-
ভাগের মা
ভাগের মা
-সম্পদ দাসন’মাস ধরে, কাতরে মরে,
সহ্য করেছিলাম প্রসব যন্ত্রণা।
আজ তিন ছেলের ঘরে, পালা করে,
আমার বিসর্জনের চলেছে মন্ত্রণা।।
মেরুদণ্ড আমার নেই যে সোজা,
তাই তো হয়েছি এ সংসারের বোঝা,
আমি যে এখন সবার ভাগের মা।
বড়ই দায় মাথা গোঁজা,লক্ষ্য আমার মৃত্যুকে খোঁজা,
এখন ছেলে বৌ দেখছে সাপের পাঁচ পা।।
আজ ঘরেতে আমার ঝুলছে তালা,
চার মাস করে তিন ছেলের পালা,
লাঞ্ছনা আর গঞ্জনায় বাঁধে বুক।
মাতৃত্বের বড়ই জ্বালা,
হৃদয় যে আজ ফালা ফালা,
আমার উপস্থিতিতে ছেলে বৌ এর ফ্যাকাশে মুখ।।
জানি না এ কিসের রাগ,
অথচ আমার পুত্রস্নেহের তো ছিল না ভাগ,
তবে কেন আমার প্রতি এমন আচরণ?
আর কত দেবো মাতৃত্বের ত্যাগ,
কবে যে পাবো ঈশ্বরের পায়ে ঠ্যাঁক,
জানি না কবে যে হবে আমার মরণ?
একদিন সন্তানদের খাইয়েছি নিজে না খেয়ে,
ঘুম পাড়িয়েছি সকলকে গান গেয়ে,
আজ তাদের কাছে আমি হয়েছি পর।
কত না মানত করেছিলাম ওদের চেয়ে,
ভেবেছিলাম এ জীবন ধন্য ওদের পেয়ে
অথচ ওদের দয়ায় আজ বৃদ্ধাশ্রম হতে চলেছে আমার ঘর।। -
বহুরূপী
বহুরূপী
-সম্পদ দাসমশগুল আমার দিল,
তাই সেজেছি কোকিল,
আমি কাকের বাসায় পাড়ি ডিম,
সাথে রয়েছে ডুয়েল সিম।গৃহিণীর কাছে সাজি স্তৈন্য,
পরস্ত্রীর প্রতি নইকো মৌন,
মাছ ঢাকতে ব্যবহার করি শাক,
যদিও বাড়ির বাইরে আমি বাঘ॥বেশভূষায় কদর রাখতে জানি,
গৃহিণীর সাজসজ্জায় একটু অভিমানী,
পারফিউমের উড়ন্ত সুবাসে,
আমার কচি মন খিলখিলিয়ে হাসে।আমার মনের বয়স আজও ষোলো,
জানি না কি যে এমন হলো,
ট্রেনে বাসে দেখলে কোন নারী,
আমি হয়ে যায় আদতে আনাড়ী।আমার মন যে উরুউরু,
শ্রমেতে বুক করে দুরুদুরু,
পাগলা হওয়ায় ভেসে যায়,
আমি অবাক চোখে চায়।গৃহিণীর কাছে আমি গোবেচারা -ভদ্র,
আমি সমাজের চোখে লম্ফট -অবাধ্য,
শুধুই গিরগিটির মতন বদলাই রঙ ,
প্রতিনিয়তই সেজে চলেছি হরেক সঙ।