যদি তার দেখা পাই
– সীমা চক্রবর্তী
যদি তার দেখা পাই মেঠোপথে
অথবা লক্ষ দারুচিনি গাছের ভীড়ে
সে কি চিনতে পারবে আমারে ?
এমনই তো ভেবে ছিলাম তিরিশ বছর আগে…..
যখন জীবন ছিলো তরতাজা পুরো ভাগে
আজ তিরিশ বছর পর, এই প্রান্ত বেলায় এসে
জীর্ণ দেহে….. ক্লান্ত চোখ… বলিরেখার জটাজালে
হাল ভাঙা নাবিকের মতো, হতাশার শেষ বন্দরে,
যদি কোনো বিষন্ন সকালে
দেখা হয়ে যায় তার সাথে আমার
দু’দণ্ড চেয়ে, মৃদু হেসে সেকি করবে
কুশল বার্তার লেনদেন …
তার ঠোঁটে এখনও আছে কি লেগে বনলতা সেন…. ?
হয়তো বিদর্ভ নগরে , নয় অন্য কোনো উপনগরে
হয়তো নবান্নের দেশে, বা মলয় সাগরে,
হয় যদি আমাদের দেখা….
ভোরের স্নিগ্ধ শিশিরের আয়নার প্রতিবিম্বে
যেখানে নতুন করে রোদ্দুর মাখে চিল
সব পাখি ঘরে ফিরে যায়… নদী মেশে মোহনায়….
পান্ডুলিপি লেখায় যখন হয়ে যায় গরমিল
তখন যদি নিয়ে আসি
দুহাত ভরে সিংহলের সমুদ্র সফেন
তার চোখে কি তখনও থাকবে লেগে বনলতা সেন…?
তিরিশ বছরের ধূসর জীবনের রৌদ্র প্রখর রাস্তায়
হঠাৎ করেই যদি দেখা হয়ে যায় মুখোমুখি
ঝরে পরা শুকনো পাতায়
হয়তো তারাদের ভীড়ে
ক্লান্ত প্রাণে……. সন্ধ্যার নীড়ে
হয়তো বা দুজনেই আধা – সুখী….।
দেখা যদি হয় একটি বার
যেখানে জীবনের সব রং অন্ধকারে মিলেমিশে একাকার…।
শুধু তাকে ভালোবেসে….
আজ ত্রিশ বছর পেরিয়ে এসে,
পৃথিবীর নিভে আসা রং মেখে
খুব জানতে ইচ্ছে করে….
যে নামে হৃদয়ের তন্ত্রিতে তার বেজে উঠতো বিঠোফেন…
এখনও কি তার বিহ্বল দৃষ্টিতে লেগে নাটোরের বনলতা সেন….?