কবিতা

ক্ষুধার মাতৃভাষা

ক্ষুধার মাতৃভাষা
-শর্মিষ্ঠা শেঠ
মৌলবীবাড়ির রমজান আলী
পুরা গেরামের সবচে ধনী,
প্রতি শুক্কুরবার জুম্মার পর
একশজন খাওয়ান গুনি গুনি।
মসজিদের সামনে লাইন করে
বসেন গরিব মুসল্লিগণ,
“আল্লাহর নামে দোয়া করে পেট ভরে খান”
সুমধুর আওয়াজে রমজান আলী কন।

সমস্বরে সবাই ডাকে, “আল্লাহু আকবর”!

এক শুক্কুরবারে খেতে বসিলো,
চন্দনমালা পরা জীর্ণ এক বুড়ো,
জ্বর ছিলো কিনা অজানা, তবে হাত পা কাঁপছিলো।
একখান চাদর মাথায় দিয়া
বারবার চাইছে নিজেরে লুকাইতে,
সেবক আইসা কয়, মশাই, আইছেন কোন ধর্ম হইতে?

ক্ষুধার্ত, পীড়িত বুড়ো মানুষটা মিনমিন করে কয়,
“আমি ধর্মের নাম জানিনে বাপু, পেটে ক্ষুধা না সয়”,
তিনদিন ধরে জল ছাড়া খাইনে কিছুই,
কার নামে খাওন মিলবে কও, এক্ষুণি তার নাম লই।”

নিরানব্বইয়ের লগে সেও কইয়া উঠে “আল্লাহু আকবর”
রমজান আলীর দৃষ্টি পড়ে হঠাৎ নিজের উপর।

পর শুক্কুরবার হইতে, খাইতো ঠিকই একশ জনে,
কিন্তু দোয়া করিতো যে যার মনে মনে।

Loading

4 thoughts on “ক্ষুধার মাতৃভাষা

  1. ধর্মে কোনো ভেদাভেদ হওয়া উচিৎ নয়।খুব সুন্দর কবিতা।

  2. অপূর্ব রচনা। মনে দাগ কেটে গেল। —— বৈশালী নাগ

  3. খুব খুব খুব সুন্দর লাগলো গো মা। খুব খুব খুব ভালো থেকো গো মা তুমি। আরো অনেক অনেক লেখ গো মা। শুভ রাত্রি। আমার অনেক অনেক আশীর্বাদ দিলাম।

Leave A Comment