ভালোবাসা, তোমার উড়ো মেঘ
-রীণা চ্যাটার্জী
প্রিয় ভালোবাসা,
কেমন আছো ভালোবাসা? বদলে গেছো বুঝি এখন অনেক? চিনতে পারবে যদি দেখা হয় আবার কখনো, কোনোদিন পড়ন্ত বেলায়!
যদি কোনোদিন তোমার চলার পথে এক ঝলক আষাঢ়ে মেঘ আসে, কি করবে? সরে যাবে তো একটু আড়াল খুঁজে নিতে? যেও না, একটু দাঁড়িয়ে যেও মেঘের নীচে। একটু না হয় ভিজলে.. একটু না হয় মাখলে অনভ্যাসের কয়েক ফোঁটা। তারপর আড়ালে সরে এসে হাতের মুঠোয় দেখো কয়েক ফোঁটা জল- আমার কান্না, মুছে নিও। কাঁধের ওপর কয়েক ফোঁটা জল গড়িয়ে আসছে- আমার পথ চাওয়া অপেক্ষা, মুছে নিও। মাথায়-চুলে আটকে আছে আরো কয়েক ফোঁটা- আমার না-বলা কথা, মুছে নিও। মুখে-ঠোঁটে-চোখে মাখামাখি হয়ে আছে বেশ কয়েক ফোঁটার মূর্ছনা- আমার ভালোবাসা, মুছে নিও। তখন তোমার সারা শরীর জুড়ে কেবল আমি.. মুছে নিলেও ভেজা ভেজা রেশে মিশে থাকবো, তোমার অজান্তেই হয়তো- সত্যিই কি অজান্তে! বুঝবে না আমার স্পর্শ?
আষাঢ়ে গল্প বলে এড়িয়ে যেও না- উড়ো মেঘের হাত ধরে আবার আসবো, বারবার আসবো তোমার মাঝে মিশে যেতে।
বলো তো ভালোবাসা- তুমি কি শুধুই বসন্তের আর পলাশের? এ একচেটিয়া ভাবখানা আর ভালো লাগে না। ভালোবাসা তো আষাঢ়ের, ভালোবাসা মেঘের, ভালোবাসা জল থৈ থৈ বর্ষার। মন কেমন করা মেঘের নীচেও ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে, জানো কি?
টুপুর টাপুর হয়ে নেমে আসে যখন-তখন তোমার হাত ধরে চলবে বলে। যূথিকা রাণী যখন সুবাস ছড়ায় রাতের বেলা, খোলা জানালা দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে ঘরের ভেতর, আকাশ জুড়ে তখন হয়তো একরাশ মেঘ তোমার সাথে কথা বলতে নেমে আসছে ঝমঝম শব্দে- ভালোবাসার বর্ষামঙ্গল।
তখনো তুমি বড়ো উদাসীন ভালোবাসা। বুঝতেই পারবে না কিছু, ঘুম ঘুম চোখে জানালাটা বন্ধ করে দেবে। বন্ধ জানলায় শত আঘাতেও সাড়া দেবে না- বৃষ্টির সব জল ব্যর্থতার পরিচয় নিয়ে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ে জমা জলের ঠিকানা হয়ে যাবে। আবার জল থেকে মেঘ, আবার নেমে আসা..একবার না হয় ভুল করেই হাত বাড়িয়ে দিও- ভুলটুকু ভেঙে দিতে, দেবে তো? অপেক্ষায় থাকবো..
ইতি তোমার উড়ো মেঘ।