কবিতা

কবিতা- তোর কাছে

তোর কাছে
–সুমিত মোদক

 

 

সকলকে তো আর সব কথা বলা যায় না;
তোকে যেভাবে বলা যায়…
অথচ, মাঝেমধ্যে যেভাবে রেগে যাস,
ভয় হয়, ভয়.…
সব হারাবার ভয়, তোকে হারাবার ভয়;
সে ভয় আমাকে কালভৈরব করে তোলে জানি;
সে জন্য একটু একটু করে মেলে ধরতে পারি
ভিতরের সকল স্বত্ত্বা;
আমার আমিত্ব …

পৌষালি বাতাস মেখে যখন ঘুমায় রাত;
কেবল জেগে থাকি আমি, তুই আর সময়;
সে সময়কে বার বার অবাধ্য করে তুলতে পারি;
অবাধ্য হয়ে ওঠে নিজের কাছেও …
কিন্তু তুই, পারলি না সীমারেখা অতিক্রম করতে;
একটা কক্ষ রেখার মধ্য তোর আবর্তন;
তোর স্বপ্ন …

আমার এ ক্ষ্যাপা জীবনে খুঁজে নিতে চেয়েছি
আরেক মহাজাগতিক সংসার;
যেখানে খেলে বেড়াবে হাজার হাজার ধূমকেতু,
ছায়া পথ, একের পর এক নক্ষত্র;
আমি এক ছায়া পথ থেকে আরেক ছায়া পথে হেঁটে যাবো অনন্ত কাল…

আজকাল তুই বন্ধ করে রেখেছিস উত্তরের জানালা;
এক সময় ওই জানালা দিয়ে অবাধে ঢুকে পড়তো নক্ষত্র পতনের শব্দ,
আমার বিলাবল রাগ;
যে রাতে আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইবি,
সে রাতে খুলে রাখিস জানালার অলীক গরাদগুলো;
তা না হলে গলে গলে পরবে জ্যোৎস্নার অভিমান;

ভয় ভয় করে একদিন কথা শুরু হয়ে ছিল
তোর সঙ্গে, নিজের সঙ্গে,
আমার-ই ঈশ্বরের সঙ্গে;
আমার ঈশ্বর এতো নরম মনের
তা আগে কখনও বুঝতে পারিনি;
আসলে বুঝতে দেয়নি;
এখন কত সহজে ঢুকে যেতে পারি
ঈশ্বরের গোপন অভিলাষে,
অভিসারের;

তোর কাছে যেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারি,
সেভাবে তো আর কারোর কাছে মেলে ধরতে পারি না!
কি করে পারবো!
আমার এতো অন্ধকার, এতো পাগলামো
তুই ছাড়া কে মেনে নেবে!
কে প্রশ্রয় দেবে অনন্তকাল!

এখন ভোরের আলো ফুটছে একটু একটু করে;
এখন একের পর এক ডেকে উঠছে ভোরের পাখি,
আমারই আরেক স্বত্ত্বা;

তুই ছাড়া আমার ঈশ্বরও আমাকে পবিত্র করে তুলতে পারবে না জানি;
তাই তোর কাছে বার বার নতজানু হতে পারি।

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page