স্নেহের দায় -রীণা চ্যাটার্জী “বৌদি মাংসটা দারুণ হয়েছে গো, আরো এক পিস দাও তো, আর কিছুটা ভাত…” মাতৃসমা বৌদির কাছে আব্দারে অভ্যস্ত দেব থালায় হাত রেখে খেতে খেতে খুব স্বাভাবিক ভাবে বলে ওঠে। অলকা খানিকটা স্বভাব বিরুদ্ধ কণ্ঠে বলে ওঠে, “তাই! ভালো হয়েছে বুঝি! তা ভালোলাগার জিনিস ভালো করে, বেশী করে খেতে গেলে খরচ হয় […]
মূল্য মাঝে জীবনবোধ -রীণা চ্যাটার্জী “নক্ষত্রখচিত কালো আকাশে মুখ তুলিয়া বলিল, আল্লা! আমাকে যত খুশি সাজা দিয়ো, কিন্তু মহেশ আমার তেষ্টা নিয়ে মরেচে। তরে চরে খাবার এতটুকু জমি কেউ রাখে নি। যে তোমার দেওয়া মাঠের ঘাস, তোমার দেওয়া তেষ্টার জল তাকে খেতে দেয় নি, তার কসুর তুমি যেন কখনো মাপ ক’রো না।” (“মহেশ”- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)খুব […]
ভস্ম ওড়ানো ছাই -রীণা চ্যাটার্জী হাতে ভরসার হাত রেখে, সব স্মৃতি ফেলে রেখে সাঁঝের প্রদীপখানি যুগল মনের দুয়ারে রেখে হারাবো, একদিন তোমার সাথেই হারিয়ে যাবো রাত- দিন সব কিছু তোমাকে ছুঁয়েই মাখবো। বেঁধে নেব গান তোমারই মনের মতো সুরে মিশে যাবে পথ, ঠিকানা হারানো বহু দূরে। যে বাঁশী শুনেছে গোপন কথা, তাকে রেখে হাতে পায়ে […]
জন্মাবে আবার… প্রয়োজনে বারবার -রীণা চ্যাটার্জী …, ভাবতেও লজ্জা লাগছে আপাত নিরীহ একটা বুলি, জয়ধ্বনি লেগে কেমন করে যে ‘গালাগালি’ হয়ে গেল! তা নাহয় তর্ক ধর্মের কারণে মেনে নিলাম “হলো”, কিন্তু তার প্রতিবাদ এতো অশালীন! এতো দাম্ভিক! প্রতিশোধ এতো কুরুচিপূর্ণ ব্যবহারে! আমাদের সংবিধান আমাদের হাতে গোনা যে কয়টি মৌলিক অধিকার দিয়েছে, তার মধ্যে বাক্ স্বাধীনতা […]
পদাতিক -রীণা চ্যাটার্জী নীরব মিছিল হোক সবার মনের ভেতর শব্দরা নিজে খুঁজে নিক পথ অভয়ারণ্য’র সাধনা থাকবে, সাধে ভরা সেই সমাজের যে সমাজ ভয়ে কণ্ঠরোধ করে না কলমের। নীরব সেই শব্দ-মিছিলে হয়ে যাব সাথী তুলে নেব বিবেক পুঁথির, যুক্তির সব নথি, থাকবে না বাদ- বিবাদের অস্থির হুঙ্কার বিবেচনা ভরা প্রগতির হাত রাখবে অঙ্গীকার। সিংহাসনের লোভ […]
গ্লানির খোলা পাতা -রীণা চ্যাটার্জী সুধী, হতবাক মনের কলম আঁচড় কাটতে পারছে না আর। শুধু ভাবছি আর কতো? আরো কতো? শালীনতা বোধ কি আমাদের হারিয়ে গেছে? নাকি পরিভাষা বদলে গেছে। আঙুল তুলে দোষারোপ আমাদের কাছে এক অতি সহজ পন্থা- সব দায় এড়ানোর জন্য। গত ১৪ই মে ঘটে যাওয়া হিংসাত্মক পরিস্থিতির মাঝে বাঙালীর ঈশ্বর ( বিদ্যাসাগর) […]
আদি আহ্বানে -রীণা চ্যাটার্জী মহাকালের গর্ভে লুকিয়ে থাকা যতো মত খুঁজে ফেরে পথ… তিমির বরণ করে নেয় গভীরে, আরো গভীরে রক্তনদীর ধারায়। স্রোতে ভেসে যায় সব…রুধিরা স্রোতস্বিনী পলি নয়, তলিয়ে যায় শুধু বৃথা অহঙ্কারের পুতিগন্ধময় কিছু নির্লজ্জ, কপট অনাচার। কথার বেড়াজাল পেরিয়ে শব্দের মাল্যদানে ভালোবাসার ঘর বাঁধার সাধ, দিকচক্রবালে লুন্ঠিত হয়ে গেছে অজান্তে হঠাৎ ঘুর্ণিঝড়ে! […]
লহ প্রণাম -রীণা চ্যাটার্জী শ্রদ্ধেয় গুরুদেব, শুভ জন্মদিবসের হৃদয়ের সশ্রদ্ধ প্রণাম নিও গুরুদেব। অনেকটা ব্যস্ততা, আর আলস্যের মাঝে আবার বাঙ্গালীর পূণ্য লগন। প্রভাত ফেরি, রবীন্দ্র সঙ্গীতের মূর্ছনায় সাজো সাজো রব। আজ পঁচিশে বৈশাখ- তোমার শুভ জন্মদিবস। অনেক স্মৃতিচারণা, অনেক শ্রদ্ধা, অনেক প্রণাম, মালা, শ্রদ্ধার্ঘ্যর ভিড়ে তুমি আজ। তুমি প্রণম্য, তুমি বাঙ্গালীর বুলি, তোমার মাঝে ‘সহজ […]
আমার জন্য রেখো -রীণা চ্যাটার্জী সাঁঝ বেলাটা আমার জন্য রেখো মাতাল সুরে আমায় তুমি ডেকো, চমকে উঠে তাকাবো যখন ফিরে বাহুপাশে সোহাগে রেখো ঘিরে। নিশি রাতটুকু আমার জন্য রেখো বাঁশির সুরে মিলন বার্তা লিখো, আধ-ঘুমে খুঁজবো যখন তোমায় হৃদ মাঝারে মিলিয়ে নিও আমায়। প্রভাতী আলো আমার জন্য রেখো বাউল সুরে ভালোবাসা তুমি থেকো, প্রেমের জোয়ারে […]
ফিরে এসো জবালা -রীণা চ্যাটার্জী সাহসিনী, অচেনা, বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাওয়া, ভুলে যাওয়া একটা নাম তুমি। পরিচয়! তুমি নারী, তুমি দেহপসারিনী, তূমি উচ্ছৃঙ্খল, তুমি বহুভোগ্যা, তুমি দাসী। তথাকথিত বর্ণপ্রথার ধারাবাহিকতায় বিশ্বাসী সমাজের ঘৃণিত, নীচু শ্রেণীর একজন তুমি– জবালা তোমার নাম। তোমার আর এক পরিচয়, তুমি মা- ‘সত্যকামের মা’। তোমার সন্তান উপাধিধারী, বংশ পরিচয়ের বৃথা অহঙ্কারের […]
