-
মন বড়ো ছোঁয়াচে
মন বড়ো ছোঁয়াচে
-রীণা চ্যাটার্জীসুধী,
বেশ কয়েকটি মাস পর ফেরার প্রচেষ্টা- এর মাঝে শত, সহস্র চেষ্টা, ইচ্ছে সব ব্যর্থ হয়েছে। জানি না, এবারেও গুছিয়ে উঠতে পারব? না আবার সব এলোমেলো!
ঘটমান জগতে, ঘটে গেল অনেক কিছুই- কিছুটা জানতে পারলাম, বাকিটা অজান্তেই অজানার খামে বন্দী।
আলাপী মন- আমার আর এক পরিবার- বলতে অপরিসীম এক শান্তি বোধ করতাম। সম্পর্কের আচ্ছাদনে মুড়ে ছিল- ভাই, দাদাভাই, বন্ধু, বোন, দিদিভাই। সম্পর্কের দৃঢ়তা আজও আছে, যারা ভালোবেসে সঙ্গে আছে, তাদের ভালোবাসার উষ্ণতায় টের পাই ভুল ছিল না আমার ভাবনায়। তবে ভাবনার আড়ালেও ছিল কিছু বেনোজল, না কি মুখোশ- ঠিক মতো রূপকে নামকরণ করতে পারলাম না, এ আমার চরম অক্ষমতা। মুখোশ পরে থাকা হয়তো সভ্য যুগের বর্ম, শুধু কখন যেন স্বার্থের তিরে ছিঁড়ে গিয়ে কদর্য, নগ্ন রূপটা ভেসে ওঠে- সেই রূপটাই সম্বোধনের ভাষা বদলে দেয় এক লহমায়, পরিবারের পরিভাষায় ছেদ টেনে দেয়, মনটাকে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। মনের এই চরম দুঃসময়ে আমার পরম বন্ধু, সুহৃদ, প্রিয় কবি অমল দাস সযত্নে আগলে রেখেছে আলাপী মন-এর পথচলা। কখনও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়নি আমার কাজ আমি করছি না ‘কেন’? এইখানে মানুষ চেনায় ভুল হয়নি- এই পরম পাওয়া।মনের কথা বললে শেষ হয় না, বড়ো ছোঁয়াচে- কথায় কথায় নাকেকাঁদুনি।
গ্ৰীষ্ম, বর্ষা, শরৎ পেরিয়ে হেমন্তের সন্ধ্যায় উৎসবের আমেজে আমরা কেমন আছি? জানতে, জানাতে খুব ইচ্ছে করছে। আচ্ছা, এই যে উৎসব পর্ব পেরিয়ে এলাম ঢাক, বাদ্যি, কাশ, পদ্ম, জবা, আলতা, সিঁদুর প্রদীপ, বাজি, ভিড়, হুল্লোড় সবকিছু নিয়ে উৎসবকে সবাই প্রাণঢালা আনন্দে বরণ করে নিতে পারল তো? পারলেই ভালো। যারা পারেনি, তাদের কথা ভাবার সময় বা দায় নিয়ে কি হবে? একবেলার সোহাগী খাবারে তো পিচুটি ঘষা চোখগুলো বেশ অভ্যস্ত হয়ে গেছে ফটো তুলতে- আনন্দ!
পেতে জানালেই হল, যে জানে না- দোষ তার। ঠিক বললাম তো বন্ধুরা!হৈমন্তী শিশিরের শিরশিরে শুভেচ্ছা ও শুভকামনা আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে। ভালো থাকা, ভালোবাসা পরস্পর জুড়ে থাক- এইটুকুই ঐকান্তিক কামনা।
-
ছলনায় মঙ্গল
ছলনায় মঙ্গল
-রীণা চ্যাটার্জীসুধী,
“দ্বার বন্ধ করে দিয়ে ভ্রমটাকে রুখি
সত্য বলে আমি তবে কোন পথে ঢুকি?”খুব পরিচিত কথা বাঙলা মাধ্যমের সব ছাত্রছাত্রী আর শিক্ষকমহলের কাছে। ভাবসম্প্রসারণের ভাব সম্প্রসারিত করতে অভ্যাসের কলমে কত শব্দের সুড়সুড়ানি।
ক্রমে পেরিয়ে যায় পরীক্ষার চৌকাঠ, পরে কাউকে অভ্যাস করতে দেখলেই মন ঠিক একবার মনে মনে আওড়ে নেয়। কিন্তু দ্ধার কি খোলে? মনে হয় না। তাই সত্য আজও বাইরে অপেক্ষায়। আমাদের সমাজের কান্ডারী নেতাদের, আপাতদৃষ্টিতে নজরে আসা বুদ্ধিজীবীদের দেখে সেই কথাটাই মনে হচ্ছে। নাহলে কিসের এতো অবক্ষয়? একটা ছোট্ট আয়না কি নেই, না কি নিজের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার কোনো প্রয়োজন নেই? সত্য বাইরে অপেক্ষায় বাকি থাকল ভ্রম! সে তো লোহার বাসর ঘরেও সাপের উপস্থিতি আটকানো যায়নি। ভ্রমের বাসর ঘরটাই তো মন। দ্বার বন্ধ করে তাকে তো আরো গভীর আলিঙ্গনে আপন করে নেওয়াই তো রীতি। তাই হয়ে চলেছে ক্রমাগত, ক্রমান্বয়ে… ছলনার মঙ্গলকামনায়।
সমাজের ছবি-প্রতিছবি সব মনে হয় ছোট্ট মনটার মধ্যে অজান্তেই এঁকে দেওয়া হয়। আর আমরা চর্চিত শিক্ষায় বড়ো হয়ে উঠি প্রকৃত অর্থ অনুধাবন না করে। মনের মধ্যে এঁকে দেওয়া চিত্রগুলি নিজের মতো করে বেরঙীন হয়ে যায়। ভ্রমের পথের পথিক হয়ে জীবনটা বেশ কেটেই যায়। সত্যকে চেনা হয় না, জানা হয় না… সময় ঘড়ি ঘন্টা বাজিয়ে দেয়।
জৈষ্ঠ্যের প্রথম দিনে ভয়াবহ উষ্ণ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে।
-
দিন বদলের পালায়
দিন বদলের পালায়
-রীণা চ্যাটার্জী
সুধী,
ধর্মের নামে বাদী-বিবাদী-র নতুন রূপে রূপসী আমার দেশ, আমার বাংলা, আমার জন্মভূমি, কর্মভূমি। জন্মযোগ, কর্মযোগ সব ধর্মীয় মেরুকরণের পথ দেখাচ্ছে। আমরা দেখছি- কারণ আমরা নিরীহ সংসারী নাগরিক। সংসারের বেড়াজালে জড়িয়ে পেঁচিয়ে পা খালি পেছনেই টেনে নিচ্ছি, এগোনোর ভয় মনের মধ্যে মাকড়সার জাল বুনছে। তবুও মাকড়সার জাল সরিয়ে মনটা মাঝে মাঝেই প্রশ্ন তোলে, ধর্ম দেখতে কেমন? ধর্মের রঙ কি? ধর্মের আহার কি? ধর্মের বাহার! আসলে বর্তমানে ধর্ম তো সবটাই রাজনৈতিক মস্তিষ্কপ্রসূত। শুধু বর্তমানকে দোষ দিয়ে লাভ নেই- রাজনৈতিক রঙ মেখে ধর্ম আগাগোড়াই চলছে, চলবেও। এখন শুধু উলঙ্গপনা ভর করেছে। একে অপরকে কতোটা আঘাত করতে পারবে হয়তো সেই পথেই মুষ্ঠিযোগ সফলতা খুঁজে পাবে। তাই তো ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে মানবতার বন্ধন, ভাষার শালীনতা, সম্বোধনের ঐতিহ্য।
বদলের যুগ এসেছে, বদলাচ্ছে চোখের সামনে সম্পর্কের সমীকরণ, স্নিগ্ধতা, পারস্পরিক স্নেহ-শ্রদ্ধার সূত্রটা বেশ নিম্নগামী, সহমর্মিতা হারাচ্ছে নিত্য… তবুও মন বলছে মানবিকতা আছে বলেই আজও পৃথিবীতে ভারসাম্য আছে। তাই কালের মেঘ কেটে গেলে আবার হাসবে ভরসার সূর্য।
উষ্ণতাবৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী। তবুও উৎসবের আমেজ ঠিক আসে, ঋতু বদলের পালায়। পঞ্জিকা মতে আজ বর্ষবরণের দ্বিতীয় দিন। নবীনের আহ্বানে জানাই নববর্ষের শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।
-
নিরপেক্ষতা
নিরপেক্ষতা
-রীণা চ্যাটার্জীসুধী,
‘নিরপেক্ষতা’ আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ একটি শব্দ। এও সর্বজনবিদিত যারা নিরেপক্ষ থাকতে পচ্ছন্দ করে তারাও আদ্যপান্ত নিরীহ। তারা ঝড়ঝাপ্টা ঝরা পতার মতো ঝেড়ে ফেলে জীবনের সুখী গৃহকোণে আবদ্ধ হয়ে যায় অনায়াসে। একটা দন্ডী কেটে নেয় খুব সুন্দর যুক্তি দিয়ে- ‘আমার তো কিছু নেই, আমি কেন কিছু বলব! আমার কাছে সবাই সমান’ কথাটা এইভাবে ভাবতে গেলে যার পায়ে কাঁচ ফোটেনি সে ধন্য ধন্য করে উঠবে, আর যার ফুটেছে? সেই জানে নিরপেক্ষতা শব্দটা কি অসম্ভব রকমের বিষাক্ত! জীবনের অর্থটাই বদলে যায়, বদলে যায় সম্পর্কের সমীকরণ- কেউ যখন সত্যি জেনেও নিরপেক্ষতায় ছদ্মবেশী হয়ে যায়!
সত্যি করে ভাবতে গেলে নিরপেক্ষতা নিরাপদ হলেও নিরীহ কতোটা? আসল কথা নিরপেক্ষতা হয়তো একটা মুখোশ- যা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে নিখুঁত করে বানানো। নাহলে সত্যকে সত্য বলে মানতে, আর মিথ্যেকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পিঠের ওই গোল গোল টুকরো হাড়ের গঠনটা অনেক মজবুত হতে হয়। বিকৃত বা বিক্রিত মনের কাজ নয়। যার মজবুত সে বড়ো বদ, মুখরা- আরো কত বিশেষণ! কিন্তু সময়ে বড়ো প্রয়োজনীয় ওই মানুষগুলো যারা শিরদাঁড়া নিয়ে অনায়াসেই সত্যের মুখোমুখি হতে পারে। বিপদের দিনে মনে হয় এমন একটা নির্ভরযোগ্য লোক যদি পাশে থাকত, যে সমাজের বুকে সত্যের প্রতিচ্ছবিটা তুলে ধরত। দুর্ভাগ্যবশত সবার কাপলে জোটে না। তাই সত্যিটা অধরা থেকে যায় আর মিথ্যে প্রবাদী বচনে জিতে যায়- ‘চোরের মায়ের বড় গলা’। রামকৃষ্ণ দেব তো বলেই গেছেন- যার যেমন ভাব, তার তেমন লাভ।
লাভের পারানি গুনতে গুনতে জীবনটা কেটে যাবে।চৈত্রের প্রথম সন্ধ্যা, কালবৈশাখীর পূর্বাভাস থাকলেও চৈতালি আসে কি না সেটাই অপেক্ষার। যে এলোমেলো হাওয়া আর সোঁদা গন্ধ ছড়িয়ে জুড়িয়ে দিয়ে যাবে অপেক্ষার কয়েকটি প্রহর।
চৈতালি শুভেচ্ছা ও শুভকামনা সকলের জন্য আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে। -
আজ তবে এইটুকু থাক
আজ তবে এইটুকু থাক…
–রীণা চ্যাটার্জী
সুধী,
শুরুটা আজ একটু অন্যরকম। সেদিন ছিল শিব চতুর্দশীর পুণ্যলগ্ন। দু’পক্ষ কাল পার করে প্রথম সম্পাদকীয়–
(আমার ইচ্ছা প্রকাশ
-রীণা চ্যাটার্জী
সুধী,
দু’পক্ষ কাল পার করে এলো সবাকার “আলাপী মন”। “আলাপী মন” আমার ইচ্ছার প্রকাশ। সাহিত্যের খুঁটিনাটি, খড়কুটো মূল্যবান করে রাখার আশা সাহিত্যের আঙিনায়। সবসময়ের সবক্ষেত্রেই দোসর আমার একমাত্র আত্মজা পরম সহিষ্ণুতায় মেল বন্ধন করালো আমার ইচ্ছা “আলাপী মন” এ। কৃতজ্ঞ আমার প্রিয় সাহিত্যিক বন্ধু অমল বাবুর কাছে, যাঁর সহযোগিতা ছাড়া আমাদের আঙিনা গুণীজনদের সমাহারে সেজে উঠতো না। তিনি পরম বিশ্বাস, ভরসা দিয়ে হাত ধরেছেন “আলাপী মন”এর। সাজিয়ে দিয়েছেন অনেক পরিশ্রমে সাহিত্য কুসুম দিয়ে আমাদের আঙিনা। কৃতজ্ঞ আমি সকল লেখক লেখিকার কাছে যারা প্রথম দিন থেকেই আমাদের সাথী- স্বজন সাথী। অনেক দ্বিধা নিয়ে শুরু হয়েছিল পথ চলা, কালের বাণী কি আমাদের জানা নেই…তবে যাঁদের সহযোগিতা জন্ম লগ্ন থেকে আমরা পেলাম তাঁদের সাহিত্য আলাপন আগামীতেও আমাদের সমৃদ্ধ করবে এই আশায় থাকলাম।
সকল লেখক লেখিকার সাহিত্য রচনায় বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। উৎকর্ষতার বিচারে দুঃসাহস নিয়ে নয় কিছু রচনা মনে ছাপ ফেলেছে…’পঙ্গুত্বের জয়’, ‘দায়িত্ব’, ‘বসন্ত আমার গঙ্গাজল’, ‘ওই মেয়ে’, ‘স্মৃতিপট’ নাম নিয়ে বোধহয় তালিকা বৃদ্ধি পাবে, তাই সবাইকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই।
কুশল কামনা করি সবার জন্য।)
প্রথমটুকু স্মৃতিচারণা। ইচ্ছে হল ফিরে দেখি একবার- পেরিয়ে এলাম পাঁচটি বসন্ত। শিখলাম অনেক কিছুই, জানলাম অনেক কিছু। ভুলভ্রান্তি শোধরানোর চেষ্টা তো অবশ্যই করেছি, জানি না কতোটা পেরেছি।
সার্থকতা- এ এক অমোঘ প্রশ্ন। তবে পথ চলতে চলতে মুখ-মুখোশের তফাৎ চিনেছি। এও জেনেছি- মুখোশ খুলবেই, ও ঢেকে রাখার নয়। তাই মুখের মুখোশী মুখের হাসিও দেখেছি, কষ্ট যে পাইনি তা নয়। তবে আজকাল সহ্য হয়ে গেছে। নম্রতা দেখেছি, ঔদ্ধত্য দেখেছি- তবে আমার জানি না কেন ছোট্ট থেকে মনে হয় প্রকৃত কলম সর্বদা নতমুখী। কলমে প্রতিবাদ সাজে, বিক্ষোভ সাজে কিন্তু ঔদ্ধত্য! কে জানে! তবে আজও অমলিন মুখের হাসি, অকৃত্রিম গলার স্বরে বড়ো শান্তি পাই। শুরু থেকে আজকের দিন পর্যন্ত যাঁরা আমাদের হাত ভালোবাসার বন্ধনে বেধে রেখেছেন তাঁদের কাছে আলাপী মন কৃতজ্ঞ। কারণ মনটুকু ভরসা করেই দিন কাটছে- মনের আলাপ বন্ধ হলে সেদিন? সে হয়তো ইচ্ছের ইচ্ছেমৃত্যু। বাকী দেহ তো নশ্বর…
ফাল্গুনী শুভেচ্ছা ও শুভকামনা আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে।
-
কয়েকটি রবিবার
কয়েকটি রবিবার
-রীণা চ্যাটার্জীসুধী,
আজকের দুনিয়ায় নতুন ঢেউ উঠেছে- সামাজিক নানা মাধ্যমে পুরুষের কান্না (নাকি কান্না বললাম না, ওতে নারীর একছত্র অধিকার) শোনা যাচ্ছে। পুরুষ জাতি যে বড়ো অত্যাচারিত- তা কবিতা, কথকতা, গল্প, ভাষণে বেশ ফলাও করে বলা হচ্ছে, সমমনস্ক সমর্থকরা সমর্থনের বন্যায় (অবশ্যই man made বন্যা, বলতে দ্বিধা নেই) ভাসিয়ে দিচ্ছেন। দায়িত্ব আর কর্তব্যবোধে নুইয়ে পড়া কাঁধ নিয়ে ফ্যাকাসে জীবন-যৌবন নিয়ে বাছাদের বড়ো কষ্ট…
সত্যিই তো একজন সত্যিকারের পুরুষের যে অনেক দায়িত্ব- তা অস্বীকার করার বা তর্ক করার মতো মুর্খতা মোটেই শোভা পায়না। কিন্তু সত্যিকারের পুরুষ কজন! সে বিস্ময় থেকে মনের নিষ্কৃতি নেই।
সামাজিক মাধ্যমের তর্ক ছেড়ে একটু সাংসারিক প্রেক্ষাপটে চোখ রাখি। পুরু সর তোলা দুধ, ঘি, মাখন, ছানা, কাঁটা ছাড়া মাছের পেটি সে সব তো ভাঁড়ারের কথা, মা-ঠাকুমার ভালোবাসা- ও নিয়ে কথা হবে না। যে যার ভাগ্যে খায়…
আরও একটু গভীরে– দাম্পত্য সুখের ফসল সন্তান। প্রসব যন্ত্রণা সহ্য করে দেখুন মহামান্যরা একবার, চোখের সব জল শুকিয়ে যাবে- এ আমার কথা নয়, চিলেকোঠার পাশে কানে কানে বলা দুঃখের কথা, পরম্পরায় ভেসে চলেছে। আর ওই যে বিশেষ চারটি দিন? অশ্লীল শোনাবে বললে তাই না? চুপচাপ সহ্য করতে হয় কিছু যন্ত্রণা মুখে হাসি নিয়ে- জানতে দিতে নেই। এমন শিক্ষাই দিতে হয় মেয়েকে মা’র- তাঁর মা-ও তো দিয়েছিলেন। বয়স পেরিয়ে যায় আজকের মা কালকের ঠাকুমা-দিদিমা হয়ে যায়। তখন নতুন মেয়ের নতুন যন্ত্রণার দিন তাঁদের কাছেও বেহায়াপনা মনে হয়।
এ তো সব মেয়েদের নারী হয়ে ওঠার গল্প।
নারীর সংসার, জীবনের পাঠ- পৌরাণিক কাহিনি বিক্রম-বেতালের কথা মনে করিয়ে দেয়। সেই যে বেতাল রাজার পিঠে চড়ে বলল- সমস্ত রাস্তা মুখ বন্ধ করে চলতে হবে। মুখ খুললেই ছেড়ে চলে যাবে। পিঠে বোঝা চেপে গেল, গল্প শোনার পাঠ শুরু হল, তার থেকে কি শিখতে পারল শেষে তা বলতে হবে, না বললেই খন্ড খন্ড হয়ে যাবার হুমকি। যেই মুখ খুলল- সঙ্গে সঙ্গে আবার শর্তভঙ্গের দায় চেপে গেল। ছেড়ে গেল সেদিনের বহু কষ্টে পেরোনো পথটুকু। আবার নতুন ভোরের অপেক্ষায়…
সংসারে যেদিন মুখ খুলবে সেদিন আত্মীয়-পরিচিতের মুখগুলি আর চেনা যাবে না। আয়নাও অচেনা লাগবে…
আজকের নারী, আজকের পুরুষ- কি চায়, কি বোঝে, কিভাবে চলবে সে তাদের ইচ্ছে, তাদের দায়। তবে আমার কটা বিশুদ্ধ রবিবার চাই- একটা শীতের লেপমুড়ি দেওয়া রবিবার, একটা বর্ষায় ভেজা রবিবারে ধোঁয়া ওঠা উষ্ণ তরল পানীয় চাই, রবিবারের গ্ৰীষ্মের শুকনো দুপুর চাই, চাই কবিতার সঙ্গে একান্তে এক রবিবার, চাই নির্ভেজাল পুরুষোচিত আয়েসী রবিবার। বাকি সব চুলোয় যাক- জন্মজন্মান্তরে নারী জনম আপন করে নেব, শুধু কয়েকটি রবিবারের বিনিময়ে, বড়ো লোভ জাগে পুরুষালি রবিবারে।নতুন বছরের হিমেল হাওয়ায় মিশে থাকা মিঠে রোদ্দুরের উষ্ণ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে।
(সব কথা সবার জন্য যেমন নয়, আবার সব কথা সবার সহ্য হবে, এমনও নয়- তবে বিতর্ক কাম্য নয়, কারণ এ নিতান্তই মনের কথা)
-
ফুটেজ
ফুটেজ…
-রীণা চ্যাটার্জীসুধী,
জীবন যখন মৃত্যুর কথা বলে- জীবিতের ভিড়ে একা একাকী মৃত্যু নির্ভয়ে শুয়ে থাকে। জীবন কাঁদে- কতক তাগিদে, কতক উপসর্গে। উপসর্গ তো একটাই- কান্না, ভীষণ ছোঁয়াচে। পরিবেশ বিষণ্ণ হয়ে উঠতে দেরি হয়না। কতোটা সাজানো, কতোটা গোছানো সে তো অন্য কথা। কিন্তু মৃত্যু তো থামাতে পারে না কিছুই, নিজেই থেমে যায়- সেখানেই বোধহয় জীবনের জয়। জীবনের চোখের জল শুকিয়ে যায়। আবার নতুন সূর্য দেখে, গতানুগতিক। হঠাৎ করে মৃত্যুর কথা হয়তো মনে হতেই পারে অপ্রাসঙ্গিক- আসলে বেশ কিছুদিন ধরে কেমন যেন জানা-অজানা মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। তাকে ঘিরে পরিবেশ তৈরি হচ্ছে- কিছু মৃত্যু মিডিয়ার ভাষায় ‘ফুটেজ’ খাচ্ছে, তার রেশ মিটেও মিটছে না। দিন দিন মহার্ঘ্য হয়ে উঠছে, যতক্ষণ না আরও একটা ভারী ‘ফুটেজ’ খাওয়া মৃত্যু সামনে আসছে।নামী দামী মৃত্যুর হাজার জ্বালা- সবকিছুই প্রকাশ্যে চলে আসবে অনর্গল। খোলা খিড়কি, ব্যক্তিগত বলে কিছু থাকবে না। সুচতুর খোলা চোখ অলিগলি খুঁজে সব বেআব্রু করবে। মৃতের প্রিয়জন, অতি প্রিয়জন কালো কাচের আড়াল খুঁজবে অনুভূতি ব্যক্তিগত রাখতে। সেখানে ভিড় পৌঁছাতে না পারলে ক্যামেরার ঝলকানি উঁকি দেবেই। আসল কথা হলো নামী হলেই নামটা বেচতে হবে- ওটা পাবলিক প্রপার্টি। খবরটা বেচতে হবে, বেচতে জানতে হবে।
বেনামী মৃত্যুর জ্বালা কম কিছু নয়। অর্থে দখল থাকলে শেষকৃত্যে বাঁধা নেই। যেখানে অর্থের অভাব সেখানে শেষকৃত্য পথ চেয়ে বসে থাকে। যতোই হোক মৃত্যু নথিভুক্ত তো করতে হবে। একটা অদ্ভুত ঘটনা দেখলাম- ভোর রাতে আগুন লেগে পুড়ে গেল রাস্তার ধারে একটি ঝুপড়ি। পাওয়া গেল আধপোড়া বিকৃত মৃতদেহ, শেষকৃত্যে দেরি হলো- চাঁদা তুলতে হলো যে, যোগাড় অবশ্য হলো, নমো নমো করে আপদ চুকেও গেল। পরদিন সেই পোড়া ঝুপড়ির ফাঁকা জায়গা দেখে বিয়েবাড়ির বরযাত্রীরা বাজি ফোটালো। তারপর দিন ওখানে একটা নতুন ঝুপড়ি বাঁধতে দেখলাম। সবটুকু ‘ফুটেজ’-হীন। যাওয়া-আসার পথে চোখে পড়লো যার যেভাবে, সে সেইভাবে দেখলো, সেইভাবে ভাবলো। শুধু একটাই সত্য- ওই প্রিয়জনদের শোক লুকোতে হয়নি, কালো কাচের আড়াল লাগেনি। রাস্তার ওপরেই কখনও বুকফাটা কান্না, কখনও নীরবে চোখ মোছা। ফিরে কেউ কেউ দেখেছে, চোখ ফিরিয়ে চলেও গেছে। ফিরে দেখার ‘অত সময় নেই…’ পথচারীদের। পথের শোক, পথেই মলিন হয়েছে অনায়াসে। জীবন ওখানে লিখে গেছে- মৃত্যু ক্ষণিকের, সত্য হলো চরৈবতি…ফুটেজ গড়াগড়ি খায় ফুটপাতে।
জীবনের উষ্ণতার ছোঁয়া শুভেচ্ছা আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে। -
আকাঙ্খিত
আকাঙ্খিত
–রীণা চ্যাটার্জী
নতুন আশা, নতুন ভাষা, নতুন করে ভালোবাসা।ভালোবাসার বন্ধনে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখা, জীবনের রসদ খোঁজা। আলাপী মন-এর বিজয়া সম্মেলন সকলের স্বতস্ফুর্ততায় প্রাণোচ্ছ্বল হয়ে উঠেছিল সবটুকু সময়।
মিষ্টির বাক্স হাতে অতি প্রিয় মুখ-কি মধুর! তবে পরিচিত মুখগুলো দেখলেই মনে আনন্দ দোলা দিয়ে যায়। মিষ্টির বাক্স অবশ্যই উপরি পাওনা। উষ্ণ আলিঙ্গনে মনে যেন সেই এক সুর বেজে ওঠে অজান্তেই, ‘ভালোবেসে সখী নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো..’। আলাপী মন সাধ্য মত আয়োজন করে থাকে, কিন্তু তাকে মনের মাধুরী মিশিয়ে বর্ণময় করে তুলেছেন আলাপী মন-এর উপস্থিত সকল স্বজন সাথীরা।
প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, চতুর্থ মুদ্রণ সংকলন ‘জাগৃতি’র চোখ মেলে চাওয়া, স্মারক সম্মান, গান, কবিতা দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে ধাপে ধাপে এগিয়ে গেছে। বেলা ঘনিয়েছে নিজের নিয়মে- টের পাওয়া যায়নি। মুগ্ধতায় রেশ নিয়ে এগিয়ে যেতে যেতে একটা সময় অনুষ্ঠান যেন এক কিশোর গলার জাদুতে বশ হয়ে গেছিল। আবেশ কথাটা শুনেছি, সেদিন অনুভব করলাম। কারোর মুখে কথা ছিল না- চোখে ছিল অবর্ণনীয় এক অনুভূতি। কবি কাজল দাস-এর পুত্র রূপ- সেদিন যেন রূপ সকলের কাছে হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা। উপস্থিত সকলেই হয়তো আমার সাথে একমত হবেন বলেই মনে হয়। এইভাবেই কেটে গেল বহু আকাঙ্খিত একটা দিন। উপস্থিত সকলের কাছে কৃতজ্ঞ আলাপী মন।
আরো কিছু প্রিয় মুখ দেখার অপেক্ষায় অধীর ছিল মন। কিন্তু মনকে বোঝাতে হয় সবকিছু একসঙ্গে পাওয়া যায় না- বিধির বিধান মেনে তো নিতেই হয়।
হেমন্তের শিশির সিক্ত শুভেচ্ছা আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে সবার জন্য। আগামী শুভ হোক।
-
উৎসবে ও উৎসে
উৎসবে ও উৎসে
-রীণা চ্যাটার্জীসুধী,
উৎসবের আমেজ নিয়েই শরতের যাওয়া-আসার শর্ত। আকাশ-বাতাসে উতলা স্বর, মন যেন ছুটি খোঁজে নিত্যদিনের দিনপঞ্জি থেকে। বাঙালির প্রিয় উৎসব আর এই উৎসবের আবহে বেশ কিছুদিনের শিথিলতা। কারোর ভাবনার ঘরে তালা, কারোর ভাবের ঘরে তালা। উৎসব আমাদের মনটাকে নিয়ে যায় অন্য আবহে- যেখানে প্রিয়জনকে কাছে পেতে চায় মন, আনন্দঘন মুহূর্তগুলো ভাগ করে নিতে চায় সাধ্যমত। আবার এই উৎসব ঘিরেই কত অচেনা মুখ পরিচয়ের গণ্ডী ছুঁয়েই আপন হয়ে ওঠে। কোনো কোনো পরিচিতি উৎসব শেষেও সম্পর্কের গ্ৰন্থিতে বাঁধা পড়ে, আবার কিছু পরিচয় আতস বাজির মতো ক্ষণিকের। আতস বাজির কথায় মনে এসে গেল আরো এক উৎসব- কালি পুজো, দীপাবলী, দীপান্বিতা। ওই একটা দিনেই বহু রূপে ঈশ্বরের আরাধনা- বিবিধ আচার। বাঙালি বড়ো আবেগপ্রবণ- আবেগের ধারায় ভেসে থাকে জলে যেমন পঙ্কজ ভাসে। বাঙালীর বোধহয় পঙ্কজ না হয়ে উপায় নেই। হঠাৎ করে যেভাবে ধর্মীয় সন্তানরা রীতিনীতি, সনাতনী, পুরাণ, বেদ, শাস্ত্রীয় আচারণ, সামাজিক আচরণ সবকিছু নিয়ে উৎসবের আবহে সমালোচনার ঢেউ তুলছেন তাতে ভাবনায় বেশ ধকল লাগছে। উৎস খুঁজলে একটা কথাই ভাবতে বাধ্য করছে মানুষ আগে না কি ধর্ম আগে! ধর্ম মানুষ সৃষ্টি করলো না কি মানুষ ধর্ম সৃষ্টি করলো? সাধারণ জ্ঞান তো বলে ধর্ম মানুষের সৃষ্টি, আর ধর্মকে ধারণ করতে কিছু আচরণের ব্যয়-বৃদ্ধি। সমাজ যখন মানুষের তৈরি সম্মিলিত সংস্কৃতি। সব যখন মানুষের হাতেই গড়া- তাহলে সামাজিক আচরণ তো ধর্মের আঙিনায় বেড়ে ওঠে। আলাদা হয় কি করে? এইসব সাজানো রীতিনীতি, যা সুযোগ মতো সুযোগসন্ধানীরা চাপিয়ে দিয়েছিলেন বা দিয়েছেন। ক্ষত তৈরি করেছেন। পুরাণ বা সনাতন ধর্ম যা কিছুই হোক না কেন তৎকালীন সমাজ ও ধর্মীয় সন্তানরা দায় এড়াবেন কোন শর্তে? হঠাৎ করে যেন মনে হচ্ছে সেই ধার্মিক সন্তানরা আবার মাথাচাড়া দিয়েছেন। ইতিহাস না কি সব বিকৃত, নতুন করে গড়ে নিতে মজবুত হয়ে ওঠার ডাক দিচ্ছেন। জানি না, আজ যদি সত্যি করেই নতুন ইতিহাস লেখার চেষ্টা হয়, আগামী কবে তাকে “বিকৃত” উপাধি দেবে- অহেতুক রক্তক্ষরণের আভাস তাই থেকেই গেল ‘ধর্ম’ নামাঙ্কিত টোলের মহিমায়।আগামী ২৯ অক্টোবর আলাপী মন-এর বিজয়া সম্মেলনী। আলাপী মন-এর চতুর্থ মুদ্রণ সংকলন ওইদিনেই উষ্ণতার স্পর্শে চোখ মেলবে স্বজনসাথীদের উপস্থিতির মাঝে। ব্যস্ততায়, অপেক্ষায়, আশায় কেটে যাবে মাঝের কয়েকটি দিন।
আগামীর শুভেচ্ছা ও শুভকামনায় আলাপী মন।
-
ফাঁকে পাঁকে
ফাঁকে পাঁকে
-রীণা চ্যাটার্জীযা দেখছি, যা শুনছি, বলা ভালো দেখতে বা শুনতে বাধ্য হচ্ছি- এটাই গণতন্ত্র তো?
গত মাসে গুটি কয়েক সুশিক্ষিত নাগরিক ৭৬ তম না কি ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস এই নিয়ে বিতর্ক ও বাদানুবাদে বেশ খানিকটা সময় উপভোগ করলেন। কিন্তু তাঁরা যদি একটু বলতেন! কিসের স্বাধীনতা? কোথায় স্বাধীনতা? আলো দেখতে পেতাম নতুন করে। বিরোধী পক্ষ বা প্রশাসনিক পক্ষ যার কথাই ধরি না কেন- আপনারা উভয়েই ঠিক বলছেন তো? এ যেন স্ব-গর্বিত সুপ্রাচীন গণতন্ত্র বা স্বাধীনতার অন্তরালে এক ভয়ঙ্কর আতঙ্ক। কেউ বলছেন, ওরা একটা মারলে আমরা দশটা মারব। আবার কারোর বক্তব্য ‘গুলি’ই নাকি সঠিক দাওয়াই। দশটা মারুন আর গুলি করে মারুন কাকে মারবেন? যদি প্রকৃত অর্থে পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব জীবনচক্রে উপভোগ করে থাকেন সেই স্নেহের পরাকাষ্ঠার দোহাই দিয়ে বলি, শুরু হোক নিজের ঘর থেকে… আর নিদেনপক্ষে মনুষ্যত্ব বলেও কিছু থাকে একটু ভাবুন- কতোটা অধিকার কাছে আপনাদের কাউকে মেরে ফেলার। গাছের প্রাণ আছে, ওরাও ব্যথা পায় ভারত শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু আবিস্কার করেছিলেন, সেই নিয়ে আমরা ভারতবাসীরা গর্ব করতে পারি, কিন্তু মানুষের প্রাণ? ওটা মনে হয় আলাদা করে ভাবার দরকার নেই, গোটা কয়েক দুর্মূল্য জীবন ছাড়া বাকি সব কুরুক্ষেত্রের পাশার ছকেই থাক। দরকার মতো টেনে নিলেই হবে।
আসল কথা ক্ষমতা বড় বালাই- যার আছে তার, যার নেই তারও। একপক্ষের ক্ষমতা প্রদর্শনের পালা, আর একপক্ষের বৃথা আষ্ফালনের। আবার যুক্তি তক্কো তো আছেই, ওরা এর থেকে বেশী করেছে, ওদের আমলে এর থেকে বেশী হয়েছে, এ রাজ্যের থেকে ও রাজ্যের অবস্থা আরও খারাপ- খবরটা ভালো করে দেখো বা ইতিহাস বলছে এই ঘটনা আগেও হয়েছে ইত্যাদি, প্রভৃতি। আরে বাবা, যদি সেই চর্বিত চর্বনেই থাকতে হবে, তবে তোমরা পরিবর্তন ঢাক কেন বাজালে? শুভাকাঙ্খী কেন সাজলে? বেশ তো ছিলাম এক পাঁকে, এই ফাঁকে ফাঁকে পাঁক- এখন উদ্ধারের পথ?পরিবর্তন, উন্নয়ন সব কি বাহ্যিক! মাটি কেটে রাস্তা হলো, সেতুবন্ধন হলো। কিন্তু মানুষের আত্মিক উন্নতি হলো কি? সম্পর্কের সেতুবন্ধন! আসলে গাছটাই তো উপড়ে ফেলা হয়েছে, ফুলের আশা করা বৃথা। কিন্তু শিকড়ে বড়ো টান- মায়ের মনটা বড়ো ভীত আর সন্ত্রস্ত …তবুও ‘চেতনা আসবে’ এই আশাই জেগে থাক টিমটিমে মৃৎপ্রদীপের স্নিগ্ধ আলোর স্তিমিত ভাবনায়।
অন্তরে যাই থাক, তিলোত্তমা কিন্তু সেজে উঠেছে বহিরঙ্গে, বাঙলা-বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব শরৎ-পার্বনে। শরত শিশিরের সিক্ত শুভেচ্ছা ও শুভকামনা আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে।