• কবিতা

    কবিতা- মৃত্যুর জন্য কবিতা দায়ী

    মৃত্যুর জন্য কবিতা দায়ী

    -বিকাশ দাস 

     

    থেমে গেছে বৃষ্টির ছলকানি
    থেমে গেছে আকাশের গোঙানি
    তবু তুমি আসোনি আকবর চাচার চায়ের দোকানে।
    ধ্বসে গেছে মাটির আত্মগ্লানি
    ধ্বসে গেছে বসতবাড়ির ঝলকানি
    তবু তুমি আসোনি শেষ বিদায় দেখে নিতে শ্মশানে।

    কার শব রেখে চুল্লিতে ধরে আছো উছলান
    আগুনের সেঁক লেগে বেঁচে ওঠে মৃত্যুর প্রাণ।

    প্রকৃতির হৃদকমলে থাক ধর্মজাত যার যার
    এইটুকু পৃথিবী সবার সমান সমান অধিকার।

    কবির আঙুল জানে বেঁধে নিতে কবিতায় নিশ্চুপ কথার ঝংকার
    মৃত্যুর জন্য কবিতা দায়ী অবিমৃশ্য হাড় হৃদয়ের নিরর্থ অহংকার।

     

  • কবিতা

    কবিতা- কাফন

    কাফন

    -বিকাশ দাস

     

     

    দু’হাত পেতে আছি
    একটু আগুন দাও।
    দু’চোখ বুজে আছি
    একটু আরাম দাও।

    মানুষ ভেঙে মাটির বিগ্রহ থাক
    যৌবন প্রতিদিন আগ্রহে যাক।
    কাদার নরমে হৃদয়ের প্রতিমা
    নির্বীজ পাথরে প্রাণের গরিমা।

    সূর্য মুঠো আকাশ
    ভরিয়ে আলোর বীর্যফুর্তি।
    রক্ত ক্ষরণ বাতাস
    ছড়িয়ে সমাধির তীর্থমূর্তি।

    ভালোবাসা গোলাপি স্তনের বৃত্ত ছুঁয়ে
    শ্লীলতার স্বর্গ উদ্ধার করতে থাক।
    মৃত্যু একদিন অনিবার্য মাটির শর্ত ছুঁয়ে
    ঘাসের জমিনে দূর্বা জমতে থাক।

    এখন তোমার
    রোদমাখা কাঁটাগুলোয় বিঁধিয়ে রাখো আমার বুক
    সূর্যপোড়া চাঁদের কাফনে বেঁচে থাক আমার সুখ।

     

    বিকাশ দাস / মুম্বাই

  • কবিতা

    কবিতা- কবির মৃত্যু নেই

     

    কবির মৃত্যু নেই

    বিকাশ দাস 

     

    আর কবিতা লিখে উঠতে পারিনা।
    তবু লেখার কলম একলা ছেড়ে যেতে পারিনা।
    যদিও নিঃশ্বাসের উচ্ছ্বাস বুকের পাঁজর ভেঙে শব্দেরা
    উদ্বাস্তু আঙুলের স্পর্শ নিতে আর উৎসাহী নয়।
    কবিতার খাঁচার ভেতর আকাশ তেমন নয় বলে…

    এক এক করে শব্দেরা ঘর ছেড়ে চলে যায়
    নিজের নিজের মৌচাকের বাসিন্দায়
    গুঁজে অজস্র সখ্যতার শর্ত বালিশের তলায়।

    রোজ দু’বেলা শব্দ খুঁজে বেড়াই … সাঁজোর
    এখানে সেখানে সাঁজোর বিলাসে। জ্যোৎস্নার আঁচে।
    প্রেয়সীর সহবাসের গন্ধে। সকালের অগোছালো বিছানায়।
    বাসি কাপড়ের কোঁচড়ে। ঘরদোরের ধুলোঝড়ে। এঁটো বাসনে।
    উঠোনে পড়ে থাকা রোদের উত্তাপে। চায়ের চুমুকে। চুপ চুম্বনে।
    স্নানের নগ্নতায়। প্রণামের আঙুলে। সংকোচের কাঁচে।
    আড়ালে বুকভারি বারবনিতার দোরে। নির্বিশেষে ‘ইউজ মি’ ডাস্টবিনে।

    প্রকৃতির দু’হাত ছুঁয়ে যায় আমার কবিতার শেষ পাতা।
    রেখে যায় তার চোখের দৃষ্টির ছাপ। স্পর্শটুকুর অধিবাস।
    নিঃশব্দতার নির্নিমেষ কোলাহলে জানিয়ে যায় দুর্দিনে
    দুর্যোগে প্রতিবাদী হও। না হলে তোমার একদিন সর্বনাশ।

    বৃষ্টি এসে ধুয়ে যায় কথার নিমিষহারা সোহাগ।
    কবিতারা সুখে আছে। জীবনে আরো কিছু খোয়াক মেনে।
    আমি আজও শব্দ খুঁজে বেড়াই কবির মৃত্যু নেই জেনে।

     

You cannot copy content of this page