ওরা তিন জন
-রুনু মন্ডল
ওরা তিন জন প্রৌঢ়া মহিলারা ঘন্টা খানেক আগেও কেউ কাউকে চিনতো না। এখন একেবারে গলাগলি। ওরা কে? কারা?
কোথায় থাকে? চলুন ওদের কাছে গিয়ে জানা যাক..
রমা রায়- স্বামী হারা বিধবা। সৎ ছেলে বৌমার সংসারে থাকা খাওয়া। ছেলের সামনে তবু কিছু খাবার জোটে। আড়ালে বৌমা যা খেতে দেয়, তাতে পেট ভরে না। পেটে খিদে নিয়ে রমাদির রাতে ঘুম আসে না। তার ওপর কোনো কারণে যদি কোনো অসুখ বিসুখ বাত বা জ্বর জ্বালার কথা বলে ছেলে, বৌমা এই মারে তো সেই মারে। বাঁচার ইচ্ছে কবে চলে গেছে। মনের দুঃখে কালি ঘাটে গিয়ে বসে আছেন।
সীমা সেন- স্বামী মারা যাবার পর পেনশন পান তবু শান্তি নেই। নিজের টাকা নিজে খরচ করতে পান না। বৌমা চাকরি করে। ছেলের কারখানা বন্ধ। তাই মায়ের পুরো টাকাটাই হাতিয়ে নিয়ে সংসারের পুরো কাজকর্মের ভার মায়ের কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে দিব্যি আছে। উলটে পান থেকে চুন খসলেই মায়ের হেনস্থার শেষ নেই। হুকুম করা কাকে বলে সীমা সেনের ছেলে বৌমার কাছে শিখতে হয়। বাঁচতে ইচ্ছে করে না তাই।
উমা দাস- নিজে চাকরি করতেন, ডিভোর্সি। এখন পেনশন পান। রাঁধেন-বাড়েন খান, যখন না রাঁধতে ইচ্ছে করে খাবার অর্ডার করে আনান। এর অন্য ব্যাপার। একাকীত্ব। বাঁচার আনন্দ নেই।
তিন জনের কাকতালীয় ভাবে একই দিনের কিছু আগে পরে কালিঘাটে চত্বরে দেখা।
সবার কথা শোনা জানার পর ওরা ঠিক করে উমা দাসের বাড়িতে ওরা থাকা শুরু করবে। যেমন কথা তেমন কাজ। আপন জনের সান্নিধ্য ছেড়ে তিন বন্ধুতে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে। উমা দাস সব দায়িত্ব নিয়েছে। নতুন সংসারে তিন বন্ধুর ভালোই কাটছে। নতুন এক সুন্দর সংসার গড়ে উঠেছে।
বাঃ দারুণ ভাবনা।এই পৃথিবীতে সবাই একটু স্বস্তি পাকর , শান্তিতে বাঁচুন।