রামধনু রঙ
-রুমাশ্রী সাহা চৌধুরী
আকাশ জুড়ে মেঘের খেলা হঠাৎই ঝেঁপে এলো বৃষ্টি, উর্মি ছুটে এলো ব্যালকনিতে জামাকাপড়গুলো তুলে ফেলতে। চোখেমুখে বৃষ্টির ছোঁয়া লাগতেই উর্মির মনে এলো ছোটবেলার গান,’আয় বৃষ্টি ঝেঁপে, ধান দেবো মেপে। ভাবতেই হেসে ফেলে উর্মি,বৃষ্টি পড়লে কি মজাই না করতো ওরা। আর শিল পড়লে তো কথাই নেই, টিনের চালে টুপ্ টাপ্ আওয়াজ পেলেই বারান্দা দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিত উর্মি। হাতে একটুকরো শিল পড়লেই পুরে দিত মুখে। আর তারপর ওই ঠান্ডা হাতটা বুলিয়ে দিত চোখে মুখে, এখনো চোখ বুজলেই উর্মি সেই ঠান্ডা পরশ অনুভব করতে পারে।
উত্তরবঙ্গের মেয়ে উর্মি , ছোট থেকেই সবুজ প্রকৃতির সাথে তার বন্ধুত্ব । ঘুম ভাঙতো পাখির একটানা মিষ্টি কিচির মিচির ডাকে,আর বাবার ডাকে, “মনি ওঠো , মুখ ধুয়ে রেওয়াজ করে পড়তে বোসো।”খুব নিয়ম মেনে চলতেন বাবা মা । কোনদিন উর্মি দেখেনি ওদের দেরি করে ঘুম থেকে উঠতে। সুন্দর ছন্দে বাঁধা ছোট্ট জীবন, ছোট ছোট চাওয়া পাওয়া তাতেই কত অঢেল আনন্দ ছিল জীবনে। একটা দুটো নতুন জামাতেই খুশি হয়ে কাটিয়ে দিত মজা করে পূজোর চারটে দিন।এখনও ছবির মত সব স্মৃতি ভীড় করে আসে, মনে পড়লে নেচে ওঠে মন।
সূর্য প্রণাম করে শুরু হতো উর্মি র দিন, আর তারপর রেওয়াজ , ” ভোর হলো বিভাবরী ,” । পড়াশোনা তে খুব ভালো ছিলো উর্মি , বাবা কে কখনো ভাবতে হয় নি তাকে নিয়ে ।বাড়ীর কাছের স্কুলেই উর্মি পড়তো তাই এখন মিষ্টি কে নিয়ে উর্মির যা চিন্তা উর্মির মা বাবাকে কখনো তেমন চিন্তা করতে হয়নি তাকে নিয়ে।লেখাপড়া, গান, আঁকা আর বন্ধুদের দের সাথে বিকেলে খেলা , কি ভালো জীবন! তখন তো এত ইঁদুর দৌড় ছিলোনা। উর্মিরা তখন শুধু পড়াশোনা করত আনন্দে।
এখন মিষ্টি র দিকে তাকালে সত্যি উর্মি র মন খারাপ হয়ে যায়। কি বিশাল ব্যাগ এর বোঝা মেয়েটার , ওতো কখনও দেখলোই না প্রজাপতির পাখার বাহারি রঙ।প্রজাপতি আর ফড়িং এর পেছনে ছুটে বেড়িয়ে কত সময় যে কেটে যেত ওদের। নিজেও মনে মনে কতসময় যে প্রজাপতি হয়ে গেছে উর্মি ছেলেবেলায়, ভাবলেই নেচে ওঠে মন টা | মনে মনে উড়ে গেছে প্রজাপতিদের দেশে গাইতে গাইতে ,’ কোথায় পেলে তুমি এমন রঙিন পাখা ।’
মিষ্টির জগৎ you tube , google , এখন মিষ্টি র হাত ধরে উর্মিও কিছুটা শিখেছে , পা দিয়েছে ইন্টারনেট এর দুনিয়ায় এখানেই তার বিশ্বদর্শন হয়ে যায় ।
তবু ও উর্মি র যেন মনে হয় ,” ছেলেবেলা ছিল ভাল।” ইশ ! যদি মিষ্টি র হাত ধরে আবার ও সেই বুড়ো বট গাছের তলায় বসে দেখা যেত টিয়া পাখির ঝাঁক , কি মজাই না হত !
উর্মি র ছোট বেলার সেই গ্রাম এখন আধা শহর , বাবা অবসর নেবার পর সেই গ্রাম ছেড়ে শহরে বাড়ী করে এসেছেন অনেকদিন। আজ বাবা ও আর নেই গত বছর হঠাৎ চলে গেলেন।
টিয়া আর ফড়িং এখন আর সেই আধুনিক গ্রামে আসে না | মিষ্টি কে নিয়ে বাবা মায়ের সাথে ছোটবেলার গ্রামে গিয়েছিলো উর্মি কিন্তু খুব হতাশ হয়েছিলো পুরনো অনেক কিছুই আর নেই, ওর পুরনো বুড়ো বটগাছ টা আর নেই। সেখানে আর ঝাঁকে ঝাঁকে সবুজ টিয়ারা আসেনা। যে বড় মাঠে ওরা খেলতো সেই মাঠে আজ বাড়ী উঠেছে। কিন্তু গ্ৰামের মানুষের আন্তরিকতা একটুও কমেনি। বাবা, মা আর ওদেরকে দেখতে ভীড় জমিয়েছিলো সবাই। উর্মির মনে হয়েছিলো এই আপনজনেরা বোধহয় কখনও পর হয়না। ভালোবেসে ওদের গাড়ীতে কেউ তুলে দিয়েছিলো গাছের বাতাবি লেবু , গন্ধরাজ লেবু। জমির মুসুর ডাল , নারকেল আর গাছের কাঁচামিঠে আম। গাছে আম ঝুলতে দেখে মিষ্টির সেকি আনন্দ!উর্মিও খুশি হয়েছিলো মিষ্টিকে আমবাগান দেখাতে পেরে। আর দেখিয়েছিল বাবুই পাখির বাসা। ‘ওই দ্যাখ মিঠাই তালগাছ থেকে বাবুই পাখির বাসা ঝুলছে।
কলকাতা র ফ্ল্যাটে দুপুরে একা শুয়ে উর্মি কখন যে পৌঁছে যায় এলেঙ্গি নদীর ধারে, কি সুন্দর ছোট নদী! ঠিক রবিঠাকুরের ছোট নদীর মত।জেলে রা ছোট্ট জাল ফেলে মাছ ধরতো , বাবা সকালে হাঁটতে বেরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন নদীর ধারে । বলতেন ,” আজ কি মাছ উঠলো গো ?” ওরা বলতো আজ বোরোলি , খয়রা আর রাইখর মাস্টারমশাই । একটু দাঁড়ান আমি ডিঙি নিয়ে আসি।
বাবা নিয়ে আসতেন সকালে সেই সব মাছ , হাত ভর্তি করে। কখনো বা জেলেনী মাছ এর ঝুড়ি নিয়ে এসে হাক দিতো ,” জ্যান্ত কালিবাউস , রিঠা আর আড় মাছ এনেছি , দাদা নেবেন নাকি ? ” গ্রামের সবাই কে বাবা সম্পর্কে বেঁধেছিলেন , কাউকে দাদা, কাউকে বোন , কাউকে নাতি , কেউ ভাগ্নে আবার কেউ মামা । এই মেছুনী কে বাবা ডাকতেন বোন । উর্মির আলিয়া পিশি। গরম কালে ফুলহার নদীতে উঠতো গলদা চিংড়ি, এমন চিংড়ি কলকাতায় পাওয়া যায়না। হিমঘরে রাখা মাছে সেই স্বাদ কোথায়? চিংড়ির ঘিলু ভরা মাথাগুলো দিয়ে মা যে কি চমৎকার বড়া বানাতেন আহা! গরম গরম ঘি মাখা ভাতের সাথে সাথে একটু একটু করে বড়ায় কামড়, মনে পড়লে এখনো জিভে জল আসে।
কত জ্যান্ত মাছ মা কাটতে বসতেন আর উর্মি বসে দেখতো , কখনো বা নিজেই বসে পড়তো মা এর সাথে হাত লাগাতে , খুব সামান্য কিছু দিয়ে রান্না করা মা এর হাতের মাছের ঝোল এখনো যেন তার স্বাদ পায় উর্মি | আজ কাল কত কিছু রান্না করে উর্মি কিন্তু মা এর রান্না র মতো কিছুই হয় না ।
কখনো বা ফুলহার নদী তে পাঁচ কেজি র রুই ধরা পড়তো , সেই সময় কাটা মাছের চল ছিল না| বাবা পাকা রুই পছন্দ করতেন বলে মা কে দেখতাম কি নিপুন ভাবে সেই মাছ কেটে ভাগ করতেন | উর্মি গালে হাত দিয়ে মা এর পাশে বসে দেখতো মা এর মাছ কাটা |
এসব গল্প মিষ্টির কাছে করলে মিষ্টি বলে দিদু তো এখন মাছ ই খায় না , দিদু এসব করতো ?
বাবার বন্ধুরা এলে কখনো এলেঙ্গি বা কখনো ফুলহার নদী তে নৌকাভ্রমণ চাঁদনী রাতে , কি অপূর্ব সেই সব রাত ! সূর্য অস্ত যাবার ঠিক আগে নৌকো ছাড়তো , আর নৌকো তে বসে রূপোর থালার মতো চাঁদ দেখা | সাথে উপরি পাওনা মায়ের হাতে তৈরি নিমকি , নাড়ু , পুলি , আড্ডা আর গান । ‘ও নদীরে—একটি কথাই শুধাই শুধু তোমারে, বলো কোথায় তোমার দেশ।’
সবুজ রাজার দেশের মেয়ে উর্মি এখন ফ্ল্যাট বন্দি , সোনালী শহরের উর্মিলা।স্বামী অংশু , মেয়ে মিষ্টি আর শাশুড়ি মা কে নিয়ে তার ছোট্ট সংসার ।
তবুও কোথায় যেন উর্মি একা, উদাসী । মিষ্টি শিখিয়েছে মা কে গুগল সার্চ করে রান্না , বেড়ানো যা যা মা এর পছন্দ দেখতে।এই ভাবেই দিন কেটে যায় , কখনো একদিনের জন্য অংশু নিয়ে যায় দীঘা অথবা শঙ্করপুর , একঝলক খুশির হাওয়ায় মেতে ওঠে উর্মি। প্রাণভরে খোলা হাওয়ায় শ্বাস নেয়। অংশুর ও খুব ভালো লাগে উর্মিকে খুশি দেখতে কিন্তু অফিসের কাজের চাপে ওদের ভালো করে সময় দিতে পারেনা।
মিষ্টির পরীক্ষারপর এই প্রথম অংশুর বন্ধুদের সাথে একটু দূরে যাবে ওরা , ভুটান।সবাই খুব খুশি , সবচেয়ে মিষ্টি।ফুন্টশিলিং যাবার পথে আনন্দে যখন কলকল করছে সবাই , উর্মিও খুব উচ্ছ্বল প্রাণ ভরে উপভোগ করছে রাস্তা সবুজ চা বাগান , নদী। হঠাৎ চাবাগানের ধারে গাড়ি থামিয়ে একটা ছোট্ট রিসর্ট দেখে সবাই বললো আজ এখানেই থাকবে, দারুণ সুন্দর জায়গাটা। কিন্তু জায়গা আছে তো? ওরা মুখ চাওয়াচাওয়ি করে। অংশু আজ দারুণ মুডে, হাসতে হাসতে বলে ,’কুছ পরোয়া নেহি, হাম্ হ্যায় না’। তারপর হাসতে হাসতে ভেতরে চলে যায়। উর্মিরা আর বাচ্ছারা তখন ব্যাস্ত সবুজের ছোঁয়া নিতে।
হাসতে হাসতে কিছুক্ষণ বাদে বেড়িয়ে আসে অংশুরা, বলে সব ব্যাবস্থা পাকা করে এলাম।আজ এখানে আনন্দ করো সবাই, বিশ্রাম নাও, কাল আবার যাত্রা শুরু । চোখ জুড়িয়ে গেলো উর্মি র একদিকে ছোট্ট নদী এলিং আরেকদিকে চাবাগান আর শাল গাছের জঙ্গল , কি অপূর্ব !
জায়গা টার নাম মধুবনী , কি সুন্দর নাম ! উত্তরবঙ্গে তার ছেলেবেলা কাটলেও কখনো আসেনি এখানে।রাতে ক্যাম্পফায়ারে কি আনন্দই না করলো মিষ্টি আর অংশু র বন্ধুর বাচ্ছারা। উর্মি তখন বারান্দায় চেয়ার পেতে শুনল ঝিঁঝি পোকার গান আর দূরে হরিণের আর ময়ূরের ডাক | ভোর হতেই অংশু মিষ্টি কে ডাকলো ,” মিঠাই চল , আমি , তুই আর তোর মা ঘুরে আসি , দেখিতো তোকে আর মা কে ফড়িংয়ের নাচ দেখাতে পারি কি না ?
মিষ্টির হাত ধরে উর্মি অংশু র সাথে হাটতে হাটতে এলো শালবনের জঙ্গল এর পাশে এলিং নদীর ধারে , ভোরের মিঠেআলো তে চিক চিক করছে নদীর জল | জেলে কে ছোট জালে মাছ ধরতে দেখেই ছুটে যায় উর্মি , কি মাছ পেলে ভাই ? ” “দিদিমনি, খোলশে আর পুঁটি গো , নিবা নাকি?” নাগো আমরা তো এখানে বেড়াতে এসেছি। একটু এদিকে এসোনা তোমার খলুইটা নিয়ে ,আমার মেয়টাকে দেখাই মাছগুলো। জ্যান্ত মাছ দেখে খুশিতে লাফিয়ে ওঠে মিষ্টি , বলে ,’ওমা মাছগুলো এখনো কেমন লাফাচ্ছে গো।’
হঠাৎ চোখ পড়ে নদীর ওপর দিয়ে শাল বনের দিকে উড়ে যাচ্ছে টিয়া পাখির ঝাঁক।ঐ দেখ আকাশে তাকিয়ে মিষ্টি , এক ঝাঁক টিয়াপাখি। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে মিষ্টি, অংশু চেষ্টা করে ওদের ক্যামেরাবন্দী করতে। খুশি তে হাততালি দেয়উর্মি আর মিষ্টি ।
অংশু উপভোগ করে পাহাড়ী নদী আর ঝর্ণা র মতো উচ্ছ্বল দুই মা আর মেয়ের আনন্দ ।
মিষ্টি র হাত ধরে এবার আসে চা বাগানে উর্মি , সবুজের চাদর দুচোখ জুড়িয়ে দেয়।হাত দিয়ে কচি পাতাগুলো কে আদর করে উর্মি আর মিষ্টি র গলা জড়িয়ে সেলফি তোলে ।
হঠাৎ ছুটে যায়উর্মি কি সুন্দর হলুদ ফুল ফুটেছে , তারপর ঠোঁটে আঙ্গুল ছুঁয়ে চুপ করতে বলে মিষ্টি কে , ইশারা করে দেখায় রঙ্গিন প্রজাপতি গুলো কে ।
খুশি তে ছেলেমানুষ হয়ে ওঠে উর্মি , মিষ্টির কানে কানে বলে ওই দেখ , ঘাসে ফড়িং বসে আছে , লম্বা লেজ আর কি স্বচ্ছ ডানা দুটো |আওয়াজ করিস না উড়ে যাবে ।
আজ উর্মি সত্যি আবার যেন নতুন করে দেখলো তার কিশোরী বেলা কে মিষ্টি আর অংশু র হাত ধরে ।
অংশু ও আজ তৃপ্ত , আজ মিষ্টি আর উর্মি র সাথে সে ও অনুভব করলো প্রকৃতি কে ।
ওরা ফিরতেই অংশু র অন্য বন্ধুরা হাসির রোল তুললো এসব কি হচ্ছে আমাদের ফাঁকি দিয়ে ? অংশু র বন্ধু রিক উর্মি কে বললো , ‘অংশু তোমার কত খেয়াল রাখে উর্মি ।’
অন লাইন এ দেখে এই জায়গা টা তোমার জন্য পছন্দ করেছিল অংশু কারণ এখানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতি আসে , একটু দূরে একটা ফার্ম ও আছে ।এই বলে হেসে ওঠে রিক , হাসতে হাসতে অংশু কে বললো ,” কি রে প্রজাপতি দেখলি ?”
অংশু হেসে উত্তর দিলো আজ মধুবনীর
প্রজাপতিদের সাথে পাখা মেলেছিল উর্মি আর মিষ্টি ও , ওদের রঙ্গীন পাখনা দেখেআমারও মন ভরে গেছে ।চল এবার বেরোনো যাক ।
উর্মি র মনে আজ হাজার প্রজাপতির রঙের রামধনু । অংশু ওকে নিয়ে এসেছে সব পেয়েছির দেশে । মিষ্টি মা এর কানে কানে বললো ,” মা , বাপি তো আমার হিরো ছিলই , আজ থেকে তোমার ও হিরো , কি বলো ? হেসে ফেলে উর্মি ।
খুব ভালো
Anek dhonyobad
গল্প বেশ সুন্দর
মনে হল আমিও ছিলাম তোমাদের দলে, না হলে প্রজাপতির রংমহলে! একদম। বালয়স্মৃতি মনে হয়ে গেল বৃষ্টি,শিল্পিরা,মুখে দেয়া সব তো ছোটবেলার স্মৃতিতে ভরপুর। খুবই ভাল লাগল তাই। নিজের কথা এত সুন্দর করে গল্পে তুলে ধরে—-মন ভরে গেল পড়ে।
খুব ভালো লাগলো
দারুন
How nicely recalling of childhood flavour. Really appreciable writing. Getting lost the writing, and got into my real childhood time. Excellent. Expected to be a renowned writer. Stay blessed. My cordial wish given to.
ভাল লাগলো। মনে হল যেন আত্মজীবনী মূলক। উত্তরের সবুজ কাপেট, প্রজাপতি পাখা সব যেন মিলে মিশে এক দারুন উপস্থাপনা।
লিখা তো তোমার খুব ভালো হয় l তবে আমি একটু আলাদা প্রশ্ন করব তুমাকে l উর্মির চরিত্রে কি নিজের কথাই লিখেছো না এটা নিচক গল্প l
Eta osadharon………….
Mon pran juriye gelo. Muhurter janye aanmona hoye chole gelam chotto beelar phele aasha din gulote.
অসাধারণ
Asadharon
অনেক শুভেচ্ছা সবাইকে