ঘুণপোকার বাসা
– অমল দাস
ঘুণপোকার বাসা রসালো কাঠ ,
শুকনো কাঠে পিঁপড়ের ঝাঁক।
এক মুঠো মাটি সোঁদা গন্ধের স্বাদ,
বিতৃষ্ণা লাগে কেঁচোর আহ্লাদ।
সবুজ পত্রে ছাইয়ের আস্তরণ,
কুয়োয় পড়া ব্যাঙের নেই উত্তরণ।
পাখির কুহুতান সাধনার ফল,
মাছের আর্তনাদ তপ্ত হাঁটু জল।
বাতাসে খনিজের অবাধ বিচরণ,
আশ্রয় চায় ছায়া ক্লান্ত চরণ।
প্রজাপতি ডানা ক্ষণিকের ভালো,
পরক্ষণেই ঘৃণ্য শুঁয়ো হয়ে গেল।
নদীর মহানতায় পচনের জয়,
ধৈর্য্যের মৃত্তিকায় ধীরে ধীরে ক্ষয়।
গাই-এ অতি প্রেম, গৃহে বলদে না
বোয়াল আপনে আপন খোঁজে না।
সাজানো ঘরে মাকড়সার জাল,
চুপ গৃহগোধিকা শিকারির চাল।
লতা আলোয় ভয়ে মাথা তোলে,
ছাগল এসে সমূলে তা নেয় গিলে।
মৌমাছি জড়ো হয় খুশির ছন্দে,
মধুচোর চক্রান্তে খোঁচার আনন্দে।
বিড়াল এসেছে -মৃদু ম্যাও করে,
ইঁদুরের ছোটাছুটি স্বরেই ডরে।
চিল আকাশ হতে শকুনের চোখ,
হেঁসেলের চিকেন -মরুতে মরক।
সূর্যের ক্রোধে আসে আগুনি বেলা,
মজুরের রক্তে -আমীরের ভেলা।
বৃক্ষ পুষ্প অতি লালনে ফল ধরে,
শিলা হঠাৎ নির্দয়ী আঘাত করে।
ঘর্ষণে চাকা তপ্ত পিচে মিশে যায়,
চালক- গিয়ার ঠ্যালাতে মজা পায়।
সুগন্ধি পুষ্প আবহে সুবাস ছড়ায়,
দুষ্ট ভ্রমরের দল বোঁটা ছিঁড়ে খায়।
শিশির কান্না জুড়ে দূর্বার যাপন,
সবার পদতলে হাসে -নেই আপন।
জমাটি হিমস্খলন অতি সন্তর্পণে,
রক্ত পিপাসুর সভা এই তপোবনে।
শোভা নয় ডানার ফড়িঙের ভয়,
ভাদ্রের কুকুর পিছে পিছে ধায়।
কবুতর ঝাঁকে ওরা খাদ্য ছড়ায়,
উড়ো পথে চড়ূই ভাগ মেরে যায়।
স্বাদ নেই আর পাতে দেওয়া খাদ্যে,
মাছিদের দিন কাটে অতি নিরানন্দে।
বন্য বিচারে হাতি হুঙ্কার তোলে,
ক্ষুদ্র বন্যেরা -ভয়ে পাতা দোলে।
ব্যস্ত লোকালয়ে সময় -অসহায়,
হিসেব নিকেশ সব হবে যমালয়।