• কবিতা

    গোপন অভিসার

    গোপন অভিসার
    – দুলাল সুর

    আকাশ কুসুম স্বপ্ন নিয়ে খড়ের চালাঘরে
    সংসার পেতেছিলাম ভালবাসার মানুষটির সাথে
    বসন্তের আগুনঝরা ফাগুনের কুহুতানে
    প্রেমের বাহুডোরে চিরজীবন
    সযত্নে গচ্ছিত রাখব আমার পবিত্র ভালবাসা।
    অকস্মাৎ ভালবাসার খড়ের চালাঘর
    লণ্ডভণ্ড করে দিল কালবৈশাখীর ঝোড় হাওয়া
    বুঝিনি প্রেয়সীর গোপন অভিসারের
    হিমশীতল লোভাতুর সুপ্ত ছলনা।
    ব্যর্থ হল জীবনের সকল মনের আশা
    কল্পিত সুখের নেশায় মত্ত হয়ে
    আমায় ছেড়ে সে হল পরবাসী।
    বিদ্ধস্ত ভালোবাসার খড়ের চালাঘরে
    আজও প্রতীক্ষায় পথ চেয়ে বসে আছি
    প্রিয়ার প্রত্যাগমনের প্রতীক্ষায়।

  • কবিতা

    মহামায়ার আগমনী বারতা

    মহামায়ার আগমনী বারতা
    -দুলাল সুর

     

     

    শুভ্র কাশফুলেতে দোলা লাগায়
    সকলের মন আনন্দ ও খুশীতে ভোলায়,
    কুমোর পাড়ায় মূর্তি গড়ার চলছে তোড়জোড়
    শারদপ্রাতে আসছেন মা দুর্গা সময় যে আর বেশি নয়।

    কৈলাস ধাম হতে মা আসবেন বাপের বাড়ি
    টানা একটি বছর পরেতে-
    সঙ্গে গণেশ, কার্ত্তিক, লক্ষ্মী আর সরস্বতীর সাথে
    মহিষাসুর ও পদতলে আসছেন সিংহ’কে ভর করে।

    পুজোর চারটি দিন বহে খুশীর বন্যা, আনন্দ অপার
    আত্মীয় পরিজন মিলে মিশে কেটে যায় দিন ও রাত,
    বিজয়া দশমীর বিষাদময় রাতে, ছলছল করে ওঠে আঁখি
    ঘরে ফিরবার সময় আসন্ন, মহামায়া ফিরে যাবেন শ্বশুরবাড়ি।

    সমাজের এই নিয়মধারা মানতে চায়না শিশুমন
    আনন্দর মাঝে বিষাদের সুরে বক্ষ’টি হয় ভারি,
    চারটি দিনের পরিবর্তে…!
    সাতটি দিবস ধরে
    দুর্গামাতা থাকুন মর্ত্যে…!
    পুরোহিত ও গুরুজন’দের কাছে করজোড়ে
    আমার বিনিত আবেদন’টি রাখি।

  • কবিতা

    আমার স্বর্গভূমি

    আমার স্বর্গভূমি
    -দুলাল সুর

     

     

    আম কাঁঠালের বাগান ঘেরা
    সবুজ চিত্রপটে আঁকা ছবি,
    খড়ের চাল – মাটির দেওয়ালের
    শান্তির নীড়, আমার স্বর্গভূমি।

    মেঠো পথের দুপাশেতে সবুজ শষ্যভূমি
    আলের বাম পাশে বয়ে চলেছে –
    খরস্রোত বারিধারায়
    আমাদের গ্রামের পয়মন্ত ছোট্ট নদী।

    ছোট ছোট ডিঙি ভাসাই জলেতে
    রুই, কাতলা, খলসে, পুঁটি আর জিয়ল মাছ ধরি,
    নদীর শীতল জলে শরীর মন জুড়ায়
    বারোমাস চাষের কাজেতে লাগে পানি।

    নদী নালা আর সবুজে মোড়ান
    বাংলার প্রতিটি গ্রাম,
    নদীর বুকেতে খেলে পদ্ম, শালুক,
    মাঝি নৌকায় করেন যাত্রী পারাপার।

    গ্রাম বাংলার খেটে খাওয়া মানুষজনের
    মনেতে থাকে না কোনরকম বিষাক্ত গরল,
    যৌথ পরিবারের প্রতিটি সদস্য সহাস্যে জীবন কাটায়,
    সুখ-শান্তি সদা বিরাজিত, সাধাসিধে অতি সহজ সরল।

<p>You cannot copy content of this page</p>