-
কবিতা- মাত্র কয়েক পা
অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার’
মাত্র কয়েক পা
–অমল বিশ্বাস ( বাংলাদেশ)দক্ষিণে গেলে
চলে এলে নির্মল হাওয়া খেয়ে
বাঁচবে বলে।অথচ আজও উত্তরে গেলে না
মাত্র কয়েক পা।মাটি কিংবা বাপ-দাদাকে শোয়ানো চিতা
যেখানে তোমার শরিকানা
দলিল লাগবে না।যাও চিনে এসো, মাত্র কয়েক পা।
-
কবিতা- অনিচ্ছের ইচ্ছে
।।অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ।।
অনিচ্ছের ইচ্ছে
-অমল বিশ্বাস ( বাংলাদেশ)একটু চা
আর সামনে টানাবৃষ্টির ঝকঝকে নদী,
কাপটি মাটিতে ছিলো।হাতের আঙুলে আঙুল ঢুকে
জলকাটা মাটি সেলাই করতে করতে
কাদায় তৈরি হলো
জলজশয্যায় শীতলপাটির লেপ্টে থাকা শরীর,
কাপটিকে অক্ষত রেখে
শ্রেয়সী ঠোঁটে মেখে নিলো টানাবৃষ্টির স্রোত,
ঠাণ্ডায় কিছুটা উষ্ণতা।কিছুক্ষণ আগের কথকতার আবেগ থামিয়ে
মুখোমুখি অথচ বন্ধচোখে
হারমোনিয়ামের রিডে আঙুল টিপেটিপে
শ্বাস-প্রশ্বাসে শুষে নিলো
অক্ষত কাপের চায়ের উপরে পড়ে থাকা
হালকা সরের ঘ্রাণ।ছেঁড়ামেঘে আকাশের ইতস্তত নীলশাড়ি
পুরোটা শরীরে ছিলোনা
যেমন পাখির ডাক দীর্ঘ থেকে সরু হয়ে
মিলিয়ে যায় ঝাপটানো ডানার বাতাসে।ঝড়ের তাণ্ডবে যখন সে বিধ্বস্ত ঘাস
মেঘ সরে নেমে আসে আকাশের শাড়ি,
চোখ খুলে লজ্জা পায়নি সে
আমার শার্টে আবৃত ছিলো তার বর্ধিত বুক।একটু নেশা!
আর অনিচ্ছের আচমকা ইচ্ছেয়
কাপে ধোয়া উড়েছিলো। -
কবিতা- চৌকাঠ
।। অমরনাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।
চৌকাঠ
-অমল বিশ্বাস ( বাংলাদেশ)বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলায়
চোখেরজলে ভেজাচ্ছে দরজার চৌকাঠ।একপা’ বাইরে
একপা’ ভেতরের মেঝেয় রাখতে
ক্যানভাস পূর্ণ হতে থাকে শাড়ির বহরে।বারোহাতের শেষটানে
তুলির শীর্ষে জাগে শিল্পীর যৌবনের রাগ,
ততক্ষণে জলশূন্য রঙ ঝুরঝুরে বালির মরুতে
সমস্ত অনুভূতির স্বপ্ন ভাঙায় নিঃসঙ্গতায়।দরজার চৌকাঠে অস্পষ্ট শব্দ শোনা যায়
‘আমি চললাম’। -
কবিতা- লজ্জাটুকু বয়ঃপ্রাপ্ত হোক
।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।
লজ্জাটুকু বয়ঃপ্রাপ্ত হোক
-অমল বিশ্বাস ( বাংলাদেশ)হাত ছাড়ো!
ব্যথা পাচ্ছো?
না না, শুভদৃষ্টির সাথে
কিছুটা বয়স ভাঙার পরিণত লজ্জা,
তোমার দয়াদাক্ষিণ্যের হাত
রাত চেনে।আকস্মিক সাবালিকায়
যেমন একক ঘর,
বারবার বুকের উপর টানতে হয়
ওড়না কিংবা শাড়ির ভাজ,
না হলে কালকূট দৃষ্টি খাবলে খায়
বয়ঃসন্ধির স্বাভাবিক উত্তরণ।কাচাহলুদ মাখানো মুখ
আর যতটা শরীরে লাগানো যায়
তারপর কাঁচাদুধ আর ঘড়াভর্তি জল
আমাকে শুদ্ধ করে,
আমি কি সত্যিই অশুদ্ধ ছিলাম?দয়াদাক্ষিণ্যের হাত
রাত চেনে,
অন্ধকারে এই লজ্জিত চোখ
নিজস্ব শরীর দেখে নিজে লজ্জা পায়,
অথচ নির্লজ্জ তুমি
চাষযোগ্য ভূমির অপেক্ষায় না থেকে
দস্যু হয়ে যাও।হাত ছাড়ো!
আমার লজ্জাটুকু আর একটু বয়ঃপ্রাপ্ত হোক,
অন্তর্লোক বুঝুক
সাবালিকা শব্দটি এখনও যুবতী হয়নি,
রমণ বোঝেনা।