মেঘ বৃষ্টি এবং কবিতার কিস্যা
– অসীম দাস
বৃষ্টির বীজকে ছাদের উপরে শেষ শ্রাবণের শীষে
ঘুম পাড়িয়ে মেঘ এলো কবির ঘরে।
কবি বললেন- কবিতার জন্মকাল থেকে আজ অবধি
যত মেঘ জমেছে, একসঙ্গে গলে’ গেলে
মহাপ্রলয় হবে। তাই আমি আর মেঘকে
ডাকি না। তুমি এলে কিভাবে?
মেঘ বললো- আমার মেঘে কোনো বৃষ্টি নেই।
কবি শুকনো লিকলিকে মেঘকে সোফায়
একটু এলিয়ে নিতে বললেন।
রাত পেরিয়ে ভোর হতেই ঝমঝমিয়ে এলো বৃষ্টি।
ধড়মড়িয়ে কবি উঠে জানালার শার্সি বন্ধ
করতে করতে মেঘকে ধমক দিলেন
-তুমি যে বললে তোমার মেঘে বৃষ্টি নেই !
মেঘ আমতা আমতা করে উত্তর দিল
– সত্যিই নেই, তবে… বলেই ছুট্ ছাদের উপরে।
পিছনে পিছনে কবি। বৃষ্টি তখন অঝোরে
ভিজছিল নিজেরই বৃষ্টিতে। কবি, কবিতাকে
বৃষ্টির সঙ্গে নাচতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন
-তুমি কখন এলে? কবিতা বললো- আমি তো
বৃষ্টির ভেতরেই ছিলাম, বৃষ্টির বীজে।
-তাহলে আমার কাছে কে ছিল?
-কেন, খাতা আর পেন!
-আর মেঘ?
-মেঘই তো বৃষ্টির ভাবনা হয়ে গলে’ পড়ছে
ঝমঝম করে বৃষ্টির গায়ে আর আমি সৃষ্টি
হচ্ছি বৃষ্টির ফোঁটায় ফোঁটায়।
কবি রুগ্নকন্ঠে ফিসফিস করে বললেন
-আর আমি?
বৃষ্টি থেমে গেছে, কবি ঘুমিয়ে। দরজায়
বেল বাজার শব্দ। কবি জিজ্ঞেস করলেন
-কে?
-আমরা, মেঘ বৃষ্টি এবং কবিতা।