এই পৃথিবীর পান্থ নিবাস
-সুনির্মল বসু
মানুষের কাছে ক্রমাগত ঠোক্কর খেতে খেতে লোকটা আজকাল আকাশ দ্যাখে,
স্বার্থপরতা তো অনেক দেখা হলো,
শেষ পর্যন্ত কি থাকে জীবনে,
তারচেয়ে নদীর মোহনা ছাড়িয়ে
সাগরের দিকে ছুটে চলা,
শিমূল বনে অরণ্য পাখির গান,
ঝিলের জলে শাপলা শালুক,
পায়ের নিচে থাকুক ছুটে চলার মতো
আদিগন্ত প্রসারিত সবুজ মাঠ,
মাথার উপর রংবেরঙের ঘুড়ি উড়ুক,
কাঠ বাদাম গাছের মাথার উপর
উড়ে যাক ঢাউস ঈগল,
রাত গভীরে জোনাকিরা বাঁশবনে
কথাকলি গেয়ে যাক,
মানুষের কাছে ক্রমাগত ঠোক্কর খেতে খেতে
লোকটা আজকাল আকাশ দ্যাখে,
স্বার্থপরতা তো অনেক দেখা হলো,
শুধু বেমিশাল হেমলক অভিজ্ঞতা,
একদিন লোকটা মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো, আকাশের কাছে, সবুজের কাছে,
নদীর কাছে, সমুদ্রের কাছে,
প্রজাপতির কাছে, প্রাচীন বৃক্ষের কাছে,
নতুন করে বেঁচে থাকাটা শিখে নিই,
লোকটা মনে মনে ভাবলো,
সরল মানুষের কাছে, শিশুর কাছে,
নতুন করে বেঁচে থাকাটা শিখে নিই।
এক সকালে ঘুম থেকে উঠে লোকটা
আকাশ দেখলো, আলো দেখলো,
আর্কিমিডিসের মতো চিৎকার করে
বললো, পৃথিবীটা ভারী সুন্দর,
পৃথিবীটা ভারী মায়াময়,
সেই কবে থেকে আমি এমন
একটা পৃথিবী খুঁজে যাচ্ছি।