সপক্ষে..
-রীণা চ্যাটার্জী
সুধী,
জীবনের পথে চলতে চলতে অভিজ্ঞতার দস্তাবেজে ভরে যায় ঝুলি- তার কিছু ধূলো ঢাকা, কিছু সজীব-টাটকা, কিছু বড়ো নাছোড়বান্দা- ভুলতে দেয় না সমাজ, পরিবেশ বা নামাঙ্কিত পরিবর্তন।
নারী-পুরুষ অধিকার, সম-অধিকার, পুরুষের স্বার্থত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন ইত্যাদি প্রভৃতি নিয়ে মতামত-তর্ক চলে, এ তো নদীতে বহমান খড়কুটো- ভাসতেই থাকবে আজীবন। পুরুষ দিবস হোক বা পিতৃদিবস সেখানেও কলমে উঠে আসে নারীদের সাথে তুলনার প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ। দেখি আর ভাবি, কোন অধিকার? কিসের সমবেদনা প্রাপ্তির আকাঙ্খা? পৃথক করে! আজো তো আমাদের বাস পুরুষতান্ত্রিক সমাজে, পিতৃতান্ত্রিকতার বীজে। ‘নারীরা নারীদের শত্রু’ এই কথাটার বাস্তবতা, সত্যতা লুকিয়ে আছে পিতৃতান্ত্রিক ক্ষমতার বীজে। হ্যাঁ, তর্ক আসবে জানি, বা বড়ো একঘেয়ে কথা মনে হবে- তবুও বলবো এটাই সত্যি। যতদিন না এটা মেনে নিতে পারবো মনের গভীরে ততদিন এই বিষবৃক্ষের বীজ থেকে যাবে সমাজের ইঁদারায়। কন্যা ভ্রুণ হত্যা থেকে, ধর্ষণ, সামাজিকতার শিকার এইসব ঘটনা তো সামনে আসে- বুদ্ধিজীবীদের কলম কাঁদে, কণ্ঠস্বর গর্জায়.. বিচার, বিচারের প্রহসন, শেষ বিচারের দিন আসে।
বিপক্ষ-পক্ষ অনেক কথা থেকে সপক্ষে কিছু কথা বলি- আজো পুজোর উপাচারে- আচারে পুরুষের ছোঁয়া, নারীর ছোঁয়ায় ভেদাভেদ সমাজ আগলে রেখেছে পরম যত্নে। পুরুষ ছুঁতে পারবে, কিন্তু নারী ছুঁলে হাজার বিধি, শত নিষেধ- শুচিতার মাপকাঠিও আলাদা। মাতৃগর্ভে দোষ নেই, কিন্তু মাতৃত্বের সামনে শুচিতার প্রশ্ন। কেন? বেশ কয়েক যুগ পিছিয়ে থাকা, বঞ্চিতাদের সাথে কিসের সমতুল্য? কোন সে সম-অধিকারের জন্য হাহাকার? নারীরাও তো মেনে নিয়েছে নিয়মের বেড়াজাল- এই পরাজয়। তাও..!
মনে হয় নারীবাদের প্রয়োজন নেই। পুরুষ মানেই ধর্ষক নয়- কিন্তু পুরুষের সঙ্গে শাসক সমার্থক শব্দটার গিঁটটা খুলতে হবে। ওটাই প্রয়োজন.. বাকি সব নিষ্প্রয়োজন। কে জানে কবে মিটবে এই প্রয়োজন? ভাবনার আকাশে শ্রাবণে মেঘ…
শুভকামনা, শুভেচ্ছা আলাপী মন- এর পক্ষ থেকে সতত।