নিয়তি

নিয়তি
-বিভূতি ভূষন বিশ্বাস

 

ছোট্ট শহর, অলিগলি রাস্তা, মাঝে মধ্যে ফ্ল্যাট বাড়ি গজিয়ে উঠেছে দু’ একটা। নতুন নতুন কয়েকটা ফ্ল্যাট আশেপাশে তৈরি হচ্ছে। ভরসা নামক পাঁচতলা ফ্ল্যাটের নিচে স্কুটি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। কখন মেয়ের প্রাইভেট পড়া শেষ হবে, ওকে নিয়ে ঘরে ফিরবো। ওর আসার দেরী দেখে স্কুটির উপরে বসে ফেসবুক ঘাটছি। হঠাৎ এক বৃদ্ধ বয়স ষাট সত্তর হবে, একটি ব্যাগ উপুড় করে বড় ড্রেনে কি যেন ফেলে দিয়ে দ্রুত ওখান থেকে চলে গেলেন। আমি ছাড়া ওখানে আর কেউ নেই, আমি মোবাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে আড় চোখে দেখে নিলাম। বৃদ্ধ লোকটি চলে যেতেই আমি ড্রেনের কাছে গিয়ে দেখি একটি বিড়াল ড্রেনে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। তড়িঘড়ি বিড়ালটিকে টেনে তুললাম কিন্তু বিড়ালটিকে দেখে মনে হলো ও অসুস্থ ও খুবই রোগা। ইতিমধ্যে মেয়ের পড়া শেষ ওকে নিয়ে রওনা দিয়েছি। পিছনে তাকিয়ে দেখি বিড়ালটি আমাদের পিছনে পিছনে আসতে আসতে টলে পড়ে যাচ্ছে।
মেয়ে সব কথা শুনে বলল —– ওকে বাড়ি নিয়ে চলো বাপী ।
অগত্যা ওকে বাড়ি নিয়ে এলাম। কিন্তু ও কিছু্ই খাচ্ছে না আর নাক দিয়ে রক্ত মতো কি সব পড়ছে। অনেক খুঁজে খুঁজে প্রাণী ডাক্তারের খোঁজ পেলাম। ডাক্তার বাবু বললেন এর ঠান্ডা লেগে এরকম হয়েছে। পর পর দু’দিন দু’টি করে ইনজেকশন দিলেন। ড্রফারে করে দুধ মুখে দিয়ে খাওয়াচ্ছিলাম এই ক’দিন, ডাক্তারের কথা মতো। কিন্তু ওর স্বাস্থ্যের কোনোও উন্নতি না হওয়াতে বড্ড কষ্ট হচ্ছিল। পরের দিন আমি চেয়ারে বসে আছি ও এক লাফ দিয়ে আমার কোলে এসে বসলো কিছুক্ষণ পরে দু’টো ঢেসকি দিয়ে চির বিদায় নিলো । আমার ঘরের পাসে ওকে কবর দিয়ে বললাম, তুমি চলে যাও বিড়াল জন্ম নিও না, মানব জন্ম নিয়ে আবার ফিরে এসো ।

Loading

One thought on “নিয়তি

Leave A Comment