• কবিতা

    কবিতা- বিলম্বিত লয়ে

    বিলম্বিত লয়ে—
    -শ্যামসুন্দর মন্ডল

     

     

    অনেকদিন হল তুমি নেই।
    গানের খাতাটায় ধুলোবালিগুলোও প্রত্নতাত্ত্বিক হয়ে গেছে।
    খাতার সেলে অক্ষরগুলো আজও বন্দী।
    নিঃশব্দে প্রহর গুনছে তোমার শরীর খুঁজে।

    টেবিলের পাশে হারমোনিয়ামের রিডগুলো
    মৎস্য ভোরের কবর। সুর নেই ফুলকার ভিতর।
    নিরুক্ত চেতনার পাশে আমি বন্দী স্পার্টাকাস
    বুঝেছি আমি অনেক সূর্য পোড়ানোর শেষে।

    সেদিন মুক্তি বিদ্রোহের আগুন ধরাতে
    কবর খুঁড়ে গেয়ে উঠলাম ইমন রাগ।
    মৃত চোখের আলোর রেখায় মিলিয়ে গেল
    এক এক করে সব তান বিলম্বিত লয়ে।

    এসো জীবন নারকেলের জট ছেড়ে বাঁকা চাঁদের মায়ায় গেয়ে উঠি
    কবর ভাঙার তান বিলম্বিত লয়ে।

  • কবিতা

    কবিতা- পাড়ভাঙা শুজনি বউয়ের লজ্জা

    পাড়ভাঙা শুজনি বউয়ের লজ্জা
    – শ্যামসুন্দর মন্ডল

     

     

    মাঝে মাঝে তীব্র আলোও দিনে খুনী হয়ে উঠে।
    তখন আলো নয়, ছায়ায় ভাসিয়ে দিতে হয় বাঁচার তাগিদটা।

    পশ্চিমে লবনধারার ধারাপাত ছুঁতেই নিভে যায়
    সারাদিন জ্বলতে থাকা অত্যাচারী আকাশ উনুনটা।
    পুকুরের পাড় ভেঙে অত্যাচারিত জলের পাশে
    সমানুভূতিতে ফিরে পায় শুজনি তার লজ্জা।
    নাৎসী হিটলারের ও রক্তসোহাগ পেরিয়ে টিকে থাকে
    কিছু কিছু ঘামঝরানো আবর্জনামুক্ত রক্তপ্রবাহ।

    সারাদিন বন্ধ্যা ক্ষেতকে মাতৃময়ী করতে
    রক্তঝরায় ঘামের বেশে শুজনি নামের চাষা বউটি,
    বাঁচিয়ে রেখে লজ্জা এগারো হাত শাড়ীর ভাঁজে।
    দিনের শেষে পুকুরধারে গুগলি খোঁজে পাথর কেটে
    যদি বা বন্ধ হয় হাহাকার, ভাতহীন হাংরা পেটে।

    এরপর ও শুজনি বউ লজ্জা বাঁচিয়ে রাখে
    আর একটা সোহাগী সূর্যের স্বপ্ন দেখে।

You cannot copy content of this page