কবিতা

মা

মা
-সঙ্কর্ষণ

 

 

এখনও ঘরের কোণায়
পরিপাটি জুতোজোড়ার সাম্রাজ্যে থাবা বসায়নি ঝুল।
কাল অবধিও নির্বিষ থাকা নরম হাওয়াটা
মরুঝড়ের মতো ভারী হয়ে গিলে খাচ্ছে জানলার শিক,
নিশ্চুপ পৃথিবীতে উজ্জ্বলতম অন্ধকারের সঙ্গী
শুধু চাইমের টুং-টাং-টুং।

এখনও সময়মতো বিছানায় ঝাড়া পড়ে রোজ।
দোলনার ক্যাঁচকোচে পুরোনো বইয়ের মতো
একে একে জমে থাকে স্মৃতি,
আদরের ক্যানভাসে চোখ ভরে জল নামে
বই মুখে বসে থাকা মেয়েটির।
রূপকথা বলে চলে, “এই আছে, এই নেই…
এই আছে, এই নেই।”

ছোটোবেলায় মাথা তুলে দাঁড়াতে শিখিয়েছিলো বাবা।
তাই কখনো চোখ নামেনা তার।
কোমরের বেড়ে দগদগে ঘা হয়ে বেঁচে থাকে
ক্ষণিকের স্মৃতি।
জানলায় উঁকি দেওয়া আকাশও শিখে যায়
“স্মৃতি সততই সুখের।”

আজও তাই আদরের ধন বলে রাত জাগে সার্টিনের টুপি।
জন্ম জন্ম ধরে কেউ মাথা কোটে মরণের দ্বারে…
তীব্র অ্যাসিডের মতো ম ম করে ওঠে বেবি পাউডার,
হাতে বোনা কাঁথা চিৎকার করে বলে,
“ওকে ফিরিয়ে দাও, ওকে ফিরিয়ে দাও, ওকে ফিরিয়ে দাও।”
ন’মাস গর্ভে ধরা ঘুমন্ত স্বপ্নের ঘুম ভাঙাতে ব্যর্থ হয় মা।

আমাদের ঘুম ভাঙে আরেকটা দুঃখের স্বপ্নে।

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page