চলো যাই মেলা
-শচীদুলাল পাল
সমাজবদ্ধ নারীপুরুষ
মিলনেচ্ছার মিলন,
একত্রিত সমাগমে
মেলা সমাজ বন্ধন।
দড়িটানা রথযাত্রা
বহু লোক সমাগম।
ভেঁপু- বাঁশি পাঁপড়ভাজা
বৃষ্টি এলো ঝম ঝম।
পাটিসাপ্টা সরুচুগলি,
পৌষসংক্রান্তি দুধপুলি।
এসো সবাই যায় গো চলে
জয়দেবের কেন্দুলি।
অজয় নদে শুদ্ধাচারে
করি ভোরবেলায় স্নান,
সর্বত্যাগী বৈরাগীদের
রাতভর বাউল গান।
সাগরমেলা সাগরসঙ্গম
পূণ্যার্জনে সিনান,
কপিলমুনির মন্দির দর্শন
মেলায় রাত্রিযাপন।
নবকুমার হব আমি
হও কপালকুণ্ডলা,
প্রেমকাহিনী গড়বো আবার
চলো সাগরমেলা।
কিনে দেব রেশমি চুড়ি
যেওনা বাপের বাড়ি।
গ্রামীণ মেলায় নাগরদোলায়
চলো বনবন ঘুরি।
খাব মিঠাই রসগোল্লা
চপ কাটলেট ঝালমুড়ি,
কলকাতারই যাত্রাপালা
ছয়রসে মন চুরি।
ভেলকি ম্যাজিক সার্কাস কীর্তন
ভাদু টুসু গানে,
লোকসংস্কৃতি মনোরঞ্জন
মেলার পীঠস্থানে।
হরেকরকম জিনিসপত্রে
মনহরে দোকানি,
মনোহারি দোকানেতে
ইচ্ছেমতো কিনি।
আদিবাসীর ধামসা মাদল
পুরুলিয়ার ছৌনাচ,
কবি লড়াই বাউল গান
উচ্চস্বরেরই আঁচ।
দীর্ঘরাস্তা পদব্রজে
শিবলিঙ্গে জল ঢালা,
জনারণ্য তারকেশ্বর
যাই শ্রাবণী মেলা।
রাধাকৃষ্ণের দোলনদোলায়
চলো যাই উখরায়।
প্রথম প্রেমের প্রথম ছোঁয়া
স্মৃতির ঝুলন মেলায়।
শান্তিনিকেতন যাই চলো
রঙবেরঙ পৌষ মেলায়,
নানা রঙের সেই দিনগুলি
মনেতে রয়ে যায়।
রবীন্দ্রনাথ প্রচলিত
বসন্তোৎসবের দোল,
নবযৌবন আনন্দেরই
নাচ গান রঙে শোরগোল।
প্রয়াগেতে কুম্ভমেলা
অমৃতেরই সন্ধান,
লক্ষলোকে জনারণ্য
ত্রিবেণী পুণ্যস্নান।
টুসুগানে সারা পৌষমাস
মাতে বিটি ছিলা,
সংক্রান্তির ভোরে চান সেরে
মানভূম টুসু মেলা।
অলৌকিক গুণসম্পন্ন
সুফি পীর স্মরণে।
পাথরচাপড়ির মেলা দাতা
মেহবুব শাহ মননে।
দুর্গা লক্ষী শঙ্কর কালি
পুজায় মেলার চলন,
বারো মাসে তেরো পার্বণ
মেলা আবহমান।
শিবথানে শিবরাত্রি
চড়ক গাজন মেলা,
শিবসম বরলাভে উপোস
কুমারী নির্জলা।
বইমেলাতে বইপোকারা
পড়ে দেখে কেনে,
সেরা বন্ধু পুস্তকেতে
জ্ঞানী খুশি মনে।