
গল্প- খাদের অতি নিকটে
গল্প-
খাদের অতি নিকটে
-সুনির্মল বসু
ট্রান্সফার অর্ডারটা এসেছিল গত সপ্তাহে। কলকাতার অফিস থেকে যখন ওকে ব্যাঙ্গালোর পাঠাবার আদেশ এসেছিল, তখন মহুলের খুব মন খারাপ হয়েছিল। অথচ, হাতে অন্য কোনো অপশন ছিল না। বাবা-মাকে ছেড়ে প্রিয় শহর ছেড়ে যেতে মহুলের মোটেই ভালো লাগছিল না।
ও একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার।
পরে এমবিএ করেছে।
বিকেলে গড়িয়াহাট মোড়ে দিতির সঙ্গে দেখা। ওদের মধ্যে বছর পাঁচেকের সম্পর্ক। শুনে দিতির খুব মন খারাপ।
-কিছু একটা করা যায় না?
-কি করব?
-তুমি তোমার প্রবলেমের কথা জানিয়েছো?
-হু। কিন্তু কোম্পানী শুনবে না।
-তুমি ওনাদের বুঝিয়ে বলো।
-কিছু করার নেই। চাকরিটা ট্রান্সফাররেবল
-এবার কি হবে?
-মন খারাপ কোরো না। প্রতিদিন ফোনে কথা হবে।
-আমার বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে।
-তুমি বুঝিয়ে বলো। আমি একটু গুছিয়ে নিই।
-বাবা পুরোনো আমলের মানুষ। কড়া ধাঁচের।
-এক্ষুনি আমি তো কোন উপায় দেখছি না।
-কবে যাবে?
-সোমবার সন্ধে ছটা চল্লিশে ফ্লাইট। ভালো থেকো।
-নিজের খেয়াল রেখো।
সেদিন অনেক রাতে নতুন কর্মস্থলে পৌঁছল মহুল। মাকে পৌঁছানোর সংবাদ দেবার পর, দিতিকে ফোন করল- ভালো ভাবে পৌঁছে গেছি। তুমি ঠিক আছো তো?
-হ্যাঁ। আজ তোমার বন্ধু শুভমদার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, তোমার কথা জিজ্ঞেস করছিল। বললাম- তোমার অফিস তোমাকে বদলি করে পাঠিয়েছে।
-শুভমদা বলল, চলো, কফি হাউসের ঢুকি। গেলাম।
-ভালো।
শুভমদা একটা সিরিয়ালে চান্স পেয়েছে। আমায় বলল- টি স্টেটের চাকরিটা ও ছেড়ে দেবে।
-তাই নাকি?
-হ্যাঁ। তুমি এখন কি করছো?
-সবে তো এলাম। ঘর গোছাচ্ছি। সময় লাগবে।
-পেরে যাবে ঠিক।
-পারতেই হবে।
-তাহলে ছাড়ছি। পরে কথা হবে। টা টা।
পরদিন সকালে ঘুম ভাঙতে দেরি হয়ে গেল মহুলের। জানালার সার্সির ভেতর থেকে দেখলো,:দূরে ঘুম ঘুম পাহাড়। হালকা মেঘ আকাশে ভেসে যাচ্ছে।
শহরটা সুন্দর করে সাজানো। বাড়ির বাইরে অজস্র ফুলের মেলা বসেছে যেন। তিন তলার উপরে ওর ঘর। সুন্দর বাথরুম। সামনে ঝুল বারান্দা। ঝুল বারান্দার পাশে, পাখিদের থাকবার ঘর। কত রকম পাখি সারাক্ষণ এখানে কিচিরমিচির করে চলেছে।
মহুল একটা সিগারেট ধরানো। বাইরে ঝুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখলো, নিচের রাস্তায় অজস্র যানবাহন চলাফেরা করছে।
কাজের মেয়েটি এলো। ঘর পরিষ্কার করলো। তারপর জিজ্ঞেস করল- নাস্তা কিয়া?
-নেহী।
-মেয়েটি চা নাস্তা রেডি করে দিল। বলল, ওর নাম
জানকী।
ও চলে যাবার পর, মহুল হোম ডেলিভারির জন্য ফোনে যোগাযোগ করলো। আপাতত কিছুদিন এভাবেই চালিয়ে নিতে হবে। পরে অন্য যা হোক একটা ব্যবস্থা করতে হবে।
পরে ল্যাপটপ নিয়ে ঘরে বসেই অফিসের কাজ শুরু করলো। কোম্পানী আগামী সপ্তাহে ওর জন্য একটা গাড়ি স্যাংশন করেছে। দুদিন বাদে ও কাজে জয়েন করলো।
রাতের দিকে কলকাতা থেকে দিতির ফোন এলো।
-কি খবর?
-ঠিক আছি। তবে গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে।
-আজ আমি তপন থিয়েটারে নাটক দেখতে গিয়েছিলাম।
-বাহ, খুব ভালো কথা।
-আরে, শুভমদার শো ছিল। আমাকে নিয়ে গেল। বলল, তুমি সঙ্গে থাকো। আমি ভরসা পাই।
-তোমার ভালো লেগেছে?
-হ্যাঁ। লোকটা কিন্তু খুব গুণী মানুষ।
-তাই।
-ওর সিরিয়ালটাও ভালো চলছে।
-ওকে আমাকে ফোন করতে বোলো।
বলবো। কাজের পরে কিভাবে তোমার সময় কাটছে?
-এখানে কলকাতার মতো পথে-ঘাটে ভিড় নেই। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাস্তাঘাট। খুব সাজানো এই শহরটা।
-তাই নাকি!
-আমি তো লিখতে পারি না। কিন্তু লিখতে পারলে, দূরের পাহাড়ের বর্ণনা দিতাম।
-কাল তুমি আমায় ফোন করবে।
-ঠিক আছে। ভালো থেকো।
-তুমিও।
মহুল কোম্পানী থেকে হ্যারিয়ার গাড়ি পেয়েছে। কোম্পানী ওকে ড্রাইভার দিতে চেয়েছিল, নেয় নি। নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে অফিসে যায়।
কখনো আবার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শনে যায়।
রাতের দিকে মহুল দিতিকে ফোন করে, -হ্যালো! আজ কোম্পানী থেকে গাড়ি দিয়েছে। তোমাকে ছবি পাঠাচ্ছি।
-দেখে কি করবো? এই শহরে না এলে, চড়া হবে না। কই দেখি?
-তোমার পছন্দ হয়েছে?
-খুব সুন্দর।
-তোমার কথা বলো।
-ঠিক আছি। শুভমদা মন্দারমনিতে যাবার জন্য বলছে।
-তুমি কি বললে?
-আমি কিছু বলিনি। বাড়ি থেকে পারমিশন নিতে হবে।
-তারপর?
-দমদম থেকে এক পাত্রপক্ষ আমাকে দেখে গেছে।
-তুমি আমাদের ভালোবাসার কথা বাবা মা’কে বলোনি?
-না। তুমি কবে কলকাতায় ফিরবে?
-সবে তো এলাম।
-আজ ছাড়ছি। ভালো থেকো।
মহুল মাঝখানে অফিসের কাজ নিয়ে রায়পুরে গিয়েছিল। তিন দিনের জন্য ব্যাঙ্গালোরে থেকে ও আবার নাগপুরে চলে যায়।
ইতিমধ্যে দিতির ফোন আসেনি। কাজের ব্যস্ততায় মহুল ওকে ফোন করবার সুযোগ পায়নি।
গত বুধবার রাতের দিকে শুভম ফোন করেছিল।
-হ্যাঁরে, কেমন আছিস?
-ভালো।
-তুই কি চাকরি ছেড়ে দিলি?
-হ্যাঁ। স্টেজে, সিরিয়ালে কাজ করছি। দুটো সিনেমায় কাজের অফার এসেছে।
-খুব ভালো কথা। দিতি তোর অভিনয়ের প্রশংসা করছিল।
-তাই বুঝি?
হ্যাঁ। তুই ওকে তপন থিয়েটারে নিয়েগেছিলি, আমাকে বলেছে।
-আসলে কি জানিস, ও অভিনয়টা বোঝে।
-ভালো কথা।
-তাহলে ছাড়ছি।
-ভালো থাকিস।
হ্যারিয়ার গাড়ি চালিয়ে মহুল অফিস থেকে ফিরছিল। রাতে শহরটা এত মায়াময় লাগে। মন ভালো হয়ে যায়। অফিসে খুব খাটাখাটনি গেছে।
মহুল একটা পাও ভাজির দোকানের কাছে গাড়িটা দাঁড় করালো। তারপর পথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটা আইসক্রিমের দোকান থেকে কুলফি মালাই কিনলো।
সবে খেতে যাবে, এমন সময় একটা মেয়েরই কন্ঠস্বর ভেসে এলো- অ্যাই মহুল, আমি সুপ্রিয়া বলছি, তাকিয়ে দ্যাখ্।
মহুল বলল- তুই এখানে?
-আমি তো এখানেই চাকরি করি।
মহুল ওর জন্য একটা কুলফি মালাই নিল। বলল- খেয়ে দ্যাখ্। ভালো লাগবে।
সুপ্রিয়া খুশিমনে কুলফি মালাইতে কামড় বসালো।
মহুল জিজ্ঞেস করল- এখানে একাই আছিস?
-হ্যাঁ। এদিক-ওদিক বেড়াতে যাস না?
-মাঝে মাঝে। সিরডির সাঁই বাবার ওখানে দুবার গিয়েছি। ত্র্যয়ম্বকেশ্বর মন্দিরে একবার।
-তুই কোথায় উঠেছিস?
-কোম্পানীর দেওয়া ফ্ল্যাটে। আসিস একদিন।
-যাবো। যাক, একজন কথা বলার মানুষ পাওয়া গেল।
মহুল হেসে ফেলল। বলল- আমারও।
-কি করে সময় কাটাস?
বই পড়ে। তুই?
-লেখালেখি করি।
-তাই নাকি?
-তোর এই গুনটার কথা আগে জানতাম না তো!
-কি করব, সময় কাটাবার জন্য।
-তোর লেখা পড়তে চাই।
-আগামী সপ্তাহে আসবো। তখন তোর জন্য কবিতার বই নিয়ে যাবো।
-ওয়েলকাম।
-থ্যাঙ্ক ইউ। চলি রে।
অনেকদিন হয়ে গেল, দিতির কোন খবর নেই। মহুল ভেবে দ্যাখে, ওর স্বভাব ঠিক উল্টো। প্রতিদিন ও দিতিকে মনে করে যায়। দিতি এ কদিনে সব ভুলে গেল? আউট অফ সাইট,আউট অফ মাইন্ড।
সেদিন অফিসে হঠাৎ কলকাতা থেকে একটা ফোন এলো। আয়নাংশুর ফোন। ও হেয়ার স্কুলে একসঙ্গে ছোটবেলায় ওর সঙ্গে পড়তো।
-কেমন আছিস?
-ভালো।
-এখন অফিসে?
-হ্যাঁ।
-চাপে আছিস?
-সেভাবে নয়।
-একটা কথা বলি, দিতির সঙ্গে তোর রিলেশন ঠিক আছে?
-কেন?
-ইদানিং শুভমের সঙ্গে ওর মাখামাখি সম্পর্ক নিয়ে চারদিকে চর্চা চলছে। বন্ধু হিসেবে তোকে জানালাম।
-ঠিক আছে।
দুই সপ্তাহ বাদে অফিসে বেয়ারা একটা বিয়ের কার্ড দিয়ে গেল। প্রজাপতি আঁকা ছবি। সাত পাঁকে বাঁধা।
মহুল ভাবলো- দিতি আমার সঙ্গে এমনটা করতে পারলো? বালিগঞ্জ লেক, মেনোকা হলে সিনেমা দেখা, আশুতোষ কলেজের রাস্তায় দাঁড়িয়ে সন্ধ্যা বেলায় ফুচকা খাওয়া, গভীর রাতে নিয়ন আলোর নিচে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফেরা। সব মিথ্যে, সবটাই অভিনয়। কিন্তু শুভম। ওর বন্ধু হিসেবে এটা কি করলো?
বিশ্বাস না থাকলে, মানুষ পৃথিবীতে কি নিয়ে বাঁচবে? দিতি একদিন বলেছিল, তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। এর চেয়ে বড় মিথ্যে কথা আর কিছু হতে পারে না।
মহুল ভাবলো, জীবনটাকে আমি একটা আর্ট গ্যালারি বানাতে চেয়েছিলাম। ওরা তাতে কালি ছিটিয়ে দিল।
অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠেই, মহুল বিশ্রী ভাবে গাড়ি চালানো শুরু করলো।
তিনটে ক্রসিং পেরোতেই, সুপ্রিয়া ওকে গাড়ি থামাবার জন্য হাত দেখালো।
-কিভাবে গাড়ি চালাচ্ছিস তুই?
-কেন?
-এভাবে রাফ ড্রাইভিং কি ঠিক হচ্ছে?
ভালো লাগছে না।
-চল্, তোর সঙ্গে যাবো।
-কোথায়?
-কোথায় আবার! তোর বাড়ি।
সুপ্রিয়া গাড়িতে উঠে বসলো।
-আস্তে চালাবি। অফিসে ঝামেলা বাঁধিয়েছিস?
-না তো।
-তাহলে? কিরে চুপ করে আছিস কেন?
-মন ভালো নেই।
-হতেই পারে। তা বলে এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাবি? কিছু বল, কথা বলছিস না কেন?
-বিশ্বাস শব্দের কোন দাম নেই।
-কে বলেছে?
-আজ আমি জানতে পারলাম।
-সহজ করে বল। আমি তোর মতিগতি বুঝতে পারছি না। আমার ভালো ঠেকছে না। কি হয়েছে তোর? আমাকে বলা যাবে না?
মহুল ফ্ল্যাটের নিচে পৌঁছে গেছে। গাড়ি গ্যারেজ করে বলল- উপরে আয়।
ওরা উপরে এলো।
সুপ্রিয়া বলল+ তোর কিচেন টা দেখা।
ডান হাত উঁচু করে মহল দেখিয়ে দিল।
সুপ্রিয়া চা করল। তারপর ফ্রিজ থেকে মিষ্টি বের করে মাইক্রোওভেনে গরম করল।
সামনে খাবার রেখে বলল, খেতে খেতে তোর কথা শুনবো।
মহুলের মাথাটা তখন টেবিলের উপর ঝুঁকে পড়েছে।
বলল- কষ্ট হচ্ছে।
-আমাকে বল।
-সব কষ্টের কথা সবসময় বলা যায় না।
-তুই তাহলে আমাকে বন্ধু মনে করিস না?
মহুল চুপ করে রইল।
-কি বলবি না তো! ঠিক আছে। আমি যখন তোর বন্ধু নই, তাহলে এখানে আছি কেন? আমার চা খাওয়া হয়ে গেছে। আমি চলে যাচ্ছি। তোর সঙ্গে আমার আর কোন সম্পর্ক থাকলো না।
-সুপ্রিয়া, শোন। চলে যাস না। আমি বলব, সব কথা তোকে বলবো।
সুপ্রিয়া ফিরে আসে। মুখোমুখি বসে।
মহুল বলে- দিতিকে আমি ভালবাসতাম। পাঁচ বছরের সম্পর্ক। আমি চলে আসার পর আমারই এক বন্ধুকে ও বিয়ে করছে। এই যে বিয়ের কার্ড।
সুপ্রিয়া চুপ করে শুনলো।
বলল- ও আসলে বেটার খুঁজছিল। তুই ওকে ভালবাসতিস। ও তোকে ঠকিয়েছে, তুই তো ঠকাসনি। তাহলে?
মহুল একটা সিগারেট ধরালো। বলল, যে ভালোবাসার আয়নায় মুখ দেখেছিলাম, ওরা সেটা ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিল।
সুপ্রিয়া বলল- এটা এখন ঘটেছে, ভালো। পরে ঘটলে কি হতো?
-জানিনা। কোনদিন ভেবে দেখিনি।
-আমি একটা কথা বলবো?
-বলতে পারিস।
-জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না।
-মানে?
-আমি যদি বলি, মহুল, আমি তোকে ভালবাসি। তুই বিশ্বাস করবি?
-আমার জীবন থেকে বিশ্বাস শব্দটা চলে গেছে।
-আমি তোকে সব ফিরিয়ে দেবো।
-কি?
যা যা তুই জীবন থেকে হারিয়েছিস।
-আমার জন্য কেন তুই এসব করতে যাবি?
-ভালোবাসার কাদায় তোর পা ডুবে গেছে, আমি তোকে সত্যিকার ভালোবাসা ফিরিয়ে দেবো।
-কেন ?কেন? কেন?
কোন ভালো মানুষের কখনো দুঃখী মানুষ হওয়া চলে না।
সুপ্রিয়া মহুলের পিঠের উপর হাত রাখলো।
তারপর ধীরে ধীরে বলল-আয়, নতুন করে শুরু করি। ভালোবাসা পাওয়া ঈশ্বরের আশীর্বাদের মতো। সবার সেটা নেবার ক্ষমতা, দেবার ক্ষমতা থাকে না।
মহুলের মনে হল, ঈশ্বর আছেন।
একদিন যে সত্যিকারের বন্ধু ছিল, সে এসে তার বিশ্বাসের হাতখানি, ভালোবাসার হাতখানি বাড়িয়ে দিয়েছে।
সহসা ওর মনে হলো, পাহাড়ের খাদের কাছে দাঁড়িয়ে আজ সুপ্রিয়া ওকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছে। ওরা বাইরে বেরিয়ে এলো। তখন অনেক রাত। ফুল বাগানে কুয়াশা আর শিশির পড়ছে।
গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে হাত রেখে মহুল বললো- চল, তোকে বাড়িতে পৌঁছে দিই।
সুপ্রিয়া তখন মহুলের কোলের উপর ডান হাতটা বাড়িয়ে দিল।
মহুলের বাঁ হাতের উপর হাত রেখে বলল- এই হাত আমি কোনদিন ছাড়বো না। কোনদিন না।

