ফিকে শুভেচ্ছা
-রীণা চ্যাটার্জী
সুধী,
পঞ্জিকা মতে বর্ষবরণের সূচনা হয়ে আজ দ্বিতীয় দিন। দিন পেরিয়ে রাত আসছে, রাত পেরিয়ে ভোর- ভয় ভোর। আবার কি অপেক্ষা করে আছে! নতুন খবর? না, তা নয়- বীভৎসতা কতোটা তীব্র, সেই খবরে আরো কতো উলঙ্গপনা!
চাপান-উতোর, তর্ক-তরজা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে। তাঁরা সে গুরুভার অক্লেশে কাঁধে তুলে নিয়েছেন। এইসব- “চলছে… চলবে”
এরমধ্যে মাননীয় বাদী-বিবাদী পক্ষ আছেন তাঁদের যুক্তি-গপ্পো আছে। আর আছেন অতীতদ্রষ্টারা, যাঁরা অতীতের ঝুড়ি উপুড় করে একটা একটা করে পচাগলা উদাহরণ তুলে তুলে দেখাবেন। তাঁদের মনে হয় এটাই বক্তব্য অতীতে ওরা করেছে এখন আমরা করলে দোষ কি? বলছিলাম পরিবর্তনের অঙ্গীকার ভুলে গেলেন কি? আমরা পরিবর্তনের সভ্যতা-সংস্কৃতি দেখছি কি? না কি শেয়ালের কুমীর ছানা তুলে দেখানোর মতো পরিবর্তনের ছল দেখানোর কথা ছিল! তাহলে কুমীর ছানা শেষ হলে! ছলেবলে তখন পা’ বাঁচাতে পারবেন তো? আপনাদের অবশ্য চটি আছে- একটা ভরসা এই আর কি…
আছেন ইতিহাস প্রাজ্ঞরা- যাঁরা এদেশ-ওদেশ-বিদেশ, একাল-ওকাল দেখিয়ে বলে দেবেন ইতিহাস সাক্ষ্য আছে ক্ষমতার পেশী প্রর্দশনীর। মন শান্ত হয় তো এইসব স্তোতবাক্যে? সভ্যতা কি? অবশ্যই আধুনিক শপিংমলে তা পাওয়া যায় না। সভ্য হলে তবে তো সভ্যতা। আপনারা ইতিহাসের উদাহরণ পাথেয় করলে প্রস্তর যুগে ফিরে যাওয়াই তো ভালো- আর যাই হোক শব্দের-বাক্যের ঝনঝনানি থেকে তো রেহাই পাব। কি বলেন প্রাজ্ঞজনেরা?
শব্দের ঝনঝনানি থেকে মনে পড়ে গেল সদ্য কথিত (সংস্কৃতিমনস্ক?) এক বুদ্ধিজীবীর বাণী। যদিও এর পূর্বে উনি একাধিক বাণীতে সরগরম ফেলেছেন- তবুও শেষোক্ত বাণী যেন অমৃত সমান। কানের ভিতর দিয়ে মরমে প্রবেশ করলেই অজান্তেই হাতটা পাদুকাযুগল স্পর্শ করছে। নাহ্, ওনার নয়, নিজের, তারপর?
পাদুকাবন্ধনীর সদ্বব্যবহার করতে মনটা আনচান করছে, জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। ঠাণ্ডা হবার উপায় নেই কারণ উনি মমতাময়ীর আদর্শের আঁচলে সুরক্ষিত এক অদ্ভুত প্রাণী।
তবুও মনটা চীৎকার করে বলে উঠতে চাইছে- এমন প্রতিবাদী “নপুংসক” আরো শতসহস্র জন্ম নিক, আমরা মাতৃ জন্ম ধন্য মনে করবো এমন “নপুংসক” জন্ম দিয়ে, তবুও ওনার মতো বুদ্ধিজীবীর জন্ম দিয়ে গর্ভ কলঙ্কিত করতে চাই না, ওনার মা যেখানেই থাকুন (ওনার তো স্বর্গ-বেহস্ত ঘেঁটে আছে) একই কথা বলতেন মনে হয়। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে লজ্জাও পেতেন। সন্তানের গর্বে গরবিনী হওয়া যায় কিন্তু এমন কুপুত্র! ছিঃ…
শুভেচ্ছা, শুভকামনা সব যেন কেমন ফিকে লাগে, এতো রক্তের বন্যায়। এ যেন রক্তসেচন হচ্ছে! এর ফসল কি হবে? কি হতে পারে? জানি না, জানতেও ভয় করে।