বহ্নি পতঙ্গ

বহ্নি পতঙ্গ -সঙ্কর্ষণ     এমনি করেই একদিন উড়তে উড়তে বিশাল পাহাড় সমুদ্রগুলো পেরিয়ে যাবো… পেছনে খাল, বিল, মরুভূমি ফেলে ইচ্ছেগুলো সব অজান্তেই আকাশের বুকে মিশে যাবে। মাঠের সবুজ ঘাসে নিজের মখমলে ডানা ঘষে প্রজাপতি থেকে ফড়িং হয়ে যাবো আমি। প্রাণভোমরার বোঁ-বোঁ শুনতে পেলে ছুটে যাবো কবিতার রক্তমাখা লাশ পড়ে আছে যেখানে। রোদের তাপে ফ্যাকাশে […]

বেকার

বেকার -সঙ্কর্ষণ     সকালের পাতে বেড়ে দেওয়া ভাতে যায় থেকে কিছু ক্ষোভ, না বলার মাঝে দু’চোখের ভাঁজে উগরানো কতো লোভ। বিশুর মাইনে একলাখি প্রায় চিন্টুরও হাজার আশি, ওদের কপালে লক্ষ্মী বসতি হেথা দুর্ভাগা রাশি। কষ্টরা শুধু আঁকে অজুহাত কান্নারা তোলে ঢেউ, পকেটের মাঝে রেস্ত শূন্য পাশে নেই কোনো ফেউ। “আমার ছেলে তো ইঞ্জিনিয়ার তোমারটা […]

মানুষ

মানুষ -সঙ্কর্ষণ     তো, অঘোরবাবু একটি গাধা পুষিয়াছেন, দেখাদেখি অশেষবাবুও… দুই গাধা একই মাঠে চরে… থুড়ি ইস্কুলে পড়ে। মোটা মোটা বোঝা নিয়ে রোজ রোজ… হেঁ হেঁ।   অঘোরবাবু জানেন গাধা পিটিয়ে ঘোড়া হয়, অশেষবাবুর গাধা আদরে গোবরে থাকে। “বাঁদর হবে হুঁহ্।রেস… সামনে লম্বা রেস, ভাগো।” লাল চোখ, ধমকানি, পিটানি… বাবা রে।   দিন পাল্টায়, […]

আকাশী

আকাশী -সঙ্কর্ষণ বৃষ্টি আর রঞ্জার বাড়ি পাশাপাশি। একই আকাশের নীচে ছোটোবড়ো দুটো আকাশ, তাতে সাদা কালো কিছু গল্প বলা মেঘ-রা থাকে। না বলা গল্পও থেকে যায়… বললেও হয়, না বললেও।   ব্যালকনি থেকে জিজ্ঞাসু দুটো চোখ…প্রশ্ন করে, “আচ্ছা, আকাশটা কী ঐ উঠোনের থেকেও বড়ো?” রঞ্জার চোখে আকাশ টেনে আনে ছ’তলার ছাদ, যেন সেট-টপ বক্সে সিগন্যাল… […]

বর্ণন

বর্ণন (A homage to artist Benode Behari Mukherjee) -সঙ্কর্ষণ     রঙিন কিছু মূহুর্ত… । লালমাটির আবিরে নিয়ত হোলি খেলা সবুজ মাঠের গল্পগুলো, কবিতা হয়ে যায় কাজলকালো দুই তারায়… প্যালেটে কাব্যিক ছোপ পড়ে নতুনের, ভারী প্রিয়, ভারী সুন্দর এই অমরত্ব। টলটলে কালো জলে সাদা কুয়াশার মতো কিছু বক, বিষণ্নতার বাঁশীতে সাদাকালো, দুপুরগুলোর বায়নাতে কিনে আনে […]

আবর্ত

আবর্ত -সঙ্কর্ষণ     দুপুর গড়িয়ে বিকেলের দিকে একটা মনখারাপ আসে। শেষবারের মতো ডুবন্ত সূর্যের ভাসমান বিলাপ গোধূলি হয়ে ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে, কে যেন ডেকে ওঠে “আয় আয় আয় আয়…” ছেয়ে আসে অন্ধকার…প্রথমে আলতো, তারপর… তার পর গভীর। কালচে ছোপের আতঙ্কে বাসায় ফেরে কিছু রঙিন কাকলি… কিচমিচে কান্নাতে আগুন জ্বালায় গাছের কোলে। মনে পড়ে দাওয়াতে […]

জীবন-আনন্দ

জীবন-আনন্দ (কবি জীবনানন্দ দাশের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য) -সঙ্কর্ষণ সেদিন রাতে একটা মৃত্যু ঘটেছিলো নিখাদ, নির্ভেজাল একটা মৃত্যু। ঝোড়ো হাওয়ার প্রবল ধাক্কায় দুঃখরা টুপটাপ ঝরে গিয়ে তৈরী করেছিলো আকাশের সাথে যোগাযোগ। হাজারো জ্বলা নেভা তারাতে, স্থবির ধ্রুবতারা নিশ্চল নির্বাক… যেদিকে তাকাও নেই প্রাণ, নেই রূপ-রস-গন্ধ… তবু আছে কবিতার আকাশে তারা হয়ে… নীল, ম্রিয়মান এক তারা। নতুন আকাশ […]

অনিচ্ছেপূরণ

অনিচ্ছেপূরণ -সঙ্কর্ষণ বর্ষার শেষ কালটা শরৎ গন্ধটা পূজো পূজো, নেইগুলো শুধু গুনতে না বসে আছেগুলো আগে খুঁজো। লালরঙা পচা, নীলটাও বাজে চাই নয়া জামা জুতো, কোথাও ফুটেতে সদ্যোজাতরা কেউ পায়ে হাতে খুঁতো। বিরিয়ানী পড়ে কারোর পাতেতে কারোর কপালে ফ্যানা, কেউ সারাদিনে আধপেটা খাবে কেউ মোগলাই খানা। শোকেতে এখনো মেয়েটির বাবা বালিশ ভেজায় রাতে, হারিয়েছে কোনো […]

জন্মদিন

জন্মদিন -সঙ্কর্ষণ     একটা কবিতা হঠাৎ জন্ম নিলো আজ। কাব্যহীন বন্ধ্যাত্বে বহু রাত কেটে গেছে। যেমন করে ঝরে যায় হলদেটে পাতা, চুপিসাড়ে, নির্ঘুমে তেমনি অবহেলে রাতগুলোও আর ফিরলো না একলা রোদ্দুরের ঠিকানাতে। বারান্দায় খেলতে আসবে ঠোঁটকাটা ছন্দগুলো, কার অপেক্ষায় জানি না দোলে, পুরোনো ইজি চেয়ারটা। কান্না আসে, নিশ্চুপ কান্না। পেনের ডগাতে কালির বদলে অশ্রু […]

অজানা

অজানা -সঙ্কর্ষণ ঘোষ  এ বাবা মডার্ণ জেনারেশন,আবেগ তেমন কোথা? যেমন ছিলো দস্যি ছেলের প্রেমের গল্পটা। মেয়েটা ছিলো বড্ড লাজুক, বয়সে ধরো কুড়ি ধাতটা থোড়া অন্য হলেও প্রেমের ফুলঝুরি।   ফ্ল্যাশব্যাকেতে উনিশ শতক,সালটা বোধ হয় তিরিশ বড্ড ভালো শুরুটা করেও, এক লহমায় ফিনিশ। ফিরিঙ্গিদের বাড় বেড়েছে, দেশটা পুরো চুলি প্রাণগুলো আজ সস্তা বড়ো, দাম শুধু এক […]