অণু গল্প

  • অণু গল্প

    অণু গল্প- গরম চা

    গরম চা
    – অঞ্জনা গোড়িয়া

    ঠকঠক করে কাঁপছে। প্রচন্ড শীত। চারিদিক কুয়াশায় ঘেরা। রাজার সকালে স্কুল। কিছুতেই খাবে না। হর্লিক্সের গ্লাস নিয়ে ছুটোছুটি করছে মা। লক্ষ্মী সোনা ছেলে। এইটুকু চুমুক দিলেই তুমি যা চাইব দেব। স্কুলের দেরী হয়ে যাবে সোনা, খেয়ে নাও। রাজা হরলিক্স খেতে পছন্দই করে না। মা ও শুনবে না! এই শীতে এটুকু না খেলে হয় সোনা?

    পাশের ঘরের শুয়ে বৃদ্ধ ঠাকুরদা। এখন অবশ্য গ্যান্ডপা বা দাদুই বলে সবাই। রাজা অবশ্য দাদুই বলে।
    শতছিন্ন একটা সোয়টার গায়ে। কোনক্রমে মুখটা বাড়িয়ে বলল, বৌমা,একটু গরম চা দেবে? বড্ড শীত আজ।
    রাজার মা, মুখ খিঁচিয়ে বলে উঠল, দেখছেন রাজাকে খাওয়াতে পাচ্ছি না। স্কুলে যাওয়ার দেরী হয়ে যাচ্ছে। এখনি চা খাওয়ার সখ হল? যত দিন যাচ্ছে তত ভীমরতি হচ্ছে আপনার? চুপ করে শুয়ে থাকুন। আগে ওকে খাইয়ে, স্কুলে দিয়ে আসি ।

    বৃদ্ধ দাদু, চুপচাপ শুয়ে পড়ল। সারা শরীর তখন কাঁপছে ।
    ছোট্ট রাজা কেমন শান্ত হয়ে গেল। হরলিক্স এর গ্লাসটা হাতে তুলে নিল। দাও মা, খেয়ে নিচ্ছি।
    এবার থেকে রোজ খাব। মায়ের মন খুব খুশি। গ্লাস হাতে নিয়ে দাদুর কাছে এল। এই নাও দাদু তোমার গরম চা। এবার থেকে রোজ সকালে এটাই তোমার চা। 

  • অণু গল্প

    পয়লা এপ্রিল

    পয়লা এপ্রিল
    – রেহানা দেবনাথ

     

    অজয় সকালে ঘুম থেকে উঠতেই ওর বাবা টেবিলের দিকে হাত দেখিয়ে বললো তোর একটা পার্সেল এসেছে,খুলে দেখ।
    অজয় দেখলো গিফ্ট প্যাকেট। আনন্দের সঙ্গে খুলতে লাগলো আর ভাবতে লাগলো কে পাঠিয়েছে। প্যাকেটটা অনেক যত্ন করে খুলে দেখলো তাতে লেখা আছে এপ্রিল ফুল! অজয় ওর বাবার দিকে তাকাতেই ওর বাবা ক্যালেন্ডারের দিকে আঙ্গুল দেখায়।অজয় দেখে আজ পয়লা এপ্রিল।সঙ্গে সঙ্গে ওর বাবা হাসতে শুরু করলো আর বাচ্চাদের মত এপ্রিল ফুল, এপ্রিল ফুল বলে চেঁচাতে লাগলো।

    অজয় অভিমানী সুরে বলে- এখন আমি কত বড় হয়ে গেছি তবুও তুমি আমায় প্রতি বছর এপ্রিল ফুল।তারপর বাবা আর ছেলে মিলে মা বেঁচে থাকাকালীন কিভাবে দু’জনে মিলে মাকে এপ্রিল ফুল করতো সেইসব স্মৃতির রোমন্থন করে।

    অজয় রেডি হয়ে অফিস বেরিয়ে পড়লো।মনে মনে ভাবলো আজ আর কেউ তাকে এপ্রিল ফুল করতে পারবে না।সেই ভাবনাতে ফোনে বন্ধুদের মেসেজ পর্যন্ত দেখল না।

    দুপুরে অজয়ের মোবাইলে হঠাৎ তার বন্ধু শান্তনুর ফোন। ফোন রিসিভ করতেই শান্তনু বলে ওঠে কাকুর শরীর খারাপ তুই তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আয়। অজয় হাসতে হাসতে বলে আমি ভুলিনি আজ পয়লা এপ্রিল! এবছর আর আমাকে বোকা বানাতে পারবি না, কথাটা বলেই ফোন কেটে দেয়!

    কিছুক্ষণ পর আবার জ্যাক এর ফোন আসে আর একই কথা বলে।অজয় এবারেও সেই একই কথা বলে ফোন কেটে দেয়।
    একই ভাবে আরো দুই বন্ধু ফোন করে।অজয় মনে মনে বলে ভাবলো আজ যতই চেষ্টা কর এপ্রিল ফুল করতে পারবি না!
    কিছুক্ষণ আগেই তার বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে খাওয়া দাওয়া সেরে টিভি দেখছে।
    বন্ধুরা মেসেজ পাঠিয়েছে এপ্রিল ফুলের ভয়ে সেগুলোও দেখল না।

    সন্ধ্যা পর বাড়ি ফিরে দেখে ঘর অন্ধকার বাবা ঘরে নেই। বুকটা ছ্যাত করে ওঠে!তাহলে কি ওরা সত্যি বলছিল।

    অজয়ের দু’চোখে জল চলে আসে বাবা ছাড়া সে কিভাবে থাকবে! বাবা এখন কি অবস্থায় আছে? কোথায় আছে? সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে তার মাথাটা ঘুরে যায়।
    এমন সময় পাশের বাড়ির কাকিমা এসে হাতে চাবি দিয়ে বলে তুমি এতক্ষণে এলে তোমায় কতবার সবাই ফোন করলো তুমি এলে না। তোমার বাবা এখন সিটি হাসপাতালে আছে।
    কথাটা শুনেই অজয় বাচ্ছা ছেলের মত হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে বলে বাবার কিছু হবে না তো কাকীমা, বাবা ছাড়া আমার কেউ নেই…
    কাকীমা মাথায় হাত বুলিয়ে বলে তোমার বাবার কিচ্ছু হবে না উনি সুস্থ আছেন, তোমার ছোটো কাকুর হার্ট এট্যাক হয়েছে,হাসপাতালে ভর্তি। তোমার বাবা সেখানে গেছেন।
    কথা শুনে অজয় চোখ চোখ মুছতে মুছতে হাসপাতালের উদ্যেশ্যে রওনা দিল।

  • অণু গল্প

    বিদায় বেলায়

    বিদায় বেলায়
    – অঞ্জনা গোড়িয়া

     

    হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠল ফুলি ‘কাকিমা’।

    দুম করে পড়ে গেল আবির। মুখ দিয়ে রক্ত বেড়িয়ে আসছে । হাতে পায়ে চোখে বিষাদের ছাপ, নিস্তব্ধতা । কে কোথায় আছো জল আনো শীঘ্র? আবির যে অজ্ঞান হয়ে গেছে। ফুলি কাকিমা চেঁচিয়ে উঠতেই প্রিয়ার বুকটা ধকাস্ করে উঠল । আহা রে! ছেলেটা কত মজা করে আবির নিয়ে খেলছিল। হঠাৎ কি হল? বলেই কাঁদতে লাগল কাকিমা। এদিকে কাঁদো কাঁদো হয়ে ছুটে এল প্রিয়া। বন্ধ ঘর থেকে। জলের ছিটে দিল আবিরের চোখে মুখে। মুখটা চেপে ধরল দু’হাতে। ছটপট করে বসে পড়ল আবির। দু’হাতে রাখা লাল আবির ভরিয়ে দিল মাথায় । ভালো করে মাখিয়ে দিল রং প্রিয়ার গালে। সবাই হৈ হৈ করে উঠে হেসে উঠল। প্রিয়া তো ভীষণ রেগে গেল। আবার ছুটে দরজা বন্ধ করে দিল। অনেক বার বারণ করেছে জীবন নিয়ে মজা না করতে। এমন করে কেউ মজা করে? সত্যি ই যদি ওর কিছু হয়? কিছুতেই ক্ষমা করতে পারবে না ওকে। আবির হাসতে হাসতে বলল,”অভিনয় না করলে তোমার অভিমানী মুখটা রাঙাব কেমনে প্রিয়া?”

    প্রিয়া আর কিছুতেই খুলল না দরজা ।

    একই ক্লাসে পড়ত প্রাইমারী স্কুলে। তাই ওর ছোট ছোট মজাগুলির সঙ্গে প্রিয়ার পরিচয় সেই ছোটবেলা থেকে। কথা রাখে নি আবির। আবার এমন শুরু করল।
    আবির গেটের বাইরে থেকে কত করে অনুরোধ করল, একটি বার গেট খুলতে। মিষ্টি মুখটা ভালো করে দেখার জন্য। আর যদি সুযোগ না পায়! কথাটা বলতে গিয়ে থমকে গেল আবির। কিছুতেই জানাবে না প্রিয়াকে। বড্ড ছেলেমানুষী প্রিয়া। সইতে পারবে না যে। মনে মনে বলল, আর জ্বালাতে আসবে না প্রিয়াকে। বিদায় বেলায় একটি বার নয়ন ভরে দেখতে এসে ছিল। দেখা হলো। আবিরের আর কিছু চাওয়ার নেই।

    ফিরে গেল আবির। প্রিয়া জানতেই পারল না ওটা আবিরের অভিনয় ছিল না। ইচ্ছে করেই জানাই নি। ও কি বিশ্বাস করতো রক্তদানের সূচ থেকেই ওর শরীরে বাসা বেঁধেছে এইডসের মতো মারণ রোগ। হয়তো ভাবতো….আবির খারাপ পাড়ায় গিয়েই…তার চেয়ে এই ভাল হল।

  • অণু গল্প

    অশালীনতা

    অশালীনতা
    -রাণা চ্যাটার্জী

     

    “ইস ছ্যা ছ্যা, কি লজ্জা গো দিদি, এই এত্ত বড় দাড়ি গোঁফ বেরোনো ছেলেগুলো কিনা মাধ্যমিক দিচ্ছে, তার ওপর পরীক্ষাকক্ষে গার্ড দিতে গিয়ে কি নোংরা নোংরা কমেন্ট আমাদের দেখে..ইশ কি সব ভাষা! শুনে আমার মাথা, কান গরম হয়ে যাচ্ছে কি বলবো”

    – “সেকিরে টুম্পা,তোর সাথেও এমন কিছু হয়েছে!”

    পাশ থেকে পলি ফুটকি কেটে পড়লো, “আর গরম! আর দু’টো দিন জয় মা বলে কাটলে বাঁচি, যেভাবে যৌনতা মিশিয়ে মন্তব্য ছুঁড়ছে, কাকে কি কথা বলছি সে হুঁশ পর্যন্ত নেই গো!”

    ঈশিতা টানা গার্ড দিয়ে চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিচ্ছিল, এসে বললো, “জানো আজ কি হয়েছে, বাপরে, লজ্জায় মরি আমি! একটা ছেলে অনেকক্ষণ টুকলি করছে দেখে, খুব রাগ ধরতেই সামনে গিয়ে বললাম- কি হচ্ছে এসব? বলে কি জানো?” সকলের কৌতূহলী মুখ উপলব্ধি করে ঈশিতা বলতে লাগলো,”আমায় ড্যাব ড্যাব চোখে যেন গিলতে আসা চোখে বলে কিনা- ভাবছি সামনেরটা দেখে লিখব না পেছনটা!” ইশ কি মুখের ভাষা গো, তা বলে দিদিমনিদের সাথেও নোংরামি! নিবেদিতা গার্লসে মাধ্যমিকে আশে পাশের দু’টো মার্কামারা বয়েজ স্কুলের সিট পড়েছে, বুঝতে নিশ্চয় অসুবিধা হচ্ছে না, সেই প্রসঙ্গে এই সব কথার অবতারনা।

    পল্লবী ম্যাম ও ততক্ষণে পরীক্ষা শেষ করে, আলোচনায় যোগ দিতে দৌড়ে এসে বললো, “জানো কাল করিডোরে দু’জন ছাত্র নিজের মধ্যে কি কথা বলতে বলতে যাচ্ছে,”শালা, গার্লস স্কুলে কতগুলো সেক্সি মাল রয়েছে দেখেছিস!” আর একজন প্রত্যুত্তরে কি বিশ্রী গালি দিয়ে বলে কিনা, “পাশ তো করবো না,সামনের বছর আবার আসবো এখানে দেখিস শা..!”

    সকলের বড় শোভাদি কিছু বলতে যাচ্ছিল, হেড দিদিমনির দায়িত্বে থাকা অপরুপাদি বয়েস স্কুলে ফোন করে অনুরোধ করলেন কাল থেকে যেন দু’ তিন জন বয়েজ টিচার এই নিবেদিতা গার্লসে গার্ড দিতে আসে।

    গতকাল পরীক্ষা নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় ভিড় বাসেও টুম্পা, পলি, ঈশিতারা খুব বাজে ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। সকলেই বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও পরীক্ষা দিতে আসা উশৃঙ্খল ছাত্রগুলো ঠেলাঠেলি আর কি সব কটূক্তি!আজকাল যা দিনকাল, প্রতিবাদ করবে কি, কখন একা পেয়ে অঘটন ঘটাবে এই আশঙ্কায় দিন কাটানো- বোবা কালার শত্রু নেই আচরণে।

  • অণু গল্প

    আনন্দ

    আনন্দ
    – সঞ্জয় গায়েন

     

    যে শুনছে সেই বলছে, ছিঃ! বাপ হয়ে নিজের একমাত্র ছেলের জন্য ওই কটা টাকা খরচ করতে রাজী হচ্ছে না! জানতাম, রাধানাথ সাঁতরা কৃপণ। কিন্তু এ তো দেখছি, কসাই! কি করবি টাকা রেখে দিয়ে? নিজের ছেলের শেষ যাত্রায়… খরচ করতে কেউ ভাবে নাকি! আরে বাবা, যাদের যেটা প্রাপ্য দিতে তো হবেই। দেশের নিয়ম মেনে না চলে উপায় আছে ? তাছাড়া সবাই যেটা মেনে নেয় তুমি সেটা মানবে না কেন? প্রতিবাদ! কিসের প্রতিবাদ? সকলে তো রাধানাথের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে এখন। আহাঃ বেচারা ছেলেটা! অ্যাক্সিডেন্টে মরেও শান্তি পেল না! ওই নিষ্ঠুর বাপটার জন্য। আচ্ছা, পুলিশ কি এমন দোষ করেছে শুনি? রাস্তাঘাটে বেপরোয়া বাইক চালিয়ে মরার বেলা হুঁশ ছিল না? ঝামেলা এড়াতে পুলিশ বডি আটকে হাজার কুড়ি টাকা নিয়ে রফা করতে চেয়েছিল। তা উনি দেবেন না। বলে, আইন মেনে বডি নিয়ে যাব। শোনো কথা। আইনের মারপ্যাঁচ কতটুকু বোঝে? তবু, পুলিশকে ভাল বলতে হয়। টাকা না পেয়েও বডি পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠিয়েছিল।
    মর্গে গিয়েও রাধানাথা ঝামেলা জুড়ে দিল। কাটাছেঁড়া বিনা পয়সায় করে দিল। কিন্তু সেলাই করতে হাজার আষ্টেক আর বডিটা গাড়িতে তুলে দেওয়ার জন্য হাজার দুয়েক… মাত্র দশহাজার তাও তর্কাতর্কির জন্য হাজারখানেক কমিয়েছিল। কিন্তু ওনার এক গোঁ। সরকারী নিয়মের বাইরে একটাকাও বেশি দেবে না! ভাবতে পারছ? মাত্র ওই কটা টাকার জন্য ছেলেটা কাটা লাশ হয়ে মর্গে পড়ে! তি-ই-ন দিন। আর একটা তো বলাই হয় নি। বরফ। সামান্য দুহাজার টাকা। দিল না। বরফের অভাবে ছেলেটা পচে গেল। শুনলাম, পুলিশও নাকি বলেছে, দেখি কত ক্ষমতা! টাকা ছাড়া লাশ নিয়ে যায় কি করে!
    তবে এসবের চেয়েও, আশ্চর্যের কথা কি জান? একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে চোখে একফোঁটা জল নেই! কী পাষাণ্ড! ভাবতে পারছ? নাঃ নাঃ! পাথর হতে যাবে কেন? গভীর শোকের চিহ্ন থাকলে ঠিক চোখে পড়ত। থাক, এবার যখের ধন আগলে। বলি ভোগ করবে কে?
    তারপর কি হল?
    দূর, দূর, কে রোজ রোজ কাজ কামাই করে খোঁজ নিতে যাবে। তবে কি আর হবে? নিশ্চয় শেষমেষ গোপনে কিছু একটা রফা করে নিয়েছিল। বড়লোকদের ব্যাপার। সব কি আর জানা সম্ভব!
    ইচ্ছে থাকলেই জানা যায়। এই যেমন আমি। শহরে থেকেও রাধানাথবাবুর সব খবর জানি। আপনি যা বললেন তার শেষটুকু আমি বলি শুনুন। উনি সমস্ত ঘটনার বিবরণ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কে চিঠি দিয়েছিলেন। তারপর হোম সেক্রেটারির তত্ত্বাবধানে সম্পূর্ণ বিনা খরচে উনি ছেলে কে পেয়েছিলেন। আর ওই কৃপণ লোকটা নিজের দোতলা বাড়ি সরকারকে লিখে দিয়েছেন। আপনাদের গ্রামে হাইস্কুল করার জন্য। আমি এসেছি সবকিছু সরজমিনে দেখতে। স্কুলের নাম কি হবে শুনবেন? আনন্দ শিক্ষা নিকেতন। ওঁর একমাত্র ছেলের নামে।

  • অণু গল্প

    বসন্ত এসে গেছে

    বসন্ত এসে গেছে
    – অঞ্জনা গোড়িয়া

    জয়ন্ত বাবু ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিল, বসন্ত এসে গেছে, সঙ্গে বাসন্তী। স্ট্যাটাসটা পড়েই বিদেশ থেকে ছেলে, বউ, মেয়ে জামাই একপ্রকার ধমকের সুরেই ম্যাসেজ দিল- এই বয়সে কি শুরু করেছ বাবা ?

    জয়ন্ত বাবু একগাল স্মাইল এঁকে বুঝিয়ে দিল খুব ভালো আছি। জয়ন্তবাবুর একাকীত্বের মাঝে বাসন্তীর আগমনে প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে জয়ন্তবাবুর জীবন। লোকে ছি ছি করতে থাকে, এই বয়সে জয়ন্তবাবু প্রেমে পড়ল! মানসম্মান বলে কিছুই রইল না। কাউকে পরোয়া করল না। সত্তর অতিক্রান্ত জয়ন্তবাবু সত্যিই বড় একা হয়ে গিয়েছিল। একান্নবর্তী পরিবারের মাথা ছিল যে, সেই মাটিতে লুটায়। একজন রিটায়ার পুলিশ অফিসার। একসময় চোর ডাকাত গুন্ডা এর নামে ভয়ে কাঁপত। সেই জয়ন্তবাবুকে নিঃসঙ্গতা গ্রাস করেছিল। আগে এই বাড়িতে বাবা, মা, বউ, দুই ছেলেমেয়ে থাকত। একেবারে সুখের হাট ছিল। চিরকাল তো একরকম থাকে না। একে একে চলে গেল সবাই। ছেলে মেয়ের বিয়ের পর বিদেশে চলে গেল। মাঝে মধ্যে নাতি নাতনীদের ভিডিও কলে চোখে দেখার জন্যই হাপিত্যেস করে বসে থাকত জয়ন্তবাবু। কাজের ব্যস্ততায় আজকাল তাও কেউ করত না। একটা কাজের বউ ঘর পরিস্কার আর খাবার তৈরী করে দিয়ে যেত। বন্ধু বান্ধবরা একে একে বয়সের চাপে হারিয়ে যাচ্ছে। সময় আর কাটে না। নিজে ঠিক করল বাড়ি ছেড়ে বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাবে। সেখানে অন্ততঃ কিছু মানুষ তো পাবে কথা বলার জন্য। সবে মাত্র টলিব্যাগ গুছিয়েছে, কমলীর আগমন। বড় বড় চোখ, মাথা ভর্তি কোঁকড়ানো চুল আর মিষ্টি মুখখানি। চোখদু’টিতে কেমন যেন আষাঢ়ের মেঘ জমে আছে। করুণ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল আট বছরের কমলী। জয়ন্ত বাবু জিজ্ঞেস করল, তোমার নাম কি ?

    সে বলল, আমি বাসন্তী। সবাই এই নামেই ডাকে। কাজের বউটা বলল, আমার নাতনী বাবু। মাসখানেক হল এক বাস দুর্ঘটনায় মেয়ে জামাই দু’জনেই মারা গেছে। আটবছরে মেয়েটার লেখাপড়ার খুব সখ। তাই আপনার কাছে নিয়ে এলুম। জয়ন্তবাবু এক মুহুর্ত ভাবল। তারপরেই ফেসবুকে লিখেছিল, বসন্ত এসে গেছে। সঙ্গে বাসন্তী।

  • অণু গল্প

    পরিচয়

     পরিচয়
    -অণুশ্রী দাস

     

    লাবণ্যর বিয়েটা প্রেম করেই, তবুও শর্ত ছিল গৃহবধূ হয়ে থাকার, শাশুড়ি এই গল্পের ভিলেন, আর তার পঙ্গপাল পাশের বাড়ির জ্ঞাতিরা। নিজের মেয়েকে মানুষ করার সুযোগে লাবণ্যর সব আত্মত্যাগের কষ্ট, নিঃশব্দে ভেঙে ধুলোয় মিশে গেছে সবার চোখের আড়ালে, ভিলেন যখন লাবণ্যর জীবনের ওপর থেকে কালো ছায়া কাটিয়ে চলে গেছে তখন চুলে রুপালি আঁচড়, আর মেয়ের বিয়ের একবছর হয়েছে, মুঠো ফোনের দৌলতে সময় কাটে সোস্যাল মিডিয়ায় পুরনো বন্ধু মহলে,

    স্কুলের বেস্ট ফ্রেন্ড পিয়ালীকে সেই ছোট্ট বেলায় দেওয়া একটা কার্ডের ছবি পিয়ালী ফেসবুকে লাবণ্যকে ট্যাগ করে পোস্টে করে, সেই পুরনো স্মৃতির জলছাপে উপলব্ধি করে, নিজের পরিচয়টা এখন ভটচার্য্যি দার বউ না হলে আই.পি.এস অফিসার সৌরিণির মা,এদের মাঝে হারিয়ে গেছে, আমিত্বটা এখন অন্যের বেড়াজালেই আবদ্ধ।
    নিজের ভালোলাগা স্বপ্ন, বা বলা যায় নেশাটা এত বছরের দায়িত্বের চাপে কখন জীবাশ্ম হয়ে গেছে বুঝতেও পারে নি।
    পুরনো ধুলোয় গাঁথা ট্রাঙ্কটা বের করে নিজের এক একটি সৃষ্টিকে ছুঁয়ে দেখে যখন নিজেই অবাক হচ্ছে একটা ফোন এল, কথা বলা শেষ হল, গালের নরমে কতক্ষণ লাভা স্রোত তুলেছিল কে জানে !
    -তুমি ধুলোর মধ্যে পুরনো ছবিগুলো নিয়ে কি ভাবছ হাঁ করে, ওঠো চা করে দাও
    – পরশু থেকে চা টা ফ্লাস্কে থাকবে,নিজে নিয়ে নিও।
    -কেন ? তুমি কোথায় যাবে? 
    -ইন্ডিয়ান আর্ট এন্ড কালারস্ থেকে আমাকে একটা প্রজেক্ট এর জন্য ওরা ইনভাইট করেছে। আর আমি জয়েন করব কথা দিয়েছি।

    – হ্যালো মা হ্যাপি ওইমেনস ডে। তোমার গিফটটা পছন্দ হয়েছে তো?
    -কি গিফট আমি তো কিছু পায়নি।
    -এই যে আজ তুমি তোমার পুরনো পৃথিবীতে নতুন করে শ্বাস নিতে যাচ্ছ সেই গিফট।
    আসলে আমি পুরনো তোমার পেন্টিংসগুলো ওদের দেখাতেই ওরা তো….

    তখন চশমার ফাঁকে চিক চিক করছে দু’টো চোখের কোন, আজ এক নারীর মাতৃত্ব সার্থক। সব না-পাওয়া গুলো হারিয়ে আবার ফিরে পাওয়ার আনন্দে পরিপূর্ণ, এখন শুধু লাবণ্যর নিজের পরিচয়ের সাদা কালো জীবাশ্ম হাজার রঙে রাঙানো বাকি ।।

  • অণু গল্প

    মিমির কান্না

    মিমির কান্না
    – অঞ্জনা গোড়িয়া

     

    দু’দিন ধরে স্কুলে আসছে না, শান্ত শিষ্ঠ ছোট্ট মিমি। মনটা খুব ছটপট করে উঠল। কি হয়েছে জানার জন্য খবর পাঠালাম। অন্য একজন জানাল, দিদি ওর দু’দিন খুব জ্বর! তাই আসতে পারে নি। মনটা খারাপ হয়ে গেল, আহারে! ছোট্ট মেয়েটা কত কষ্ট পাচ্ছে। যখনই স্কুলে আসে গা ঘেঁষে দাঁড়ায় আর বকবক করেই চলে। কখনও বলে দিদি দিদি, “তোমার শাড়িটা খুব সুন্দর! আবার কোন দিন বলে, দিদি তুমি সেই লাল শাড়িটা পড়ো নি কেন? বেশ লাগে তোমায়, ঠিক আমার মায়ের মত।

    মায়ের কথা বললেই ওর চোখ দু’টি ছলছল করে উঠত। বেশী কিছু বলতাম না, যদি ছোট্ট মিমির আবার কষ্ট হয় মায়ের কথা শুনে। একবছর হল, মা মারা গিয়েছে। শুনেছি, বাবার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। রোজ মদ খেয়ে এসে খুব মাতলামো করত, মা প্রতিবাদ করলে বোতল ছুঁড়ে মারত।
    কিন্তু মিমির আবার নতুন মা হয়েছে। মিমি অবশ্য খুব খুশি,”মা”বলে ডাকতে পেরেছে । আপন করে নিয়েছে নতুন” মাকে ছোট্ট মিমি। নতুন মা’ও মেয়েকে পেয়ে খুব সুখী। এমন মেয়েকে ভালো না বেসে কেউ কি থাকতে পারে?

    তিন দিন পর স্কুলে এল মিমি। একটু মনমরা । মুখটাও বেশ শুকনো। হঠাৎ চোখে পড়ল ফর্সা গালে আঙুলের ছাপ, লাল হয়ে আছে। চমকে উঠলাম!
    কাছে ডেকে জিজ্ঞাসা করলাম, কি হয়েছে মিমি? শরীর ভালো আছে?

    চোখ দু’টি ছলছল করে উঠল, কিছুক্ষণ চুপ!
    আস্তে আস্তে বলল, কদিন আগে আমি পড়তে বসে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ মায়ের চিৎকারে ঘুম ভেঙে গেল, দেখি মাকে ঝাঁটা দিয়ে ইচ্ছা মত মারছে আর চুলের মুঠি ধরে আছে, গালিগালাজও করছে ।
    আমি ছুটে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরতেই বাবা, আমার মুখে চড় মারল জোরে। আমার মায়ের ও খুব লেগেছে দিদি। আর বলতে পারল না, ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল ছোট্ট মিমি।

  • অণু গল্প

    বেলডাঙা এক্সপ্রেস

    বেলডাঙা এক্সপ্রেস
    -অমিতাভ সরকার

     

     

    আজও খুঁজে চলেছে মধুমিতা সেই বুড়ি মাকে,
    হ্যাঁ মা তো বটেই। বেলডাঙ্গা এক্সপ্রেস। দৈনিক রেল যাত্রীরা এ নামে ডাকে। নটা কুড়ির ট্রেন, রোজ এই ট্রেনে যায় মধুমিতা তার অফিস করতে। যাতায়াত করতে করতে অনেকের মুখ চেনা হয়ে গেছে। অনেকের সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে, গল্পগুজব ঠাট্টা মজা সব রকমই হয়।
    একদিন অফিসে প্রচুর কাজ ছিল। সেই সঙ্গে গ্রামবাসীর এক ডেপুটেশনে অফিস ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অফিস থেকে বের হতে  দেরি হয়ে গেছে। মাথা ঝিমঝিম করছে। দু’টো ট্রেন বেরিয়ে গেছে। স্টেশনে পৌঁছে পেয়ে গেল এক লেট ট্রেন। বিশেষ পরিচিত কেউ কেউ ছিল না স্টেশনে। শরীরটা ভীষণ খারাপ করছে মাথা টনটন করছে। কামরায় উঠে সিট পেয়ে গেছিল মধুমিতা। অল্প স্বল্প চেনা দু’একজন যারা ছিল তারা পরের ষ্টেশনে নেমে গেল। তীব্র মাথার যন্ত্রণায় মধুমিতা হঠাৎ করে পড়ে গেল । মাথায় চোট খেয়ে ভীষণভাবে ফুলে গেল, অসম্ভব যন্ত্রণা। কোনুইএর পাশে কেটে গিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। আশেপাশে যারা ছিল তারা শুধু দর্শনার্থী হয়ে বসে থাকলো। নিচে বসে ছিল এক শাক বিক্রেতা মাসি ঝুড়ি নিয়ে। সে এদিক ওদিক দেখে নিয়ে এগিয়ে এলো। এসে বললে মা দেখি দেখি তোমার হাতটা। অনেকটা কেটে গেছে। ইতস্তত না করে তার কাপড়ের আঁচল ছিঁড়ে, সেই কাপড় দিয়ে তার ক্ষত বেঁধে দিল। সেই সময় এক হকার মাথা ব্যথার মলম বিক্রি করতে কামরায় এসেছিল। তাকে ডেকে মাসি তার কোমরের খুঁটে বাঁধা পয়সা বার করে একটা মলম কিনে নিল এবং তার মাথায় মলম ঘষে দিতে লাগল। মধুমিতা একটু সুস্থ বোধ করল। মাসির পরের স্টেশনে নেমে যাওয়ার কথা ছিল। সে নামলো না বহরমপুর স্টেশন পর্যন্ত মধুমিতাকে পৌঁছে দিল। জিজ্ঞেস করল
    মা তুমি যেতে পারবে তো? মধুমিতা সম্মতি জানাল হ্যাঁ পারব। মাসি বহরমপুর স্টেশনে অপেক্ষা করতে থাকলো ফেরার ট্রেনের জন্য। মধুমিতা টোটো ধরে বাড়ি পৌঁছে গেল। সেই অবস্থায় মধুমিতা মাসিকে মলমের দাম জিজ্ঞেস করতে পারেনি, সে কৃতজ্ঞতায় বিনীত হয়েছিলো। ভেবেছিল পরে মাসির সাথে দেখা হলে তার হাত ধরে কিছু টাকা গুঁজে দেবে এবং সেদিনের কথা স্মরণ করিয়ে কৃতজ্ঞতা জানাবে।
    বছর পেরিয়ে গেছে মধুমিতা আজও খোঁজ করে চলেছে বুড়ি মাকে, তার সেদিনের সাহায্যের কথা ভেবে।

  • অণু গল্প

    ভালোবাসার দিন

    ভালোবাসার দিন
    -রিতম কর

     

     

    Whatsapp এ একগুচ্ছ শাড়ির ছবি পাঠিয়েছে দিতি।বিকেলের জন্য কোনটা পড়বে, অর্ঘকে বেছে দিতে হবে। বেচারা অর্ঘ! গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় বুঝেছে যেটাই বলবে, সেটাই খারিজ হবে। এদিকে না বেছে দিলে মহারানীর মুখ ভার! অতএব অর্ঘ’র জবাব লালটা পর।
    মেসেজ সিন হলেও no reply. ঘন্টাদুয়েক পরে টুংটাং। লাল শাড়ি পরা ছবি ‘কী, খুশি তো?’
    -পাগলী একটা….

    পার্ক স্ট্রিটের এক নামী রেস্তোরা কর্মী কৌশিকের আজকে দম ফেলার ফুরসৎ নেই, বিকেল হলেই ভরে উঠবে সমস্ত রেস্তোরাঁ। তার আগেই সবকিছু সাজিয়ে, গুছিয়ে বিলাসবহুল রেস্তোরাঁটিকে আরো মায়াবী করে তুলতে হবে। কিন্তু তাও তার মধ্যেই ম্যানেজারকে বলে দুপুরে ঘন্টা দেড়েকের ছুটি আদায় করেছে ও।প্ল্যানেটরিয়ামের গেটের কাছেই অপেক্ষা করবে রিয়া।তাই ও আগে ভাগেই মোড়ের মাথায় রতনের দোকানে দু’টো গোলাপের কথা বলে এসেছে,
    রতনের আজকে মন খুব ভালো, সকাল থেকেই দু’হাতে বিকোচ্ছে ছোট, বড়ো হরেক রকম লাল গোলাপ, আজকে রতনও ঠিক করেছে রিমিকে নিয়ে রাতের দিকে বাইরে খাবে কোথাও, রিমির অনেকদিনের ইচ্ছে….

    সকালে চায়ের কাপ হাতে টিভিটা খুলে বসতেই, গান শুরু হলো ‘পুরানো সেই দিনের কথা…’ মনোজবাবুর পাশেই এসে বসলো অনুরুপা….’হ্যাঁ, গো কীসব বলছে, আজ নাকি ভালোবাসার দিন! তোমার মনে আছে সেই আমাদের বাড়ির সামনের মাঠটায় খেলতে এসে তুমি কিভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে! আর দাদাকে দেখলেই ভোকাট্টা!’….হালকা হেসে বোঝালেন সবটাই মনে আছে মনোজবাবুর, সেই জন্যই তো নাতির কাছে জানতে পেরে অনুরুপার জন্য তিনিও চুপি চুপি সুচিত্রা মিত্র’র একটা ক্যাসেট এনে রেখেছেন, ওর জন্য আজকের উপহার….

    ভিক্টোরিয়ার সামনে দিয়ে বাসটা যেতেই বছর চল্লিশের অমিতের চোখে পড়লো কত যুবক, যুবতীর ভিড় আজকে এখানে, চারিদিকের দোকানগুলোও আজকে যেন একটু অন্যরকম সাজানো, সবাই হাসছে,ফটো তুলছে… চারিদিকে যেন এক না বলা উৎসব…এদের দেখে মনটা হঠাৎই বড্ড ভালো হয়ে গেল ওর। সকালেই বেরোনোর সময় স্বপ্না’র সাথে খানিক থটমট লেগেছে…রাতে ফিরেই মানাতে হবে, ম্যাডামকে. . আজকে রাগ করে থাকা যায় নাকি…!!

    সবকিছুরই মূলে ওই যে ভ্যালেন্টাইন্স ডে, ভালোবাসার দিন। নিন্দুকেরা বলে ভালোবাসার আবার আলাদা দিন লাগে নাকি! প্রত্যেকটা দিনই তো ভালোবাসা যায়…!! কিন্তু চারিদিকে যখন এত খারাপ, এত টানাপোড়েন তখন একটা দিনকে শুধু ভালোবাসার জন্য রাখলে ক্ষতি কি! শেষমেশ তো ভালো থাকা, ভালোবাসারই প্রচার করছি…
    কত প্রত্যাখ্যাত হৃদয় অভিমানে স্টেটাস দেবে আজকে,
    কিন্তু কিছুজন তো টিউশন এ পাশে বসা মেয়েটাকে বলতেও পারবে…
    হয়তো সামনেই পরীক্ষার চিন্তা, কিন্তু তার মাঝেও একটু টাটকা হাওয়া হয়তো আসবে যুবক মনে….শেষ হবে কত মান, অভিমানের পালা…
    দিনের শেষে কিছু বেশি রোজগারে রতনও হাসবে, মনোজবাবু ও চল্লিশ বছর আগের অনুরুপাকে আবার দেখতে পাবেন….কিছু মন ভাঙবে,আরো কিছু হারিয়ে যাওয়া কবিতা লেখা হবে…
    কিন্তু তাতে কি, সবটাই তো সেই ভালোবাসাকে ঘিরেই নাকি…

    ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে…

You cannot copy content of this page