সেই শৈশব

“সেই শৈশব”
-শুভঙ্কর অধিকারী

 

চল না সবাই আবার মিশি
শৈশবের ঐ দলে,
মায়ের হাতের আদর পেতে
আবার মায়ের কোলে।

বাবা কাকার সেই বকুনি
কানমলা আর গাট্টা!
সে স্মৃতি আজ বন্ধ খাতায়
সেই হাসি সেই ঠাট্টা!

সেই হইচই আর চেঁচামেচি
হরেক রকম খেলা,
হাত বাড়িয়ে ডাক দিয়ে যায়
আমার ছেলেবেলা!

ইচ্ছে করে বায়না ধরে
হাত পা ছুঁড়ে কাঁদি!
দুপুর বেলায় খেলতে যাবার
গল্প নতুন ফাঁদি!

হঠাৎ হঠাৎ মান অভিমান
তোর সাথে আজ আড়ি,
হঠাৎ আবার ভাব জমাতে
হাজির যে তোর বাড়ি!

সবার সাথে চাই জমাতে
খোসমেজাজি গল্প,
জীবন খাতার পাতায় পাতায়
সময় যে খুব অল্প।

সেই শৈশব আজও খুঁজি
পথের বাঁকে বাঁকে
সজল চোখে সেই শৈশব
অবাক হয়ে দেখে!

ইটের ভাটা, চায়ের দোকান
এঁটো বাসন হাতে
শৈশব যে আজ বিকিয়ে যায়
গভীর কালো রাতে!

আজ যে সবাই বন্দী দেখ ঐ
পায়রা খোপের ঘরে
শৈশব যে আজ হাফসে ওঠে
গুমরে কেঁদে মরে!

বইয়ের বোঝায় নুইয়ে পড়ে
ঐ ছোট্ট দুটি কাঁধ
চার দেয়ালে আটকে তাদের
সখের সাধ আহ্লাদ!

ইঁদুর দৌড়ে সামিল রে সব
ফুটলে মুখের বুলি
নইলে তুমি পিছিয়ে রবে
জুটবে পায়ের ধূলি।

ভবিষ্যতে দেখতে আলো
ঐ ছোট্ট মাথায় ভার
জেতার লক্ষ্যে ছুটছে সবাই
কেউ মানছে নাকো হার!

আজকে সবাই যে যার ঘরে
জীবন যে কংক্রিটে
সেরার সেরা হবার নেশায়
আটকেছে বিষ গিঁটে।

স্মার্ট ফোন আজ গিলছে সময়
কাছের মানুষ দূরে
আষ্ঠেপিষ্টে গিলছে রে সব
সব যে এক এক করে!

খেলার ও মাঠ কাঁদছে ওরে
কোথায় গেলি রে সব।
ভালোবাসার অভাব বোধে
ধুঁকছে কি শৈশব?

মেলুক ওরা ইচ্ছে মতন
মেলুক্ ওদের ডানা,
ওদের মাঝেই লুকিয়ে আছে
সবার ষোলো আনা!

Loading

Leave A Comment