এভাবেও ফিরে আসা যায়
– শম্পা সাহা
ফিরে তো সব সময়ই আসা যায়
ঘুরে দাঁড়ানো যায় যে কোনো সময়ই
বিশেষ করে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ঘুরে দাঁড়াতে তো হবেই।
যে মেয়েটাকে গর্ভেই কন্যা ভ্রুণ বলে মারতে চাওয়া হয়েছিল
কোন রকমে কারো দয়ায় সে প্রাণ পেলে জন্ম দিতে পারে আর একটা প্রাণের
যে মেয়েটা সারা জীবন কালো, মোটা আই বুড়ি নানান তকমাতে দেগে
সে সারাদিনের পরিশ্রমের পর বাবার হাঁপানির ওষুধটা আনতে ভোলে না
যে মেয়েটা ঠোঁটে চড়া রং মেখে রোজ দাঁড়ায় ল্যাম্পপোস্টের আলোর নীচে
প্রতি দিন একতাল মাংস পিণ্ডের নিচে ধুকপুক করে
অসুস্থ ঘরে রেখে আসা অভুক্ত সন্তানের চিন্তা
ফিরে এসেই কোলে তুলে চুমোয় চুমোয় ভরিয়ে দেয় বাছাকে
যে ছেলেটা বত্রিশটা চাকরির ইন্টারভিউতে রিজেক্টেড হয়ে
রেল লাইনের ধারে জীবনের শেষ বিড়িটা ধরাতে গিয়ে
অসাবধান বৃদ্ধকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে চলন্ত ট্রেনের সামনে
যে মেয়েটা প্রেমিকের প্রতারণার চিহ্ন বয়ে বেড়ায় ক্ষত বিক্ষত মনে
অথবা পণের বলি হতে, পণ্য হতে গিয়েও যে বেঁচে ফিরে হাসি মুখে আবার দাঁড়ায় সূর্যের মুখোমুখি
অ্যাসিড বিকৃত মুখ নিয়েও যারা জীবনকে ভালোবাসে
তারা সবাই তো এভাবেই ফিরে এসেছে
খাদের কিনারা থেকে, কূয়োর ধার থেকে, ফাঁসির ঝুলন্ত দড়ির সামনে থেকে
তারা তো বার বারই ফিরে এসেছে
বলে গেছে এভাবেও ফিরে আসা যায়
এভাবেই ফিরে আসতে হয়
তাহলে তুমি এখনো কিসের অপেক্ষা করছো?
কার অপেক্ষা করছো?
আর করছো কেনই বা?