরে এক বালতি জল রেখে দিতো। মায়ের পর আমার যাবার কথা। জানো তো আমি চিরকালই একটু কুঁড়ে। সেদিন একদম ঘুম থেকে উঠতে মন চাইছিল না। সুতরাং মায়ের পর অন্য ভাড়াটিয়ারা বাথরুমে ঢুকে পড়ে।আর তারপরই তলাপাত্রদের একজন একজন করে বাথরুমে ঢুকতে থাকে লাইন দিয়ে। ওদের পরিবারের লোকও তো ছিল নাই নাই করে সাতজন।
ইতিমধ্যে আমারও ঘুম ভেঙে গেছে। আর ঘুম ভাঙা মাত্রই প্রকৃতির ডাক। বিছানা ছেড়ে বাথরুমের সামনে ঘোরাঘুরি করতে শুরু করেছি। কিন্তু কিছু করার নেই। আমার চোখের সামনে দিয়ে তলাপাত্রদের ফ্যামিলির একজন একজন করে বাথরুমে ঢুকছে। প্রায় আধঘণ্টা আমি বাথরুমের সামনে পায়চারি করি। শেষের দিকে তো কাপড়ে চোপড়ে হবার জোগাড়। কীভাবে নিজেকে সামলে ছিলাম তা আমিই জানি। কথাগুলো শেষ করে তো দুজনে মিলে খুব হাসতে লাগলো।
এরপর মনিদি শ্রেয়াকে থামিয়ে বলে, অ্যাই শ্রেয়া তোর মনে আছে কুয়োতলার জল তোলার কথা। কত কান্ডই না ঘটতো রোজ দিন। লোহার ঘড়ঘড়ি দিয়ে তিপ্পান্ন ফুট নিচ থেকে জল তুলতে হতো। কত বার যে বালতি পড়ে গেছে কুয়োর ভিতর তার হিসাব নেই। কুয়োর ভিতর থেকে বালতি তোলার জন্য আবার কত সরঞ্জাম লাগতো।
কর্মকার কাকুর মাকে মনে আছে? বুড়ি চোখে কম দেখতো। কুয়োতলাতে বসেই স্নান সারতো।আর প্রায়দিনই অন্যের বালতি থেকে জল নিয়ে স্নান করতো। কিছু বললেই বুড়িই উল্টে চোটপাট করতো।
অতীতের স্মৃতির পাতাগুলো যেন ঝড়ের বেগে উল্টে চলেছে দুজনে। একটা গল্প শেষ হতে না হতেই আরেকটা। শ্রেয়া মনিদির কথার মাঝেই বলে ওঠে, বাথরুম নিয়ে বাপি দাদার কান্ডখানা কিন্তু একদম ইউনিক ছিল।
মনিদি বলে, বাপির তো অনেক কান্ড আছে। কোনটা বলছিস বল তো?
শ্রেয়া বলবে কী, প্রথমেই কিছুক্ষণ হেসে নিল। তারপর হাসি থামিয়ে বলে, চব্বিশ প্রহরের সময় সিনেমা দেখতে যাওয়া।
-সিনেমার সঙ্গে বাথরুমের কি সম্পর্ক? আমার তো কিছু মনে পড়ছে না।
– তোমরা তখন কোথাও গিয়েছিলে। বাপি দাদার বাবা বাপি দাদাকে বারণ করেছে চব্বিশ প্রহর তলায় পর্দায় সিনেমা দেখতে না যেতে।বাপি দাদা তো সিনেমার পোকা। তারপর ওর প্রিয় হিরো অমিতাভের ‘শোলে’ বইটা পর্দায় দেখাবে। বাপি দাদা তো ছটপট করছে চব্বিশ প্রহর তলায় যাবার জন্য।
ঠিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ বাপি দাদা বাথরুমে যায়। বাইরে লোহার জলের বালতি খানি রেখে।
প্রায় ঘন্টাখানেক পর বাপি দাদার মায়ের খেয়াল পড়ে, বাপি তো বাথরুমে গিয়েছিল। এখনও আসে নি কেন? এই ছেলেটাকে নিয়ে আর পারা যায় না। নির্ঘাত পড়ার ভয়ে বাথরুমে ঢুকে বসে আছে। সামনে পরীক্ষা আর ছেলের কান্ড দেখো।
বাপি দাদার মা বাপি দাদার বাবাকে ডাকতে পাঠায় বাথরুমে। বাপি দাদার বাবা ভীষণ রাশভারী লোক ছিল। তিনি বাথরুমের সামনে গিয়ে বাপি, বাপি করে ডেকেই চলেছে। কিন্তু কোনো প্রত্যুত্তর আসছে না। ওনার পারদ একটু একটু করে চড়ছে। অন্যান্য ভাড়াটিয়ারাও কুয়োতলায় এসে হাজির। মিনিট দশেক হাঁক ডাক করার পর উনি রেগে গিয়ে বাথরুমের দরজায় সজোরে এক লাথি মারে। আর তারপরই আসল নাটক।
মনিদি প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে বলে, প্লিজ প্লিজ তাড়াতাড়ি বল তারপর কি হলো?
বাথরুমের দরজাটা হাট করে খুলে গেল। বাথরুমের ভেতরে কেউ নেই। বাথরুম খালি। উপস্থিত সকলেই বিস্ময়ে তাকিয়ে একে অপরের দিকে। সবার মনে একটাই প্রশ্ন,বাপি তাহলে গেল কোথায়?
খোঁজ খোঁজ রব পড়ে গেল। বাপি দাদার অন্যান্য ভাইরা, বাবা-মা, অন্য ভাড়াটিয়ারা সকলেই এদিক ওদিক গিয়ে বাপি দাদার খোঁজ করতে লাগলো। সবাই যখন আশাহীন হয়ে ফিরছে তখন বাপি দাদার বাবা সাইকেল নিয়ে চব্বিশ প্রহর তলার দিকে যায়।
সেখানে গিয়ে দেখে বাপি দাদা সবার সামনে বসে খুব মন দিয়ে ‘শোলে’ সিনেমা দেখচ্ছে।বাপি দাদার বাবা পায়ের চপ্পল খানা খুলে পিছন থেকে গিয়ে ঘা কতক ধরায় বাপি দাদাকে। চব্বিশ প্রহর তলা থেকে মারতে মারতে বাপি দাদাকে ঘর নিয়ে আসে।
বাপির কান্ড কারখানা শুনে মনিদি না হেসে বরং দুঃখ প্রকাশ করে বলে, বাপি ছেলেটা কিন্তু খুব ভালো ছিল। ওর মনটা খুব পরিষ্কার ছিল। আমাদের দুজনের জাতের অমিল না থাকলে আমি ওকেই বিয়ে করতাম।
– কি বলো গো মনিদি! তুমি বাপি দাদাকে ভালোবাসতে?
-মনিদি একটু লাজুক হাসি দিয়ে বলে- ও আমার প্রথম ভালোলাগা ছিল।
শ্রেয়া মুখে একটা কমলা লেবুর কোয়া পুরে বলে- কালী ভবনে কাটানো দিনগুলো কিন্তু খুব আনন্দের ছিল বলো।
মনিদি বলে- আমার বিয়ের পর গরম কালে ছাদে তোর অরুনদা কী কান্ড করেছিল মনে আছে?
শ্রেয়া তো হাত পা নেড়ে উল্লাসের সাথে বলে, সে কান্ড কী কখন ও ভোলা যায়। লাইন দিয়ে একতলা ছাদের ওপর বিছানা। তখনও কালী ভবনে ইলেক্ট্রিসিটি আসে নি। সবাই গরমে ক্যাম্প খাট পেতে ছাদে শুতো। প্রত্যেকের মশারিতে আলাদা আলাদা চিহ্ন করা থাকতো।
নতুন জামাই অর্থাৎ অরুনদার জন্যও সেই রকম ব্যবস্থা করে দিয়েছে মনিদির বাবা। মনিদির ভাই আর নতুন জামাই এর একসঙ্গে শোয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। মাঝরাতে অরুন দাদা বাথরুমে গেছে। পুনরায় ফিরে এসে আর সঠিক মশারি চিনতে না পেরে পাল জেঠুর মশারির ভেতর ঢুকে পড়ে। পাল জেঠু তো অরুনদাকে চেপে ধরে চোর সন্দেহে চিৎকার করতে থাকে।
পাল জেঠুর চিৎকারের সঙ্গে সঙ্গেই অন্যান্য মশারির ভেতর থেকে টর্চ লাইট জ্বলে ওঠে একসঙ্গে। অমাব্যসার রাতেও কালী ভবনের ছাদ খানি হঠাৎ আলোকময় হয়ে ওঠে।
তারপর তো যেই অরুনদাকে পাল জেঠু চিনতে পেরেছে সেই কি লজ্জা পাল জেঠুর। লজ্জায় পাল জেঠু কি করবে আর কি বলবে বুঝতে পারছিল না। তবে অরুনদা কিন্তু খুব স্মার্টলি ব্যাপারটা হ্যান্ডেল করে বলেছিল, আরে ভুল তো আমার জেঠু। মশারি চিনতে ভুল হয়ে গেছে। এতে আপনার কোন দোষ নেই।
সেদিন অরুন জামাইবাবুর কথা শোনার পর কালী ভবনের সকলেই বলে ছিল, অরুনের মতো ছেলে হয় না। বেচারাকে শ্বশুর ঘরে এসে কী হেনস্থা হতে হলো রাত দুপুরে। তবুও জামাইয়ের মুখে হাসি।
সত্যি রে শ্রেয়া ভাবলে এখন অবাক লাগে। বারোটা ভিন্ন পরিবার কিভাবে বছরের পর বছর এক উঠানে বসবাস করতো। আমার মেয়ের কাছে গল্প করলে বলে- ছাড় তো তোমার গল্প কথা। এইসব প্রাচীন যুগের কথা।
আজকালকার দিনে কেউ স্বপ্নেও এইরকম পরিবেশে থাকার কথা ভাববে না।
পঁয়তাল্লিশ বছরটা কি প্রাচীন যুগ হয়ে যায়! আমি কি এতটাই বুড়ি হয়ে গেছি। আমার মনে এই পঁয়তাল্লিশ বছরের আগের দিনগুলো তো আজও একদম সতেজ। তার আঘ্রান আজও নাকে পাই।
জানিস শ্রেয়া আবার মাঝে মাঝে অবাক লাগে। নিজের কাছে নিজেই যেন বিস্ময় হয়ে উঠি। আমি মানুষটাই কিন্তু আমার জা, ভাসুর, দেওর এদের সাথে এক উঠানে বসবাস করতে পারলাম না। আমার শ্বশুর মশাই নিজ মুখে সকলকে পৃথক থাকার অনুমতি দেন। তোর অরুন দাদাও বলেছিল, ভাই ভাই সম্পর্ক ভালো রাখতে চাইলে নিকট ছেড়ে দূরকেই বেছে নিতে হবে।
মহাভরতে মহামন্ত্রী বিদুর বলেছেন, সময়ের সাথে আমাদের মানসিকতা ও বদলায়। আজ যেটা সঠিক মনে হচ্ছে কালকে সেটা সঠিক মনে না-ও হতে পারে। সময়ের সাথে মানুষের চরিত্রও পাল্টাবে। তাই বোধহয় সেদিনের আমি আর আজকের আমি’র মধ্যে এতো ফারাক।
শ্রেয়াও বলে ওঠে- মনিদি তুমি আমি মানুষটা তো একি আছি। তখন ছোট ছিলাম এখন প্রাপ্ত বয়স্ক, ম্যাচিওর। এইটুকুই তফাত। কিন্তু তখন কত অসুবিধাকে মানিয়ে আনন্দে বেঁচেছি। আর আজ সুখের সাগরে ডুবেও সারাদিন কতক্ষণ হাসি, মজা করি তা বলা মুশকিল। আমরা কেমন ধীরে ধীরে রামগরুড়ের ছানা হয়ে যাচ্ছি। সর্বদাই কৃত্রিম গাম্ভীর্যের আড়ালে নিজের আসল সত্তা ষকে লুকিয়ে রাখতে ভালোবাসি।
একদম ঠিক বলেছিস শ্রেয়া আমাদের শিশুকাল, কিশোর বেলা, যৌবন কাল এইগুলো বড্ড ভালো ছিল। আজকালকার ছেলেমেয়েরা সত্যি অভাগা।
আজ আমাদের ঘর, বাড়ি, বাথরুম কোনো কিছুর অভাব নেই। তবুও সবাই মিলে মিশে এক উঠানে শীতের দিনে বসে টমেটো পোড়া দিয়ে মুড়ি খাওয়া, চু কিতকিত খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো এইসবগুলো-কে খুব মিস করি রে।
মাঝে মাঝে ভাবি যদি টাইম মেশিনে বসে আবার সত্তর আশির দশকের কালী ভবনে ফিরে যেতে পারতাম তাহলে ভারি মজা হতো।টিভি, ফোন, ইন্টারনেট কোন কিছুরই দরকার হতো না সময় কাটানোর জন্য। আনন্দ বোধহয় সাজানো ঘরে, ঝা চকচকে বাথরুমে কিংবা দামী আসবাবপত্রের মধ্যে থাকে না। আনন্দ থাকে মানুষের মাঝে।