কবিতা- সেই মানুষটি কে

সেই মানুষটি কে
–সুমিত মোদক

মানুষটি, আমাকে চেনে না;
চেনে না আমার ঘর-সংসার,
এ টেরাকোটা-জীবন;

অথচ, একের পর এক ছড়িয়ে থাকা ধান
খুঁটে খুঁটে তুলে নিচ্ছে গামছায়;
যেটা দিয়ে সে ঘামে ভেজা শরীরটা মুছে নেয়,
প্রখর রোদ্দুর থেকে বাঁচতে মাথাটি ঢেকে নেয়;
সেই গামছায়…

আমার মাটির উঠান জুড়ে যে দু-একটা ধান ছড়িয়ে আছে,
সে কি ভাবে জেনে ছিল জানি ন ;

কেবল এটুকু জানি, মানুষটি কে আমি চিনি না;
আমি, ধান চিনি;
সেও…

হু হু করে বাড়ছে সূর্য-তেজ,
তার ধান কুড়ানোর আগ্রহ;

যদিও এটা আমাদের ছোটবেলায় খুবই ছিল;
আবাদী জমি থেকে ধান উঠে গেলে
ঝরে পড়া ধানগুলো খুঁটে খুঁটে তুলে আনতাম
চুপড়ি করে;
সে ধান থেকে চাল বার করে
ভাত ফোটাতো আমার মা;

এখন দু একটা সোনালী ধান ফোলানোর চেষ্টা করে চলেছি,
সামনের অনাবাদী জমিতে,
আমার মাটিতে, আমারই বোধের ভিতর;

মানুষটি সে খবরও জেনে গেছে কি ভেবে;

মানুষটি আমাকে চেনে না;
হয়তো চিনবেও না কোনও দিন;
কিন্তু, চিনে নিয়েছে আমার মা কে,
আমার মাটিকে;
যে মাটিতে দু-একটা সোনালী ধান ফলানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছি;

আমিও মানুষটি কে চিনতে পারলাম না;

প্রচণ্ড গরমে এ মুঠো দখিনা বাতাস কানে কানে বলে যায় কথাগুলো;

কোনও দিন বৃষ্টিতে ভিজতে চাইনি;
রোদ্দুরেও …
অথচ, প্রতিদিন, প্রতিরাতে ভিজে যাই;

আর তখনই সেই মানুষটি কে খুঁজি;
যে কিনা আমারই বুকের ভিতর লালিত হয়।

Loading

Leave A Comment