গোবর নিকানো হয়নি
-শক্তি পুরকাইত
পিঠে বানাবে বলে শিলে
চাল বাটছিল, মা।
পুকুরপাড় থেকে এক আঁচল
শাপলা তুলে ভেজা কাপড়ে
দাঁড়িয়েছিল, বোন।
বাবার চিৎকার শুনে ‘থ’
‘কে, কোথায় আছিস
তৈরি হয়ে নে
ওরা এসে পড়বে
এক্ষুনি।’
ওদিকে দাউ-দাউ করে পুড়ছে
বামুন পাড়া।
মা ছুটে গিয়ে গোয়ালঘরে ঢুকে
গরুগুলোকে সব ছেড়ে দিল
তুলসীতলায় জল ঢেলে
প্রণাম করে
তারপর সবাই বেরিয়ে পড়লাম
নৌকায় চেপে, পদ্মা পেরিয়ে
চললাম।
বাবার মাথায় ভাঙাটিনের ট্যাঙ্ক
সামান্য কিছু জামা – কাপড় নিয়ে
হাঁটতে হাঁটতে এ দেশে পৌঁছলাম।
আঁচের গনগনে ধোঁয়াই
বাবার বুকে শ্বাস উঠলে বলে ‘জানিস
দেশটার জন্য কিছু করতে পারলাম না, রে
বড্ড দেরি হয়ে গেল’
দেশ ভাগের এতবছর পরও
আফশোস করে মা’কে বলতে শুনি
‘ বউমা, শেষবারের মত উঠোনটা একবার
ঝাঁট দিয়ে আসিস
ঘরটাতে কতদিন গোবর নিকানো হয়নি।’