Uncategorized

  • Uncategorized

    কবিতা- এই বেশ ভালো আছি!

    এই বেশ ভালো আছি!
    রাণা চট্টোপাধ্যায়

    ব্যস্ততার গোলক ধাঁধা ও
    যান্ত্রিক কৃত্রিমতায় অভ্যস্ত নাগরিক বৃন্দ আমরা।
    ভেঙেচুরে দুমড়ে যাওয়া মুখরিত মানবিক স্বত্তা,
    বারংবার ধাক্কা খেলেও হাসিমুখে,
    বাহ্যিক পরিপাটি কাঠামোয়,
    আশ্বস্ত করে বলি ভালো আছি।
    কতটা সত্যি ভালো থাকলে,
    ভালো আছি বলা যায় সে খেয়াল রাখে কজনা!
    তবু স্বার্থে ঘা লাগা মানুষ গুলো
    এসব বিষয়ে ভ্রুক্ষেপহীন জীবন কাটায় অচিরে।
    কেবল আমি আমি, না পাওয়া, বঞ্চনার রেকর্ড!

    সকালের রেডিও স্টেশন, প্রাত্যহীকি অনুষ্ঠানে চায়ের আসরে চিঠি পাঠ শুনতে থাকা অভ্যাস
    ভেতরে খানিক তরতাজা রাখে আমাদের।
    ক্ষতের ওপর প্রলেপ ঢেকে যতই আমরা
    সপ্রতিভ হয়ে বলি ‘”এই বেশ ভালো আছি “
    তবু মনের ভেতরে ক্রমাগত চলতে থাকে
    সমস্যা ভরা কাঁটার খচখচ আঁচড় ।

  • Uncategorized

    কবিতা- বাঁচার জন্য

    বাঁচার জন্য
    -সুমিত মোদক

    আকাশকে বললাম ছবি আঁকতে, মেঘের ছবি;
    শৈশবের সেই কল্পছবি, কৈশোরের সেই গল্পছবি;
    অনেক অনেক, অনেক ছবি …
    আকাশ বলল — আঁকছি তো আমি রাত দিন,
    তুমি তো দেখেছো না আর …
    আমি বললাম — সে কি কথা!
    তাকাই তো তোমার দিকে সময় পেলে,
    তোমার দেখার ইচ্ছা হলে;
    — সময় কি সে ভাবে পাও কখনও!
    মুচকি হেসে বললো আকাশ;

    সত্যি তো সময় সে ভাবে পাচ্ছি কোথায়;
    নিজের বলে কিছুই নেই, সবটাই যে পরিবারের;
    কিচ্ছুই নেই নিজের জন্য? দেশের জন্য,
    দশের জন্য, বাঁচার জন্য;
    বাঁচবো আমি কেমন ভাবে!

    আকাশ বলল— এখনও অনেক সময় আছে,
    আবেগটাকে আঁকড়ে ধরো;
    বুকের মধ্যে শ্বাস ভরো;
    ইচ্ছা মতো মেলতে থাকো রূপকথার-ডানা;

    হঠাৎ কি মনে হলো আকাশের দিকে যেই তাকালাম
    আকাশ জুড়ে মেঘ জমলো,
    ঝাঝমিয়ে বৃষ্টি নামলো বুকের মধ্যে, মনের মধ্যে;
    ভিজেই গেলাম আপন সুখে বর্ষা রাতে;
    আশেপাশে তাকিয়ে দেখি ভিজছে সবাই মেঘ-মল্লারে।

  • Uncategorized

    কবিতা- হেমন্তিকা

    হেমন্তিকা
    -শিলাবৃষ্টি

     

     

    বঙ্গের এই রঙ্গশালায়
    নটরাজের নাচন…
    ছয়টি কালের আসা যাওয়া
    মনের মাঝে মাতন ।
    ঢাকের বাদ্যি ,শিউলি শালুক
    শরৎ সুবাস শেষে,
    বৈরাগিনী হেমন্তিকা
    আসলো মৃদু হেসে ।
    হিমেল আবরণে আজ
    ঘোমটা খানি টেনে —
    দুহাত ভরে দিয়েই গেলে
    স্ব- স্নিগ্ধ নয়নে ।
    খেটে মরে চাষি সারা দিনভর
    বারোমাস জলেরোদে,
    মুখের আহার জোগায় তারা
    মেটায় পেটের খিদে।
    হেমন্তে এসে উৎসবে মাতে
    হাতে হাতে ধান কাটে,
    স্বর্ণ ফসলে ভরে দেয় গোলা
    আনন্দ মাঠে বাটে ।
    আঙিনার মাঝে ঘট পাতা ঐ
    নতুন ধানের শিসে
    উৎসব হোক তোমার আমার…
    স্নেহ ভালবাসা মিশে।
    নবান্ন এল প্রতি ঘরে ঘরে
    মাঠের সোনার ধানে ,
    অঙ্গন আজ হাসছে দেখো …
    তোমার পূর্ণ দানে।
    নিজেকে কেন গুটিয়ে রাখা !
    বিষন্নতার ছায়ে !
    হেমন্তিকার প্রাচুর্য তো –
    তোমার পায়ে পায়ে ।
    মমতাময়ী মাগো আমার
    উদাস কেন বলো ?
    নতুন ধানের ঘ্রাণে যখন-
    সবাই দেখে আলো !
    তোমার আশিস মাথায় নিয়ে
    আনন্দে আজ মাতি,
    শাঁখ বাজিয়ে,উলু দিয়ে
    “নবান্নে” হও সাথি ।

  • Uncategorized

    ছলনায় মঙ্গল

    ছলনায় মঙ্গল
    -রীণা চ্যাটার্জী

    সুধী,
    “দ্বার বন্ধ করে দিয়ে ভ্রমটাকে রুখি
    সত্য বলে আমি তবে কোন পথে ঢুকি?”

     খুব পরিচিত কথা বাঙলা মাধ্যমের সব ছাত্রছাত্রী আর শিক্ষকমহলের কাছে। ভাবসম্প্রসারণের ভাব সম্প্রসারিত করতে অভ্যাসের কলমে কত শব্দের সুড়সুড়ানি।

    ক্রমে পেরিয়ে যায় পরীক্ষার চৌকাঠ, পরে কাউকে অভ্যাস করতে দেখলেই মন ঠিক একবার মনে মনে আওড়ে নেয়। কিন্তু দ্ধার কি খোলে? মনে হয় না। তাই সত্য আজও বাইরে অপেক্ষায়। আমাদের সমাজের কান্ডারী নেতাদের, আপাতদৃষ্টিতে নজরে আসা বুদ্ধিজীবীদের দেখে সেই কথাটাই মনে হচ্ছে। নাহলে কিসের এতো অবক্ষয়? একটা ছোট্ট আয়না কি নেই, না কি নিজের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার কোনো প্রয়োজন নেই? সত্য বাইরে অপেক্ষায় বাকি থাকল ভ্রম! সে তো লোহার বাসর ঘরেও সাপের উপস্থিতি আটকানো যায়নি। ভ্রমের বাসর ঘরটাই তো মন। দ্বার বন্ধ করে তাকে তো আরো গভীর আলিঙ্গনে আপন করে নেওয়াই তো রীতি। তাই হয়ে চলেছে ক্রমাগত, ক্রমান্বয়ে… ছলনার মঙ্গলকামনায়।

    সমাজের ছবি-প্রতিছবি সব মনে হয় ছোট্ট মনটার মধ্যে অজান্তেই এঁকে দেওয়া হয়। আর আমরা চর্চিত শিক্ষায় বড়ো হয়ে উঠি প্রকৃত অর্থ অনুধাবন না করে। মনের মধ্যে এঁকে দেওয়া চিত্রগুলি নিজের মতো করে বেরঙীন হয়ে যায়। ভ্রমের পথের পথিক হয়ে জীবনটা বেশ কেটেই যায়। সত্যকে চেনা হয় না, জানা হয় না… সময় ঘড়ি ঘন্টা বাজিয়ে দেয়।

    জৈষ্ঠ্যের প্রথম দিনে ভয়াবহ উষ্ণ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে।

You cannot copy content of this page