অঘোরী
-সুমিত মোদক
অন্ধকারে জাগে অঘোরী এক জীবন;
তন্ত্রে নিমজ্জিত মহাকালের এ মন।
কাঁধে তুলে নিয়েছি সতীর দেহ, পায়ের ছন্দে প্রলয়;
তবুও, যুগের পর যুগ ধরে শান্ত থেকেছি
কেবলমাত্র তোমার জন্য;
একদিন তোমার চুলের খোপায় গেঁথে দেবো
সজারুর কাঁটা;
দুঠোঁটে এঁকে দেবো নীলাভ আলপনা;
হয়ে উঠবে বিষ-কন্যা এক;
রাতের বয়স বাড়িয়ে যখন বাড়ি ফেরো,
তখন সারাটা গ্রাম ঘুমিয়ে;
কেবল শেষ ট্রেনের শব্দটুকু বাতাসে বাতাসে রেখে যায় সোহাগ;
স্টেশনে কেউ অপেক্ষা করে না তোমার জন্য আর;
কেবল অপেক্ষা করে পথের কুকুরগুলো;
ওরা তো জানে তুমি ফিরবেই,
দেবে খেতে …
তার পর, যুধিষ্ঠিরের মতো তোমাকেও পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে স্বর্গে;
স্বর্গ তো বটেই তোমার কাছে,
তোমার অসুস্থ মায়ের কাছে,
তোমার বোনের কাছে …..
মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয়;
আধপোড়া শব পেটের ভিতর বাঁচে;
রাতের গভীরে ধুনচির ধোঁয়া নাচে;
ঘোর অমাবস্যার রাতেও তোমার জন্য নিয়ে এসেছি,
কালপুরুষের তরবারি;
এই নাও অমৃতকুম্ভ, গরল …
এই নাও নটরাজ, নীলকণ্ঠ …
তোমার জন্য অবসাদ নয়, তোমার জন্য আমি;
উত্তরপুরুষ,
তোমার পিছনে দাঁড়িয়ে গিয়েছে হাজার হাজার মানুষ, সহযোদ্ধা;
ধীরে ধীরে মিছিল লম্বা হচ্ছে, গর্জে উঠেছে
একটা সভ্যতা, একটা গোটা পৃথিবী;
এখনও সময় আছে,
তোমার তথ্য প্রযুক্তিকে তোমার আয়ত্বে রাখো;
তা না হলে একদিন তোমাকেই নিয়ন্ত্রণ করবে ওরা;
দখল করে নেবে বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড…
প্রেতাত্মারাই সব আজ্ঞাবাহ দাস;
অঘোরী তন্ত্র অন্ধকারে বারো মাস;
তাই, আমি বলি –
সূর্যের আরেক নাম পুরুষ;
নারীর আরেক নাম আলো;
আর জীবন! আলোময় হয়ে জেগে থাকে।
নটরাজ নাচবে আরেক বার, বার বার;
সতীর দেহ আমার কাঁধে আবার …
খুব সুন্দর