ভাবনায় ছেদ
-রীণা চ্যাটার্জী
সুধী,
ভাবের ঘরে মশারি, বড়ো উৎপাত, রাতদিন ভনভন করছে। ভাবনায় ছেদ- নিজের মতো করে ভাবার উপায় নেই। পেয়াদা হাজির- শুরু হবে বিশ্লেষণ, বিচার। ওদের আবার বুদ্ধির গোড়ায় কুয়াশা- ধোঁয়া হলে না হয় সরে যাবার আশা থাকতো। কিন্তু কুয়াশা যে! যখন সরবে তখন বুদ্ধি ভিজে গোবর, বড়ো বেকায়দায়। যেমন শিখিয়েছে তেমন করবে, যা বলতে বলেছে তাই বলবে।
বর্তমান চলছে- সুবিধা মতো অতীতের অজুহাত আর বাজু ধরে। কখনো দায় চাপিয়ে বলছে অতীতে এমন হয়েছে, কখনো কৃতিত্বের দাবী নিয়ে অভূতপূর্ব খেতাব জিততে চাইছে। সব অজু-বাজু’র খেল- যেমন খুশি হাতটা ধরো, ক্ষমতায় থাকতে হবে, এটাই আসল কথা। ভবিষ্যত? ও তো ঝরঝরে করেই দেবে, কোনো অবকাশ থাকবে না শুধরে নেওয়ার।
অতীত-ভবিষ্যতের পাট মিটিয়ে বর্তমানেও কেউ কাউকে ছাড়তে নারাজ- আসল দোষ দেখতে নারাজ। কচুপাতার আড়ালে এক সুর- ওদের ধর্ম করেছে, ওদের রাজ্য করেছে, ওরা রাজনীতি করেছে। আমি, আমরা, আমাদের সব ধোয়া তুলসী পাতা। কচুপাতার চুলকানি কি তাতে কমে? যেখানে তেঁতুল জল দেওয়ার কথা সেখানে শাক ধোয়া জল, হড়হড়ানি বেড়েই চলছে। পাবলিক মুখ থুবড়ে পড়ছে, বয়ে গেল তাতে- “আমরা-ওরা” “আমাদের-ওদের” চালিয়ে যাবার লেজুর তো অভাব নেই। বিতর্কে গলা শুকিয়ে কাঠ- তবুও চালাতে হবে এটাই কর্তৃত্বের কৃতিত্ব। একমাত্র বিতর্ক পারে ঘটনার ঘনঘটা তৈরী করে ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু থেকে সরিয়ে আনতে, তারপর.. পরপর.. অভাব কিছুই নেই।
লেজুর-খেজুরের ভনভনানি থেকে বাঁচতে পথ একটাই ভাবের ঘরে আড়ি আর মশারি, সাজতে হবে আনাড়ি।
হেমন্তের শেষ বেলায় বর্ষার অসময়ের হানা হয়তো নতুন গল্প, নতুন আবহাওয়ার ইঙ্গিত। আপাতত হিমেল আমেজে বারো মাসের তেরো পার্বণে বাঙলা মজে, ইতুলক্ষ্মীর ব্রত সেরে পৌষলক্ষ্মীর আরাধনায় উদগ্ৰীব।
পৌষালী শুভেচ্ছা ও শুভকামনা আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে।