স্বাদ
-সুমিতা দাশগুপ্ত
-তুমি কি এবারেও যাচ্ছো?
-হুম্ কাল ভোরে বেরোচ্ছি, তুমি আসবে নাকি ?
-না বাবা, ওই গোটাকতক পিঠে, পায়েসের জন্যে অফিস কামাই করে, তোমার ওই ধ্যাড়ধ্যাড়ে গোবিন্দপুরের দেশে ছোটা আমার পোষায় না। আর তোমাকেও বাপু বলিহারি যাই! পিঠে খাবে তো এখানে বসেই খাও না, আজকাল তো এই শহরেই সব মেলে। পিঠের দোকান পিঠে পুলি উৎসব, এই শহরেই তো কতো আয়োজন। সেই সব তোমার নজরেও পড়ে না, না-কি!
-তা ঠিক, সবই নজরেও আসে, তবে কিনা ওখানকার পিঠের স্বাদই যে আলাদা।
-পিঠে তো পিঠেই হয়, তার আবার এখান- ওখান কি?
-উঁহু, উপকরণ এক হলেই কি স্বাদ এক হয়! ওখানকার নারকেলের পাকে মেশানো হয় ভালোবাসার গন্ধ, দুধের হাতায় থাকে মোলায়েম আদর। এখানে কোন দোকানে মিলবে সেসব?
-তোমার সঙ্গে কথা বলাই ঝকমারি, সবেতেই কাব্য।
-তেমন করে দেখতে গেলে জীবনটাই তো এক মহাকাব্য। আরে বাবা কাব্য কি আর আকাশ থেকে ঝরে পড়ে! ওটা যে মানুষেরই শিকড়ের উপাখ্যান।
পরদিন ভোরে সৌম্য তৈরি হয়ে বের হতে যাবে- পৌষালীও হাজির।
-একী তুমি! তৈরী হয়ে এসেছো দেখছি, কোথায় চললে?
-চলো তোমার সঙ্গে তোমার দেশে গিয়ে দেখেই আসি, কেমন করে পিঠে পায়েস তৈরী হয় সেখানে। পুলিপিঠের খামে কেমন করে ভালোবাসা ভরে দেন তোমার মা -ঠাম্মারা।