কবিতা-রাত্রির কাছে ঋণ

রাত্রির কাছে ঋণ
-সুনির্মল বসু

 

 

মগ্ন আকাশ যখন আকাশ জুড়ে তারাদের আলপনা আঁকে,
তখন কি তুমি রাত জেগে সপ্তর্ষিমণ্ডল দ্যাখো,
ধ্রুবতারার সঙ্গে তুমি কখনো চুপি চুপি কথা বলো,
পৃথিবীর বিভিন্ন মানুষ রাত জেগে আকাশের তারা দ্যাখে,
কত মানুষ সারারাত সবিস্ময়ে রাতের আকাশ দ্যাখে,
তখন গাছপালা নীরব থাকে, এপিটাফের ওপর বয়ে যায় বিষণ্ন বাতাস, রাতের বিষণ্ণ বাতাস স্মৃতি ও স্বপ্নের গল্প বলে,
আকাশে চাঁদে হেলে পড়ে, কামিনী ফুল গাছে দুরন্ত হাওয়া বয়ে যায়,
একা প্রহর জাগার বেদনা নিয়ে কেউ কেউ তখনো
রাতের আকাশ দ্যাখেন,
দিনের ব্যস্ততা রাতে চোখে পড়ে না,
জাহাজঘাটায় জাহাজ দাঁড়িয়ে থাকে,
আগামী সকালের অপেক্ষায়,
মহাকাশ বিজ্ঞানী দূরবীনে চোখ রেখে শনির বলয় বা বৃহস্পতি গ্রহকে দ্যাখেন,
এভাবে রাত জেগে আকাশের দিকে চেয়ে থাকতে থাকতে চেয়ে থাকতে থাকতে কেউ কেউ অন্য ভাবে বেঁচে থাকার অর্থ খোঁজেন,
মোহনা থেকে নদী সাগরের দিকে যায়,
ব্যর্থ প্রেমিকা জানালায় চোখ রেখে আকাশ দ্যাখেন,
রাত বাড়ে, হতাশা রাতের ঘুম কেড়ে নেয়,
রাত গভীরে সৃষ্টি এবং হতাশা পাশাপাশি জেগে থাকে,
অনন্ত রাতের জ্যোৎসনা এক যাত্রায় ভিন্ন ফল এনে দেয়,
ভোররাতে গাছের পাতায় শিশির ঝরে পড়ে, নদীর পাড়ে নিম গাছের ডালে পাখিদের কোলাহল শোনা যায়,
সকাল আসে, আবার একটা নতুন দিনের শুরু তখন,
কাননে কুসুম কলি ফোটে, রাত্রির কাছে অজস্র ঋণ জমা রেখে, মানুষ তখন বিছানায় ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দেয়।

Loading

Leave A Comment