গল্প- মাই বেস্ট সেল্ফি

মাই বেস্ট সেল্ফি-বিশ্বদীপ মুখার্জী   ‘এখন আমি ভাবি যে সত্যই আমি খুব বোকা ছিলাম এক সময়। আমাকে স্মার্ট করলো আমার ছেলে।’ চায়ে একটা লম্বা চুমুক দিয়ে নীহাররঞ্জন বাবু বললেন।প্রতিদিন সকালে বাড়ির সামনের চায়ের দোকানে গিয়ে চা পান করা তাঁর অভ্যাস। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী চা বানিয়ে দেন ঠিকই, কিন্তু তাতে মন ভরে না তাঁর। নিজের ছোট […]

আমার মেয়ে….

আমার মেয়ে….-বিশ্বদীপ মুখার্জী     আমি নিজের মেয়ের হত্যা করিনি। আমি তো তাকে ভালবাসতাম। কাছে থাকলে কেউ ভালোবাসার মর্ম বোঝে না, বোঝে দূরে চলে গেলে। যত দিন সে আমার চোখের সামনে ছিল, চক্ষুশূল ছিল আমার। আমাদের মত লোকেদের বাড়িতে মেয়ে অভিশাপের দ্বিতীয় নাম। ভাগ্যের পরিহাস ভেবেই স্বীকার করেছিলাম মেয়েকে। আট বছর দাঁতে দাঁত চিপে তাকে […]

আইস ক্রিম

আইস ক্রিম– বিশ্বদীপ মুখার্জি     স্টেশান- এর বাইরে বসে আছি। রৌদ্রের প্রচন্ড তাপে সমস্ত শরীর যেন ঝলসে যাচ্ছে। মন আর শরীর কোনোটাই ভাল নেই আজ। সকাল থেকে দুপুর হয় গেল, আয় তেমন কিছুই হলো না। মানুষের কৃপণতার বিষয় চিন্তা করে হাসিও পায় এবং কান্নাও পায়। তাঁদের আর দোষ দিয়ে লাভ কী? তাঁদের টাকা। কী […]

ফিরে পাওয়া

ফিরে পাওয়া -বিশ্বদীপ মুখার্জী     একদিন ফোন করে সে আমায় বলল- ‘এই কাজটা আর ভাল লাগছে না। ইনকামের কোনো ঠিক নেই। কোনো মাসে বেশি হয় তো কোনো মাসে কিছুই হয়ে না। এ ভাবে চলা যা? তুমি কোনো এক ভাল কাজ জোগাড় করে দিতে পারবে?’ একটু সময় চেয়েছিলাম আমি। মাঝে ব্যস্ত হয়ে পড়াতে মনে পড়েনি […]

হিডেন ট্রান্সমিটার

হিডেন ট্রান্সমিটার -বিশ্বদীপ মুখার্জী     আকাশে যেমন এক রাশ মেঘ বেঁধেছিলো নিজের বাসা, ঠিক তেমনই স্বস্তিকের হৃদয়েতেও নিজের বাসা বেঁধেছিল মেঘেরা। যে কাজ আজ তাকে করতে হবে তাতে বিন্দু মাত্র ইচ্ছে ছিল না তার। নিজের শরীরে কোনো প্রকারের কাটা-ছেঁড়া স্বস্তিকের পছন্দ নয়। অথচ প্রজ্ঞা বলেছে- ‘ভয়ের কিছু নেই, স্বস্তিক। তুমি বুঝতেও পারবে না। কিছুক্ষণের […]

ক্ষত (পর্ব- ৫/শেষ)

ক্ষত  -বিশ্বদীপ মুখার্জী     পর্ব- ৫ ‘এটাকে এক ধরনের মানসিক ব্যাধি বলে চিহ্নিত করা যেতে পারে।’ মৃত্যুঞ্জয় বলতে আরম্ভ করলো- ‘নিজের ক্ষতি করা, নিজেকে আঘাত দেওয়া এক ধরনের মানসিক রোগ। মেডিকাল সায়েন্সে এই রোগের দুটো নাম। প্রথম হলো -সেল্ফ ইনজুরি ডিসঅর্ডার, আর দ্বিতীয় নাম হলো- বি.পি.ডি. মানে বর্ডারলাইন পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার। এই রোগে মানুষ নিজেকে […]

ক্ষত (পর্ব – ৪)

ক্ষত -বিশ্বদীপ মুখার্জী     পর্ব- ৪ স্কুটিটা এসে দাঁড়ালো পানের দোকানের ঠিক দশ হাত পেছনে। তখন ঘড়িতে সকাল ন’টা বেজে দশ মিনিট। রোদের তেজ ধীরে ধীরে কড়া হবে। যতক্ষণ না প্রতীক নেলসন বাড়ি থেকে বেরোয় আর বিকাশ আসে, ততক্ষণ এক এমন জায়গায় দাঁড়াতে হবে যেখানে রোদের তাপও পৌঁছবে না আর প্রতীকের চোখের আড়ালেও থাকা […]

ক্ষত (পর্ব- ৩)

ক্ষত -বিশ্বদীপ মুখার্জী     পর্ব-৩ কেয়ারটেকার রাতের খাবার দিয়ে যাওয়ার পর অন্বেষা মৃত্যুঞ্জয়ের ঘরে ঢুকলো। তখন প্রায় রাত দশটা বাজে। টেবিলের ওপর ঢাকা খাবারের থালা দেখে অন্বেষা বলল- ‘এখনও খাওনি?’ মৃত্যুঞ্জয় চেয়ারে বসে একাগ্রচিত্তে সিগারেটে টান দিয়ে যাচ্ছিলো। কেয়ারটেকার কখন রাত্রি আহার দিয়ে গেছে আর কখন অন্বেষা ঘরে প্রবেশ করেছে, তার হুঁশ নেই। কেয়ারটেকারটাও […]

ক্ষত (পর্ব-২)

ক্ষত  -বিশ্বদীপ মুখার্জী     পর্ব- ২ বাড়িটা ছোট, আশেপাশে বলতে গেলে জংগল। কোনো সময় হয়তো বাগান ছিলো, কিন্তু এখন সেটা জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। সদর দরজায় তালার দরুণ বাড়ির ভেতরে প্রবেশ সম্ভব নয়। বাইরে থেকেই মৃত্যুঞ্জয় বুঝতে পারলো যে বাড়িতে খুব বেশি হলে দুটো ঘর। একটা ঘর বাড়ির পেছন দিকে। বেরোবার জন্য একটা দরজাও আছে। […]

ক্ষত (পর্ব – ১)

ক্ষত -বিশ্বদীপ মুখার্জী     পর্ব – ১ বেশ কিছু দিন হলো পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে বিহারে ঠাঁই নিয়েছে মৃত্যুঞ্জয়। নিজের প্রায় বারো বছরের কর্মজীবনে বলতে গেলে কোনো দিনই মানসিক শান্তি পায়নি সে। চারিদিকে রহস্য নিজের ডালপালা গজিয়ে রাখলে শান্তি জুটবেই বা কোত্থেকে? চব্বিশ বছর বয়স ছিলো মৃত্যুঞ্জয়ের যখন সে আই.পি.এস.-এর চাকরীটা পায়। তার পর থেকে শুধু […]