স্বপ্ন সন্ধানী
-রাণা চ্যাটার্জী
ঠেকে এলি কিন্তু এমন গুম হয়ে কি ভাবছিস বলতো অয়ন !!এত কিসের ভাবনা?
না রে কিছু না বলে সিগারেটে টান দিতেই পুলক পাশ থেকে প্রশ্ন ,’ কি ভাবছিস বল ভাই,তোর বাড়ি গিয়েও দেখছি কি সব কাগজে কি সব হিসেব আর ভেবেই চলছিস!
পল্টু ফুট কেটে বলল সবাই মিলে আয়নক্স যাই,ফিল্ম দেখে পিৎজা খেয়ে ফিরবো।
থাক না ওসব ,পুজো আসছে হাতে টান আছে,এসব পরিকল্পনা না হয় অন্য একদিন হবে।
কি বলিস রে অয়ন তুই।দিল দরিয়া তোর কিনা অর্থের টান!আগে প্রায় খাওয়াতিস তুই! এখন কি প্রেমে ইনভেস্ট করছিস,তাই চিন্তা মগ্ন!
না রে ,পুজোর চার দিন কিছু ভিখারিকে ভিক্ষা করতে নিষেধ করেছি,ওদের নিয়ে কিছু করার ইচ্ছা ছিল ।ওদের সংখ্যাটা আর কিছু যদি বাড়াতে পারতাম খুশি হতাম কিন্তু আমি নিরুপায়।
‘কি ভাবনা তোর শুনি?ভিক্ষা করতে মানা করলে ওদের চলবে কি করে?পুজোর দিন গুলোতে ওদের ভিক্ষা করতে বারণ করে ,কি প্লান তোর মাথায় আসছে না কিছু ‘বলে মাথা চুলকে সুকান্ত থামতেই শান্ত গলায় অয়ন বললো, বলছি দাঁড়া বলে আর একটান দিয়ে সিগারেটের আগুন জুতোয় নিভিয়ে বসলো।
“তেমন বিরাট কিছু ভাবিনি রে-পাড়ার একটা হোটেলে বলে দিয়েছি ওরা এলে যেন যত্ন করে খাওয়ায়,তাচ্ছিল্য না করে ,খাবারের বিল মেটাবো আমি । দেখলাম চল্লিশ টাকা করে মিল হিসাবে পাঁচ জনের দুবেলার খাবারের দায়িত্ব নেবার আটশো টাকা হাত খরচায় জমেছে আমার”।
কি দারুন ভাবনা রে বন্ধু!এত সুন্দর করে কজন ভাবে বল!আমরা সবাই একটু দায়িত্ব ভাগ করে নিলে এত অভাব থাকে না ওদের পূজার দিনে।
হম রে ভীষণ মানসিক শান্তি। ওদের নির্ভেজাল হাসি আসলে আশীর্বাদ স্বরূপ।অল্প হলেও
দায়িত্ব নিয়ে দেখ ভালো লাগবে। শুধু নিজে ঘুরবো-ঠাকুর দেখবো ,পূজায় আনন্দ,খাবো এসব না করে ওরাও কটা দিন একটু চিন্তা মুক্ত হয়ে ঠাকুর দেখুক।
আমিও রাজি অয়ন। সামান্য টিউশানি করি তাই দুজনের দায়িত্ব নিতেই পারি। পল্টু বলল আমিও নেব।
বাহ,এভাবেই আমার ভাবনা যদি ছড়িয়ে পড়ে, খুশি গুলো বাঁটোয়ারা করতে পারি তবেই আমার শপথের সার্থকতা।তোদেরও খুব ভালো হোক।কথা দিলাম বিবেক পরিশুদ্ধ হয়ে দারুন কাটবে পূজা।