• কবিতা

    ব্রিফকেস

    ব্রিফকেস
    – সুপ্রতিম রং

     

     

    আজ আমি ব্রিফকেস গুছিয়ে চলেছি ;
    সমস্ত বে-রঙীন – রামধনু মাখা প্রেমকে
    পরিপাটি ভাঁজ করে; স্তরে স্তরে ।

    সেদিন সেই অস্ত শরীরের; ঘেমো
    কোঁচকানো ভালোবাসা নামক যে জামাটা
    তুমি খুলে ফেলেছিলে নীলা !
    নাকাচা অবস্থায়, বার কয়েক ইস্ত্রি করেছি ;
    তোমার গায়ের গন্ধটাকেও ভাঁজ করেছি;
    রেখেছি সবার নীচে, যাতে উবে না যায় !

    প্রকান্ড ঝড়ের তান্ডবে যখন
    মশারী সমুদ্রে তুফান এসেছিল; এক তিল
    নক্ষত্রও আলো দেয়নি; বিদ্যুৎ ঝলকানিতে
    দেখেছিলাম তোমার শরীরের চালা ওড়া;
    তোমার নিজের ঘর; কী অপরূপ সজ্জা !

    সেদিন আমি প্রথম; বিশ্বাস কর – সেই প্রথম
    সমুদ্রে স্নান করেছিলাম; ঢেউয়ের অনুভব
    করেছিলাম গোটা শরীর; দু’হাতে তখন আমার
    দুটো ঢেউ; পরের ঢেউ আরও বড়ো;
    ময়ালের মতো পেঁচিয়েছিলে তুমি আমায় !

    তারপর প্রকৃতি আরও ভয়ঙ্কর;
    কেবলই আমাকে গড়িয়ে খাদে টানছে;
    এলোপাথাড়ি শুধু খামচেছি ; নখ- হাতে
    মুঠো মুঠো মাটি; অবশেষে খাদ ;
    উথাল-পাথাল জলের তোড়ে ভেসে যাচ্ছি;
    গোগ্ৰাসে গিলছি সফেন; বড্ড নোনতা।

    ছূঁড়ে ফেলে দিল আমাকে; সবুজ ঘাস;
    অবিরাম বৃষ্টি – কী শান্তি !
    শান্ত হয়েছে তান্ডবী; আমি ভাসতে চাই।
    তামাটে গাত্র রক্তাভ আভা দিচ্ছে; ভালো লাগছে, বেশ লাগছে –
    সমুদ্র দু’ফাঁক করে সাঁতরে চলেছি আমি ।

    আজ আমি ব্রিফকেস গুছিয়ে চলেছি ;
    কচি-কচি ঘামের নোনতা বিন্দুটাও নিয়েছি;
    মুঠো করে আনা সমুদ্র সফেন এক কৌটোও ;
    এই ঢোকালাম; ইস্ত্রি করিনি –
    আমাকে আর জামা পড়তে হবে না; তুমি
    দু’হাতে এঁকেছ আমায় ।

    আজ আমি ব্রিফকেস গুছিয়ে চলেছি।
    – সুপ্রতিম রং

You cannot copy content of this page