প্রতিবেদন

প্রতিবেদন- ভাস্কর্য শিল্পী অগস্ত্য রদ্যার অজানা জীবন কাহিনী

ভাস্কর্য শিল্পী অগস্ত্য রদ্যার অজানা জীবন কাহিনী
-সুনির্মল বসু

 

 

গরীব কৃষকের ঘরের সন্তান তিনি। শিল্পকর্মে অপূর্ব হাত তাঁর। পাথর কেটে মূর্তি গড়েন তিনি। শিল্প প্রদর্শনী করবেন বলে রাজার কাছে সাহায্য চাইলেন। রাজা ভিক্টর ইমানুয়েল অন্যান্য শিল্পীদের আনুকূল্য দিলেও, এই শিল্পীকে অনুদান থেকে বঞ্চিত করেন। শিল্পী তখন ধারদেনা করে তাঁবু খাটিয়ে শিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করেন।
সব দর্শকের ভিড় সেখানেই।
রাজা এই প্রদর্শনী দেখতে এলেন। তিনি তো বিস্ময়ে হতবাক। চোখ সরাবার অবকাশ পাচ্ছেন না। একের পর এক অসামান্য নির্মাণ এই শিল্পীর।

ফ্রান্সের বিখ্যাত লেখক বালজাকের আঠারো খানা মূর্তি তৈরি করেছেন তিনি। নিজেই বলেছেন, আমার পরপর সতেরো খানা মূর্তির মধ্যে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে, কিন্তু আমার আঠারো সংখ্যক
মূর্তির মধ্যে কোন ভুল ত্রুটি নেই। আমি বালজাককে দেখি নি, কিন্তু তাঁর দর্জির কাজ থেকে তাঁর শারীরিক অবয়বের মাপ নিয়েছি। আমার এই শিল্পকর্মটি একদিন পৃথিবীর মানুষকে ভাবাবে।

নিজের শিল্প চেতনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী ছিলেন এই শিল্পী।

রাজা ভিক্টর ইমানুয়েলের একের পর এক মূর্তি দেখে চলেছেন। তিনি তখন মুগ্ধতার শেষ প্রান্তে। মুগ্ধ রাজা একের পর এক মূর্তি দেখে চললেন।

প্রদর্শনীর শেষে এসে রাজা ভিক্টর ইমানুয়েল দেখলেন, একটি ভাস্কর্য মূর্তি কাপড়ে ঢাকা। রাজা তখন পাগলের মতো মই বেয়ে উপরে উঠে শিল্পকর্মটি দেখতে যাচ্ছিলেন, ভাস্কর অগস্ত্য রদ্যা তাঁকে টেনে নামিয়ে দিলেন। বললেন, এই মূর্তিটি অসম্পূর্ণ রয়েছে, এটি দেখা যাবে না। এই মূর্তিটির উপরে একটা নাইটিংগেল পাখি ডিম পেড়েছে। আমার শিল্পকর্মের চেয়ে, একটা জীবনের দাম অনেক বেশি।

শিল্পীর এই মহানুভবতা রাজাকে মুগ্ধ করেছিল। তিনি শিল্পীকে রাজসভায় সাদর আমন্ত্রণ জানালেন।

বিশ্ববন্দিত এই অসামান্য ভাস্কর শিল্পী মানুষটি আজ জগৎ বিখ্যাত হয়ে আছেন। বড় শিল্পী, তিনি বড় মনের মানুষ। বিশ্বজুড়ে অমরত্বের স্বর্ণ মুকুট আজ তাঁর মাথায়।

Loading

One Comment

  • Indrani+Dasgupta

    ভারি ভালো লাগলো লেখাটি। চিনলাম এক শিল্পীকে যাঁর কাছে তাঁর নিজের শিল্পকর্মের চেয়ে জীবনের দাম অনেক বেশি

Leave A Comment

You cannot copy content of this page