উৎসব শেষ হলে
-সুনির্মল বসু
উৎসব শেষ হলে শূন্যতায় পড়ে থাকে দেবদেউল,
আলো আশা, বাসনারা ব্যথার ডানা মেলে,
নীলকন্ঠ পাখির মতো সুখী ডানা মেলে শূন্যতায় উড়ে যায়,
জীবন এমনই, জীবন যে রকম,
এত তার আলো, এত স্বপ্ন তাকে ঘিরে,
তিনি চলে গেলেও, অন্ধকারে পড়ে থাকে স্মৃতির জৌলুস,
তিনি এলেন, থাকলেন, চলেও গেলেন,
তিনি মা আমাদের, তিনি বিশ্বজননী
অতল সলিল, জাহাজের ভো, দূরে সবুজ বনানী,
সপরিবারে পিতৃগৃহ ছেড়ে স্বামীগৃহে,
অনন্ত বাঙালি জীবন কথা বলে।
উৎসব আসে, উৎসব যায়,
মুগ্ধতার স্মৃতিমালা জাগে,
আলো দেয়, কাঁদায়,
আকাশ আলো দেয়, অরণ্য পাখি গান গায়,
নদী সমুদ্র বন্দর প্রতিদিন জীবনের কথা কলি রচনা করে,
গাছপালা রোদ্দুর, গলি পথ, পাকা সড়ক
জীবনে ব্যস্ততার জল ছবি আঁকে,
স্মৃতিগুলো রয়ে যায় জীবনের বাঁকে,
উদাসী ধান ক্ষেত, মৃদুল হাওয়া,
মোহনার জল তরঙ্গ, আকাশের মেঘ শিল্প
নতুন করে বেঁচে থাকবার কথা বলে,
পলে পলে দিন, দিনে দিনে মাস, মাসে মাসে বছর ঘুরে আসে,
অপেক্ষার পথ চেয়ে অপেক্ষারা চেয়ে থাকে,
জীবনে সুখের সময় বড় কম,
অথচ, সুখের জন্য পথ চেয়ে বসে থাকা,
এভাবেই দিন যায়, দিন আসে,
চলে যাওয়া মানুষ আর ফিরে আসে না,
স্মৃতি সব ধরে রাখে,
মানুষের জীবন এক মহান সংগ্রহশালা,
তবু তার আসার আশায় পথ চেয়ে থাকে মানুষ,
তার মতো এত আলোর রোশনি আর কে দিতে পারে,
উৎসব শেষে শূন্য দেউলে বিজন অন্ধকারে দাঁড়িয়ে
এভাবেই জীবন গভীর জীবন সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়,
ভেবে দেখি, তিনি চলে গেলেও,
ঘর অন্ধকার হয়ে যায়নি,
অন্ধকারে অনির্বাণ আলোর প্রদীপ নিরন্তর
আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে।