নৈঃশব্দের মলাট
-অমল দাস
সবুজের ঝোপঝাড় —সারি সারি গাছ পথের ধারে
রোজনামচায় বেড়িয়েছি আমি।
টুপটাপ ঝরে পড়া পাতা, ঘাসফুল -বনফুল
দেখি।মাদারের বন কবেই হারিয়ে গেছে!
আম, জাম, অশ্বত্থ দু’একটি ঢিল ছোঁড়া শৈশব
আজও আছে —বাঁশের আড়ালে যুবতী চুল ধুয়ে –
পুকুরের নাবালক জলে দেয় ডুব।
আগুনি শরীর উথলিয়া ওঠে তার বুকভরা জল।
দাঁড়াবার উপায় তো নাই —থেমে থেমে হাঁটি
পিছে পিছে চাই । নয়ন জুড়ায়ে যদি একবার তারে…
আমার দাঁড়াবার উপায় আর নাই! আহা রে…
গ্রাম ছাড়ি, ট্রেন ধরি —শেষে ধীরে
শহরের গলি পথে, সব অচেনা পরিযায়ী
পথচারী! আমার আপনার পরিচিত নাই..
এখানে ছায়ার মায়ায় গাঁথা পথের দু’ধারে
ঘেঁষাঘেঁষি গাছ দেখিনা প্রেম করে!
ছেঁড়া-ছিন্ন পাতার পা পেতে এলোকেশী গল্প
শুনতে পাইনা আর —শুধু নৈঃশব্দের মলাটে
গুমরে মরে ঘর, বাড়ি ,শুখা জানালা।
রঙচটা দেয়ালের ইতিহাস খসে খসে পড়ে।
কারো কারো জানালায় উঁকি দিয়ে ঝুঁকে থাকে-
ফ্যাকাসে নাগরী —নগরে।
চুরি যাওয়া মেঘের বাজারে খাঁ-খাঁ রোদ কিনে আমি হেঁটে যাই –
তোমার সেই চেনা রূপ ধীর-লয়ে চাপা পড়ে
ঘামে ধুয়ে- সভ্যতার কাগজের কবরে!