মেঘ ও রৌদ্র
-সুমিতা দাশগুপ্ত
অটো থেকে নেমে অশক্ত শরীরে খুচরো গুনে ভাড়া মেটাতে দেরী হচ্ছিলো বলে অত্যন্ত রুক্ষ ব্যবহার করলেন অটোওয়ালাটি। মনটা খারাপ হয়ে গেল অশীতিপর অবিনাশ বাবুর। বয়সের ভারে কিছুটা শ্লথ হয়ে পড়েছেন ঠিকই কিন্তু সেইজন্য এতটাই অসৌজন্য কি পাওনা হয় মানুষের! বয়স বেড়েছে বলেই বোধহয় দিন দিন একটু বেশিই স্পর্শকাতর হয়ে পড়ছেন অবিনাশবাবু। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফুটপাতের উপরে উঠে দাঁড়ালেন তিনি।
অবিনাশবাবুর গন্তব্য রাস্তার ওপারে ব্যাঙ্কটি। অফিসটাইমের অনর্গল গাড়ির স্রোত পেরিয়ে ওপারে যেতেই পারছেন না, অনেকক্ষণ ধরে। কোনও ট্র্যাফিক সিগন্যালও নেই আশেপাশে। কতক্ষণে যে একটু ফাঁক পাওয়া যাবে কে জানে, মনে মনে একটু অধৈর্য হয়ে পড়েছিলেন অবিনাশ বাবু, হঠাৎ নজরে এলো ওপার থেকে পান দোকানের তরুণ মালিকটি একছুটে রাস্তা পেরিয়ে কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। একগাল হেসে তাকে আগলে ধরে বললো-“চলুন দাদু পার করিয়ে দিই আপনাকে।” আশ্চর্য ! এই ব্যস্ত সময়ে খদ্দেরের ভিড়ে কেমন করে সে খেয়াল করলো ,আধচেনা এই বৃদ্ধটিকে!
মনটা খুশিতে ভরে উঠলো অবিনাশ বাবুর। মানবিকতার সবটুকুই হারিয়ে যায় নি তাহলে।
মানবজীবনে নিরন্তর চলছে এই মেঘ ও রৌদ্রের খেলা।
Wonderful writing. Good choice in publishing reality of life
ধন্যবাদ 🙏