Site icon আলাপী মন

কবিতা- আমার ভারতবর্ষ

আমার ভারতবর্ষ
-সুমিত মোদক

মাতৃ ভূমির চরণ চুমি
ওড়াই বিজয় কেতন;
মুক্তির স্বাদ সাম্যবাদ
ভারত ভূমিতে এখন;

ওই দেখা যায় দূরে
দিগন্তরেখা ধরে
নব প্রভাতের আলো;
হৃদয়ে হৃদয়ে
হৃদয়ে হৃদয়ে
উত্তাপ কেবল ঢালো;

কুরুক্ষেত্র প্রান্তরে শ্রীকৃষ্ণ বাজিয়ে দিয়েছে পাঞ্চজন্য শঙ্খ;
কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস নতুন করে বলছে মহাভারত;
ইতিহাস, ভারতবর্ষের ইতিহাস;
যে ইতিহাসে আমি, আমরা, আমাদের প্রজন্ম …
আর, সিদ্ধিদাতা গনেশ পুঙ্খানুপুঙ্খ লিখে চলেছে;

পাঞ্চজন্য শঙ্খ বাজতে না বাজতেই জেগে উঠেছে আর্য পুরুষ, আর্য নারী,
তার আর্যাবর্ত …
আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হয় শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার শ্বাশত বাণী–
“যদা যদা হি ধর্মস্যঃ গ্লানির্ভবত ভারত।
অভ্যুত্থানধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাময়হম।।
পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশয় চ দুষ্কৃতাং।
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।।”

ওই দিগন্তরেখার ওপার থেকে কে ছুটে আসছে!
কে! কে!
ও কি পাঞ্চালী!
ও কি সেদিনের রাজসভায় বস্ত্রহরণের প্রতিশোধের আনন্দে ছুটে আসছে!
নাকি পঞ্চপুত্রের কাটা মুণ্ডগুলো আঁচলে বেঁধে ছুটছে!
সারা শরীর জুড়ে রক্ত, রক্ত আর রক্ত,
তরতাজা রক্ত …
কে ছুটে আসছে!
কে!
আমার ভারতবর্ষ! নাকি আমাদের ভবিষ্যৎ!

ওই তো চক্রবুহে মধ্যে মধ্যে ঢুকে পড়েছে
অভিমন্যু;
একের পর এক পরাস্ত করে চলেছে সপ্তরথীকে;
ওই তো অর্জুনের রথে উঠে পড়েছে শিখন্ডী,
এখনই ভীষ্ম শরশয্যা নেবে;
সূর্য অস্ত যাবে …

স্বজন হারানো কান্নার রোল সারাটা রাত জুড়ে;
সারাটা রাত জুড়ে একের পর এক চিতাকাঠের লেলিহান শিখা;
তবুও, বরণডালা সাজিয়ে রাখে আটপৌরে মা,
আটপৌরে গৃহবধূ, সমগ্র ভারতবর্ষ …
বাড়ি ফিরবে তার বীর সন্তান,
সকালের রোদ মেখে …

সকাল আসে, শুভ সকাল, পবিত্র এক সকাল;
যেখানে কেবল রাগ ভৈরব …
যেখানে কেবল পাখির কুজন …
যেখানে কেবল গীতার বাণী …
এমন এক ভারতবর্ষ আমরা আনি, আমরা আনি, আমরা জানি, আমরা চিনি;

এই সেই মাতৃভূমি;
যেখানে গো-রাখাল বাঁশি বজায়;
যেখানে যমুনা নদীর তীরে কদম গাছের ডালে বসে শ্রীকৃষ্ণ তোলে রাগ বসন্ত;
শ্রীরাধিকার নূপুরে ওঠে বোল …
আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে কেবলমাত্র আনন্দরোল;
আনন্দরোল…

Exit mobile version