মৌন মেঘ
-সুমিতা পয়ড়্যা
রোদ ফুরিয়ে আঁধার ঘনাবে
কালো মেঘেরা বৃষ্টির কথা বলবে;
আনমনা উদাস মনে বৃষ্টির ছাঁট লাগবে গায়ে
ভেবেছিলাম মনের ভিতরে বাস করবো;
বাস করা আর হয়ে ওঠেনি
ভেবেছিলাম বৃষ্টির জলে সব বিষাদ ধুয়ে নেব; সেটাও হয়নি
ভেবেছিলাম অভিমানের গন্ধে কাছে আসবে; না কেউ আসেনি।
এমন দিনে তাকে বলবো ভেবেছিলাম; যদিও বলা হয়ে ওঠেনি
যখন নীল আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা
এখানে ওখানে জল ঝরে পড়ার গৌরব গাঁথা
বজ্রকন্ঠে মেঘ স্বর গর্জায় আকাশে আকাশে
তখন কত নকশার সমাগম জল ধারায়।
নীরব নিভৃতে হৃদয় অনুভবে কেবল সিক্ত প্রাণের অনুরণন—
যেমন করে বিদ্যুতের ঝলকানি ধরা মাঝে এক চিলতে আলোর ছটায় আলোকিত করে।
আষাঢ় বর্ষণে ব্যাকুলতা জীবনের কলরবে।
শ্রাবণ তখন একা একাই আভাস পাই ভরা বর্ষায় প্রাণবন্ত পৃথিবীর,
কেঁপে ওঠে হৃদয়- মন,আকুল, দোঁহে মেলাবার,
বাদল বেলায় ঘন ঘোর আঁধারে অভিসারে মন ধায় প্রাণপণে;
অনুভূতি ঝরায় আবেগের মনে তখন।
আর সব মিথ্যা জীবনের সুর কলতান
জীবনভর দুঃখ যন্ত্রণা, ব্যথা বেদনা; থাকে মনোভার।
সত্য শুধু সেই প্রেম যেখানে আপন আপনার।
এমন দিনে তাকে ইচ্ছে ছিল বলার—-
ভেবেছিলাম বলবো তাকে সুখে দুঃখে অনিবার।
মিলব দহে দুটি হৃদয় দুটি প্রাণ একাকার।
যেখানে হবে না কোনো দেওয়া নেওয়া, চাওয়া পাওয়া
থাকবে না আড়ম্বর; থাকবে না রাশি রাশি মিথ্যা সম্ভার।
শুধু দুজনে হবে দুজনার; একজনমের দীর্ঘশ্বাস!
এমন দিনে তাকে বলবো ভেবেছিলাম—
আর কিছু নয়; এমন বর্ষায় চিরন্তন সত্য সে প্রেম আপনার।
হলো না আর গান গাওয়া।
ঘুম ভাঙা চোখে দেখি ক্লান্ত মেঘেরা নিয়েছে ছুটি।
তৃষ্ণার্ত চাতকের মৌন মেঘ নানান কায়দায় নানান রঙে প্রকাশ করেছে নিজেকে নীল আকাশে।
দৃষ্টি পড়ে কদম গাছটায়। না- এখনো কদম পুরোটা ফোটেনি।
বৃষ্টিরা লজ্জায় প্রিয়ার আঙিনাতে আসেনি।
বৃষ্টি কখন বিষাদের জলে মিশে
ক্ষনিকের স্বপ্নের কাব্যরা বর্ষা ঋতুর ছবি আঁকে।
ভেবেছিলাম এমন দিনে তাকে বলবো।
বলা হলো না।
অসাধারণ কবি