এক অপূর্ণ প্রেমের অপূর্ব কাহিনী
-সমীর হালদার
আঠারোর জিয়নকাঠি তখনও তোমাকে
ঠিক স্পর্শ করতে পারেনি,
সোনালী স্বপ্নগুলো একটু একটু করে
ডানা মেলছিলো উম্মুক্ত নীল আকাশে,
আমার চোখেও তখন একুশের অঙ্গীকার, তোমার স্পর্ধা।
আমার সকালের স্নিগ্ধতা, দুপুরের নির্জনতা
তোমাকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছিল,
তোমাকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছিল আমার সন্ধ্যার একাকিত্ব,
আমার গভীর রাতের অনুভূতিগুলো।
সে ছিল এক আশ্চর্য অপূর্ব অনুভুতি
যা ব্যাখ্যার অতীত
যেখানে আমার মুক্ত ভাবনা গুলো ডানা মেলেছিল,
সোনালী স্বপ্নগুলো আবর্তিত হয়েছিল তোমাকে ঘিরে
ঠিক যেন তারকার পৃথিবীতে “আমোদের হাতছানি”
উচ্ছল মধুবসন্তের সোনালী বিকেলগুলো
দীপ্ত হয়ে উঠতো ভালোবাসার সুদৃঢ় বন্ধনে।
বৃষ্টিস্নাত শ্রাবনের ধূসর সন্ধ্যাগুলো
উজ্জ্বল হয়ে উঠতো প্রেমের অঙ্গীকারে।
স্বপ্নের মুহূর্তগুলো হয়ে উঠতো আরো আরো স্বপ্নময়।
অতঃপর সময়ের দাবিতে বদলে গেলো মুহূর্তরা
তৈরী হলো নতুন এক মুহূর্ত।
ছকবাঁধা জীবনের বাইরে খুঁজে নিলে নিজের পৃথিবী
ঠিক একেবারে নিজের মতো করে
ডুবে গেলে অনন্ত বিলাসিতায় !
আর
দারিদ্র্যের সমুদ্রে নিমজ্জিত হতে হতে… আমার
ঐকান্তিক ইচ্ছাগুলো একটু একটু করে হারিয়ে গেলো
অতল গহ্বরের অনন্ত শূন্যতায়।
এখন তোমার অন্য জগৎ, অন্য পৃথিবী
তোমার পৃথিবীর আকাশ অনন্ত জোৎসনায় পরিপূর্ণ
আমার পৃথিবী আজ বিষাদের কালো মেঘে ঢাকা।
তবু আবার যদি কখনো দেখা হয়
আগাগোড়া কবিতায় রাঙা
লাল মাটির ওই শিমুল পলাশের দেশে
তবে সেদিন তোমার
আবেগের শুক্ষ পাতায় আমি ভালোবাসার কান্না ভিক্ষা করবো না
সোনালী ঐতিহ্যের দুর্লভ মুহূর্তরা আর ফিরবেনা জানি,
না ফিরুক
শুধু ঐকান্তিক অনুরোধ,
সেদিন তোমার মায়াবী কণ্ঠে আরো একটি বার
আমার প্রিয় কবি সুকান্ত’র ‘প্রিয়তমাসু’ শুনিয়ে দিও,
কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তকে হয়তো ছুঁতে পারা যাবে
যা হবে আমার অন্তিম যাত্রার একমাত্র সহচর
শেষ হবে সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার সেলোফেনে মোড়া
অপূর্ণ প্রেমের এক অপূর্ব কাহিনী!