-
এই কি কবিতা
এই কি কবিতা
-মঞ্জু সরকারমৃত্যুর ডাক শুনে যাচ্ছি
জীবনের শেষ কদিন-
অপারেশন থিয়েটারে মেশিনের সবজে আলোয়।
জীবন ও মৃত্যুর মাঝে যেটুকু অর্জন, একটা সুন্দর
নাম দিলে মন্দ হয় না। যদি কবিতা বলি,
আজ মৃত্যু শয্যায় শুয়ে কবিতা ছেড়ে
ঘুমের দেশ, চির শান্তির দেশে যেতে ভীত হচ্ছি।
ধনী দরিদ্রের সীমারেখা বিলীন যেখানে একমুঠো ছাইয়ে।তবু……
মনে জাগছে শৈশবের নৌকো বাওয়া, চোখলাল করা স্নান,
জ্বর হলে আদর পাবার বাহানা,
স্কুলে না যাবার গুচ্ছের অজুহাত, যৌবনের কলেজ
ফেরা সবুজমাখা গালিচা।
গার্হস্থ্যে প্রেম বাজী রেখে পুড়তে শেখা।
জয়-পরাজয়ের কম্পমান পারায় স্থির
হয় মা বাবা সত্ত্বায় ফিরে পাওয়া অযুত অভিমান।শুরু নতুন করে। নিজেদের সুখ-দুঃখ খুঁজে
নেওয়া সন্তানের বুকে মাথা রেখে।
ওদের যৌবনে সময়কেও ছুটি দিতে শিখে নেওয়া
একাকী সময়ের আঁচলে মুখ লুকিয়ে।
এখন ঝরা পাতা মাড়িয়ে হেঁটে চলেছে একাকী বসন্তআর্ত চোখদুটি খুঁজে ফেরে পিয়াসী মন জমি,
যেখানে গাছ হয় ভালোবাসারা।
মানবিক স্পর্শে সবুজ হতে পারতো যা।
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির এই খতিয়ান, এই কি কবিতা? -
মেঘ বৃষ্টি
মেঘ বৃষ্টি
-মঞ্জু সরকারহে মেঘ,
বলতে পারো, কোন যাতনায় এমন করে ঝরে পড়ো?
কতো শত বুকের জ্বালা তুমি নিজের বুকে ধরো।
কখনো আর্ত চিৎকার করে ওঠো। বাজ পড়ে এই পৃথ্বীতে
সুরে বেসুরে কথা ফোটে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া তানপুরাতে।
আঁধার করা বুক চিরে নিজেকে সাদা রেখায় ফুটিয়ে তোলো।
কেন এমন কাঁদাও ছন্নছাড়া বিরহী-প্রেমিক দলে, তা তো বলো?
এমনি করেই কি ঝরবে কালান্তরে তুমি রিম্ঝিম্ শ্রান্তিহীন?
বিবর্ণ মনের মাঝে নব জলতরঙ্গ বাজিয়ে যাবে রিনিঝিন্ !নিয়মহীন তোমার ধারা মুছে দিচ্ছে জলস্থলের প্রান্তরেখা।
ঘরবন্দী করেছে সবে, এনে দিচ্ছে বেখেয়াল মনেও চিন্তারেখা।
থৈ থৈ রাস্তাঘাট, ছলাৎ ছলাৎ ছন্দে ভিজে চলা, বেসামাল জন ও যান।
একি, আমাদেরি কর্ম ফলের দিচ্ছো প্রতিদান?
কষ্ট হচ্ছে অনেক।তবু এসো। উড়িয়ে ভিজে আঁচল
ভিজিয়ে দিয়ো আমার নিরুদ্দেশ মনের কোল।
তুমি এলেই মনের কানাচ ভরবে কোন্ এক কল্পনায়।
জানি না সে কেমন করা, মন মাতানোর জল্পনায়।
সত্যি বলো!
তোমার ধারায় মিশিয়ে রাখো কোন্ আদিমের আগুন?
ঝরলে তুমি, ময়ূর নাচে, প্রেমিক বাঁচে, মনে লাগে ফাগুন।
আমিও হারাই সেই সুদূরে, যেথা হতে তুমি এলে ।
মেঘের বুকে তোমার ঘর, রঙীন স্বপন যেথায় মেলে।
যেথায় মানুষ স্বার্থ ভোলে, নয়ন খোলে, হৃদয় খেলে।
এসো তেমন স্বপ্ন নিয়ে, কাটাই সময় দু’ উষ্ণ ঠোঁঠে।