।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।
ফেরারী ফৌজ
-অসীম দাস
জড়ো করো যে যেখানে যত শুভবান
সাতরঙা সূর্যের কণা
ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে
চলমান স্কুল যানে ,
পাঠরতা বাল্যবিবাহ রোধী
বিদ্রোহিনী শানে ,
ফুটপাথে জননীর সন্তানের কানে
বিমুগ্ধ আদরে গাওয়া গানে ।
সুদূর আফ্রিকার কোকো ক্ষেতে
ঝিম্ ধরা প্রতি শিশু শ্রমিকের ঘ্রাণে ,
অন্ধ দম্পতির শক্ত মুঠির প্রেমে
ভিক্ষান্নে টগবগে জানে ,
অর্বাচীন অজানিত গেঁয়ো চারণের
নির্ভুল ছন্দে বাঁধা গানে ,
নিরন্ন ‘থাই’ যুবতীর জলাপেক্ষা
কম দামে বিক্রিত জৈবিক দেহদানে ,
সুপ্রবীণ জ্যোৎস্না প্লাবিত মেকং এর কানে
ঈগলের মরে গিয়ে বেঁচে ওঠা টানে ।
জেরুজালেমের কোনও নামহীন ঘোড়াশালে
মেরী মাতা উদ্বিগ্ন কোল পেতে শোনে,
অরণ্যে কন্দরে প্রকাশ্য রাজপথে ,
সহাস্য বন্দরে পৃথিবীর মিশকালো
আনাচে কানাচে
লাখো যীশু প্রতিবাদী
আজও এই অবাঞ্ছিত সভ্যতা টানে ।
মূলে যীশু বিপ্লবী একথার মানে
অবিরাম ক্রুশবিদ্ধ
ক্রুর কূট তন্ত্রের উড়ুক্কু বাণে ।
ফেরারী হবে কি বলে’
সুমেরীয় শিলালিপি এঁকেছিল
মেসোপটেমিয়ার আঁখির পল্লব ?
মিশরীয় পিরামিড ছেড়ে গণিতের হাত
ছুঁয়েছিল হরপ্পা খেজুরের রস ?
ইতিহাস জানে
ব্যাবিলন লিবিয়া ইরাক সব তাদেরই সন্তান ।
টাইগ্রিস তীর সিন্ধু উপত্যকা
নীলনদ পলি দেখেছিল সব !
ইরাবতী বিপাশার স্রোতে
আজও সব স্মৃতি ফলে আছে ।
বার্ষিক রথে পৃথিবীর সাথী হয়ে
একপাক ঘুরে এসে দেখি ,
জীবন্ত যত ইতিহাস গলাগলি কোলাকুলি
মিলে মিশে এক হয়ে আছে !
ইউফ্রেটিসের নাম ফোরাতে বদলে গেলে
জলের স্বধর্ম তবু সমান-ই থাকে ।
তবুও ফেরারী কেন
লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তু শরীর
অহর্নিশ ঝুলে থাকে ভূগোলক গায়ে ?
এখনই অকুস্থলে যেতে হবে ,
ত্বরা করো শুভবোধবান
ফেরারী ফৌজের মাঠে
নেই কোনও অকিঞ্চিৎ সবাই সমান ।
অনিত্য ফেরারী ফৌজ
নিত্য ফিরে আসে নব কলেবরে ,
অব্যাহত করি এসো ফেরারী সন্ধান !