কবিতা- আবার সিংহাসনে

আবার সিংহাসনে
-সুমিত মোদক

 

রাজা যেই বসেছে সিংহাসনে ,
সিংহাসনের একটা পরী ঘুরতে ঘুরতে
উড়তে উড়তে গেলো চলে আকাশ পথে ,
পরীর দেশে ;
যাওয়ার আগে বলে গেলো –
রাজা , বাজাও বাঁশি আপন সুরে …

রাজার তো বাঁশি নেই , সুরও নেই ,
নেই সেই গো-রাখালের হৃদয় ;
সেই রাখাল বালক কোথায় হারালো !
যে কিনা , মাঠের মাটির ঢিবিতে বসে
আপন মনে মেঠো সুরে বাঁশি বাজাতো ,
গো-রাখালদের বিচার সভা বসাতো ;
কত সহজে মিটিয়ে দিতো দেহাতি মানুষ গুলোর
ঝগড়া-বিবাদ …

যে দিন থেকে ঢিবিটি ভাঙা হলো ,
মাটি খুঁড়ে তুলে আনা হলো
রাজা বিক্রমাদিত্যের বত্রিশ সিংহাসন ,
সে দিন থেকে সেই বালককে আর দেখি না ;

সে বালক আজ কোথায় হারালো !

সেই সিংহাসন এখন রাজপ্রাসাদে ;
রাজা যেই বসে সিংহাসনে ,
এক এক করে সিংহাসনের পরী ঘুরে ঘুরে
উড়ে যায় ;
আর যাওয়ার আগে বলে যায়
এক একটা কথা ,
বত্রিশ সত্য ;

আর রাজা বলছে –
পরী , থেকে যাও , থেকে যাও …
তোমাদের ছাড়া এ সিংহাসন বড় যে বেমানান …
তখন পরীরা বলে –
আবার ফিরে আসবো , যে দিন সেই গো-রাখাল বালক বসবে এ সিংহাসনে …
সে দিনই ফিরবো …

রাজা এখন পথে নেমেছে , মাঠে নেমেছে ,
নেমেছে প্রজার কাছে ,
সেই প্রান্তিক রাখাল বালকের খোঁজে ,
যে কিনা বসতে পারে বত্রিশ-সিংহাসনে ;

বাতাসে বাতাসে মেঠো সুরের তান ,
জমি থেকে উঠে আসে
সোঁদা মাটির ঘ্রাণ ;
প্রজারা দিচ্ছে রাজার কপালে রাজ টিকা ;
রাজা ফিরবে আবার রাজ সভায় ,
এখন রাজার দেহাতি এক জীবন ;
রাখালিয়া এক সুর …

একে একে আসছে পরী ফিরে ;
আলোর উৎস , ভালোর উৎস ,সিংহাসন ঘিরে ;
রাজা সামলে নেবে রাজ্যপাঠ ;
রাজা আবার বসবে সিংহাসনে ।

Loading

Leave A Comment