প্রতিবেদন

প্রতিবেদন- কবি ও কবিত্বশক্তি

কবি ও কবিত্বশক্তি
-সুনির্মল বসু

নদীর ধারে বসে অস্ত গোধূলির আলোয় যে লোকটা ইজেল তুলি নিয়ে তেলরঙে দিনান্তে ফুরিয়ে যাওয়া বিকেলের ছবি আঁকছিল,
মধ্যরাতে কয়েদখানায় বসে যে অপরাধীটি বাঁশিতে মিঠেল সুরের ঝড় তুলে জেলখানা সুরের রাগিনীতে ভরিয়ে দিয়েছিল,
প্রত্যাখ্যাতা যে মেয়েটি খোলা জানালার ধারে বসে আনমনে বিরহের গান গাইছিল, তার দুচোখে তখন অঝোর বৃষ্টি ঝরে পড়ছিল, ব্যথা পেয়ে মেয়েটির মন জেগে উঠেছিল,
মধ‌্য দুপুরে ধানক্ষেতের পাশে যে কৃষকটি গাছের ছায়ায় বসে স্ত্রীর আনা খাবার খেতে খেতে গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে, ভালোবাসা প্রকাশ করেছিল, উতরোল নদীতে দাঁড় বাইতে বাইতে যে মাঝিটি ভাটিয়ালি সুরে গান গাইছিল, উত্তাল নদীতে চলার ছন্দে সে তখন সুরের মূর্ছনায় ভেসে যাচ্ছিল, সে গাইছিল- মন মাঝি, তোর বৈঠা নে রে, আমি আর বাইতে পারলাম না,
এদের বাইরের পরিচয় যাই হোক, এরা নিজেদের অজান্তেই ওই মুহূর্তে কবি হয়ে উঠেছিল।
কবিত্ব সবার মধ্যেই থাকে, আসলে প্রত্যেকেই কবি।
কখনো কোনো বিরল অসতর্ক মুহূর্তে
এই কবিত্ব শক্তি দিনের আলোয় প্রকাশিত হয়ে যায়।

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page