-
সেও বলে গেল
সেও বলে গেল
-স্বপন কুমার রায়মাঝে মাঝে অদৃশ্য হয়ে ঢুকে পড়ি
তোমাদের ষড়যন্ত্রে ;
পলাশীর বিশ্বাসঘাতক কঙ্কালগুলি তখন লজ্জায়
ফিসফিস করে ,
যাবার সময় আমার বিস্ফোরিত মানব আত্মা
রেখেছিলাম ,গোপন অন্ধকার কুঠুরিতেযেন,কখন জানি লখীন্দরের মৃত্যুর আগে
মনসা আমার আত্মা গিলে ফেলে ;
ফিরে এসে ছুঁয়ে দেখি গোপন কুঠুরি অভিশাপে ভর্তি ;
আমাকে তাড়া করে নিয়ে বেড়ায়
হূল ফোটান অজস্র স্বাধীন বোলতা,দেশ বিক্রির দালাল আমি —
আমাকে আর সইতে পারে না আমারি দেশের মাটি,আমার বৃত্তের বেষ্টনি স্বাধীন সংঘবদ্ধ প্রতিবাদী হাত
আমি নদীকে একটু দাঁড়াতে বলি,—
সে তখন আরও ভয়ার্ত মূর্তি
আমি সূর্যের আলোগুলো ধরতে চাই, —সে তখন আমাকে পোড়াতে চায়
আমি বাতাসে ভয়ে ভয়ে কান পাতি ,—-
সে তখন আমার উপর গরম নিঃশ্বাস ফেলে !আমি ভোরের অপেক্ষা করি ,
ভোরের সুমিষ্ট পাখিটিও কর্কশ সুরে আমাকে শাসিয়ে গেল ,
দ্বাদশীর ম্লান জোছনা আমার শিয়রে মৃত্যু
—– সে কথাই বলল ! -
গণতন্ত্রের নামাবলি
গণতন্ত্রের নামাবলি
-স্বপন কুমার রায়চারদিকে অবিশ্বাস্য গণতন্ত্রের আস্ফালন
তালিমারা গণতন্ত্রের ফাঁকগলে চোরা রক্ত স্রোত,
হবু রাজা গবু মন্ত্রীর হরবোলা মুখে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি
যেন উদ্যত নাগিনীর বিষাক্ত ছোবলে
কেড়ে নেয় সুশীল প্রাণ ,
আজ প্রান্তিক মানুষ গণতন্ত্রের বাজারে পণ্য
ক্রেতা বিক্রেতার সম্পর্কে সামন্ততন্ত্র ;
যেন স্বাধিকার কেড়ে নেয় দেশ বিক্রির দালালের মতোই নগ্ন নির্লজ্জ হাত ,
ধর্মের সন্তান রক্তমাখা দাঁতের কুটিল হিংস্রতায়
বাঘ নখ উঁচিয়ে , গিলে ফেলে —–
নিস্পাপ যিশু আর অহিংস বুদ্ধের আত্মা
নাকের শ্বাস প্রশ্বাসের গরম বাতাসে ঝলসে যায়
শিশু থেকে বৃদ্ধা ;গণতন্ত্রের নামাবলি বিনা পুঁজির ব্যবসা ফাঁদে
চারদিকে বুভুক্ষ মানুষের আর্তনাদ ; দুঃসহ বেকারত্ব বাড়তে থাকে ;
গণতন্ত্রের ফাঁক গলে ; এ কোন নব্য রাজতন্ত্র ?স্বদেশ রাজার রক্তে নাদির শাহের
অর্থললোপ বরবর্তা
যেন সাম্রাজ্যবাদীর পৈশাচিক রক্ত নেশায় বীভৎসতা
আজও নারীর অধিকার সংরক্ষণেও ; পুরুষের ব্যভিচার
কামুক ভালোবাসার পরতে পরতে নিষ্ঠুরতা
সবার অলক্ষ্যে গুমরে কাঁদে কুমারী মা ;
চরম মাৎস্যন্যায় অবসানে ,
মা তুমি —
প্রজাপুঞ্জ গোপালের জন্ম দিতে পারনা ?শুধু সময়ের অপেক্ষা ; —–
অসহ্য বেকারত্বের দহনে পুড়ে যাবে নব্য রাজতন্ত্রের চামড়া ,
বাতাস হবে ক্ষীপ্ত
সূর্য হয়ে উঠবে তেজ দীপ্ত
পুড়ে যাবে তোমাদের কৃত্রিম হৃৎপিন্ড
ছাই হবে দশেহারা রাবণ ;
শান্তির জোছনায় ফুটপাতে জন্ম নেবে
অজস্র যিশু আর বুদ্ধের আত্মা !আমি যেন না দেখি গীতাকে শপথ করে ধর্মকে অপবিত্র
ভোরের আজানে মৃত সূর্যের জন্ম
সবুজের গালিচায় ফোঁটা ফোঁটা রক্ত ;
আমার মায়ের শরীরে আবারও যেন না লাগে কলঙ্ক ;
অধমৃত আত্মার চোখ ঠিকরে জ্বলে উঠুক
বিদ্রোহী সত্তা
হৃদপিন্ডের স্পন্দনে ধ্বনিত হোক মানব বন্ধন ,
প্রতিবাদের ভাষায় গর্জে উঠুক স্বাধিকার ;
আমি আমৃত্যু পেতে চাই জন্ম অধিকার
—— এই আমার দৃঢ় অঙ্গীকার |